এইদিন ওয়েবডেস্ক,নয়াদিল্লি,০৮ জুলাই : বেফাঁস মন্তব্য করে বারবার বিতর্কে জড়িয়ে পড়েন কৃষ্ণনগরের তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদ মহুয়া মৈত্র । এবারে জাতীয় মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন রেখা শর্মাকে নিয়ে অভদ্র মন্তব্য করে চরম ফেঁসে গেছেন তিনি । কমিশনের অভিযোগের ভিত্তিতে দিল্লি পুলিশ তার বিরুদ্ধে বিচারিক কোডে মামলা দায়ের করেছে। ভারতীয় বিচারিক কোডের অধীনে এটি দিল্লি পুলিশের বিশেষ সেলের প্রথম এফআইআর।মহিলা কমিশন, মহুয়া মৈত্রার বিরুদ্ধে অভিযোগে বলেছে যে তার মন্তব্য শুধুমাত্র অবমাননাকর নয়, এটি মহিলাদের মর্যাদার অধিকারেরও লঙ্ঘন। মহিলা কমিশন ভারতীয় জাস্টিস কোডের ৭৯ ধারায় মামলা নথিভুক্ত করার দাবি করেছে। যার ভিত্তিতে দিল্লি পুলিশের স্পেশাল সেল একটি মামলা দায়ের করেছে ।
কেন মহুয়া মৈত্রের সাংসদ পদ খারিজ হতে পারে ?
আসলে ভারতীয় বিচারিক কোডের ৭৯ ধারায় বলা হয়েছে যে কেউ, কোনও মহিলার মর্যাদাকে অবমাননার অভিপ্রায়ে, কিছু বলে, কোনও শব্দ করে, কোনও অঙ্গভঙ্গি করে বা এমন কোনও কাজ করে যা কোনও মহিলার সম্মান এবং মর্যাদাকে অবমাননা করতে পারে। এমতাবস্থায় দোষী সাব্যস্ত ব্যক্তিকে কারাগারে পাঠানো হবে। যেখানে তিন বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড হতে পারে । এ ধরনের মামলায় দোষী প্রমাণিত হলে জরিমানার শাস্তির বিধানও রয়েছে।
কোনো ফৌজদারি মামলায় কোনো সাংসদ বা বিধায়কের দুই বা ততোধিক বছরের কারাদণ্ড হলে তার সদস্যপদ বাতিল হয়ে যায়। আর ১৯৫১ সালের জনপ্রতিনিধিত্ব আইনের ৮(৩) ধারায় বলা হয়েছে যে কোনো সাংসদ বা বিধায়কের দুই বছর বা তার বেশি কারাদণ্ড হলে তিনি অবিলম্বে তার সদস্যপদ হারাবেন। এ ছাড়া সাজা পূর্ণ হলে তিনি আগামী ছয় বছর নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারবেন না। এমতাবস্থায় মহুয়া মৈত্রের যদি এই মামলায় দুই বা তার বেশি বছরের সাজা হয়, তাহলে তার লোকসভার সদস্যপদ হারানোর আশঙ্কা রয়েছে। এমনকি শাস্তি হলে তার রাজনৈতিক ক্যারিয়ারে চিরস্থায়ী ফুলস্টপ লেগে যেতে পারে ।
আসলে কয়েকদিন আগে ইউপির হাতরাসে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটে। যেখানে পদদলিত হয়ে ১২১ জনেরও বেশি মৃত্যু হয় । নিহতদের বেশির ভাগই নারী বলে জানা গেছে। গত ৪ জুলাই জাতীয় মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন রেখা শর্মা হাতরাসে গিয়েছিলেন । এ সময় বৃষ্টিপাত শুরু হলে এক ব্যক্তি ছাতা নিয়ে পেছনে হাঁটছিলেন। যখন সেই ভিডিও প্রকাশ্যে আসে, তখন টিএমসি সাংসদ মহুয়া মৈত্র এতে অশালীন মন্তব্য করেছিলেন । তিনি মন্তব্যে লেখেন, ‘উনি(রেখা শর্মা) মালিকের পায়জামা ধরতে ব্যস্ত ।’ বিষয়টি নিয়ে নিন্দার ঝড় উঠলে কিছুক্ষণ পর মহুয়া মৈত্র পোস্টটি মুছে দেন ।।