এইদিন ওয়েবডেস্ক,আউশগ্রাম(পূর্ব বর্ধমান),০৭ সেপ্টেম্বর : পূর্ব বর্ধমান জেলায় ফের খুন হলেন এক তৃণমূল নেতা । মঙ্গলকোটের পর এবার আউশগ্রাম । বাবার সামনেই ছেলেকে গুলি করে খুন করে পালিয়ে গেল দুষ্কৃতিরা । নিহতের তৃণমূল নেতার নাম চঞ্চল বক্সি (৪২) । মঙ্গলবার তিনি তাঁর বাবা শ্যামল বক্সিকে বাইকে চাপিয়ে আউশগ্রামের গেরাই গ্রামে এক দলীয় নেতার বাড়িতে নিমন্ত্রন রক্ষা করতে গিয়েছিলেন । বিকেল প্রায় পৌনে তিনটে নাগাদ বাড়ি ফেরার পথে উলুগরিয়া জঙ্গলের কাছে আসতেই কয়েকজন দুস্কৃতী শ্যামলবাবুর সামনেই তাঁর ছেলে চঞ্চলকে পরপর বেশ কয়েকটি গুলি চালিয়ে পালিয়ে যায় । এরপর তাঁকে উদ্ধার করে জামতাড়া হাসপাতালে নিয়ে আসা হয় । কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি ।
এদিকে এই ঘটনা ঘিরে তৃণমূল-বিজেপি চাপানউতোর শুরু হয়ে গেছে । এই ঘটনায় বিজেপির দিকেই অভিযোগের আঙুল তুলেছে স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব । অন্যদিকে বিজেপির জেলা নেতৃত্বের পালটা দাবি,শাসকদলের গোষ্ঠীদ্বন্দের জেরেই খুন হয়েছেন ওই তৃণমূল নেতা । এদিকে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে তদন্তে যায় পুলিশ । পুলিশ দুস্কৃতীদের ফেলে যাওয়া আগ্নেয়াস্ত্র ও গুলির খোল উদ্ধার করেছে বলে খবর । ঘটনাস্থল ঘিরে রেখেছে পুলিশ ।
আউশগ্রামের দেবশালা অঞ্চলের যুব তৃণমূলের সভাপতি ছিলেন চঞ্চল বক্সি । তাঁর বাবা শ্যামল বক্সি দেবশালা পঞ্চায়েতের প্রধান । জানা গেছে, আউশগ্রামের গেরাই গ্রামের বাসিন্দা আউশগ্রাম ২ ব্লক তৃণমূলের কার্যকরী সভাপতি আবদুল লালনের বাড়ির একটি অনুষ্ঠানে এদিন নিমন্ত্রণ ছিল বাবা ও ছেলের । কিছুটা বেলার দিকে তাঁরা নিমন্ত্রন রক্ষা করতে গিয়েছিলেন । চঞ্চলবাবু নিজের বাইক নিয়েই অনুষ্ঠান বাড়িতে গিয়েছিলেন ।
নিহতের বাবা শ্যামল বক্সি বলেন, ‘খাওয়া দাওয়ার পর বিকেল প্রায় পৌনে তিনটে নাগাদ আমরা ভাতকুন্ডা রোড হয়ে বাড়ি ফিরছিলাম । ছেলে বাইক চালাচ্ছিল । আমরা উলুগোরে জঙ্গলের কাছে আসতেই দুটি বাইক আমাদের পিছু নেয় । বাইক দুটিতে ৪-৫ জন ছিল । তারা আমার ছেলেকে লক্ষ্য করে চার পাঁচটা গুলি করে । এরপর আমরা বাইকসহ উলটে পড়ে যাই । তারপর লোকজন এসে আমার ছেলেকে উদ্ধার করে হাসপাতালে আনে । তবে তার অনেক আগেই পালিয়ে যায় দুষ্কৃতিদল ।’
আউশগ্রাম-২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি হায়দর আলির অভিযোগ, ‘দেবশালা এলাকায় চঞ্চলের ভালো সংগঠন ছিল । তার ফলে এবারে বিধানসভায় ওই এলাকায় আমাদের ভালো ফল হয়েছিল । তাই রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারনে বিজেপি আশ্রিত দুস্কৃতীরাই চঞ্চলকে খুন করেছে বলে আমাদের সন্দেহ ।’
অন্যদিকে বিজেপির আউশগ্রাম এলাকার পর্যবেক্ষক শ্যামল রায়ের বলেন, ‘এটা ভিত্তিহীন অভিযোগ । মঙ্গলকোটে শাসকদলের গোষ্ঠীদ্বন্দের জেরে এক তৃণমূল নেতাকে খুন হতে হয়েছিল । একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হল আউশগ্রামে ।’ সেই সঙ্গে তিনি বলেন, ‘তৃণমূল কংগ্রেস খেলা হবে স্লোগান তুলে পক্ষ বিপক্ষ দু’দিকেই খেলছে । পঞ্চায়েতের টাকার ভাগ নিয়ে গন্ডগোলের কারনেই আউশগ্রামের তৃণমূল নেতাকে খুন হতে হল ।’।