প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়,বর্ধমান,১৪ ডিসেম্বর : বঙ্গ রাজনীতিতে এবার জায়গা করেনিল ’চায়ের কাপ’।বোর্ড মিটিং চলাকালীন বুধবার তৃণমূলের এক কাউন্সিলার কে লক্ষকরে কাপ ছুঁড়ে মারার অভিযোগ উঠল দলেরই অপর কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে।কাপের আঘাতে আহত হন পূর্ব বর্ধমানের কালনা পৌরসভার কাউন্সিলর তথা শহর তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়। চিকিৎসার জন্য তাঁকে কালনা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় ।এই ঘটনার জেরে এদিন সন্ধ্যা থেকে উত্তাল হয়ে ওঠে কালনা পৌরসভা এলাকা। অভিযুক্ত কাউন্সিলার অনিল বসুর শাস্তির থাবিতে আক্রান্ত রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়ের অনুগামীরা প্রথমে কালনার এসটিকেকে রোড অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান পরে তাঁরা কালনা থানার সামনে
জড়ো হয়ে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন।যদিও অভিযোগ সত্য নয় বলেই কাউন্সিলর অনিল বসু দাবি করেছেন।বিরোধীরা অবশ্য এই ঘটনা নিয়ে তীব্র কটাক্ষ করেছে।
বিক্ষোভকারী ও কালনা পৌরসভা কর্তৃপক্ষের কথায় জানা গিয়েছে,বুধবার দুপুরে কালনা পৌরসভায় বোর্ড মিটিং চলছিল।মিটিং যখন শেষর দিকে তখন কালনা শহরের ১৭ নং ওয়ার্ডের নিকাশী নালা পরিস্কারের বিষয়টি উত্থাপন করেন ওই ওয়ার্ডের কাউন্সিলার। তাপস দাস । আর তা নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে চুড়ান্ত বাদানুবাদ শুরু হয়ে যায়।অভিযোগ ওই সময়েই তৃণমূল কাউন্সিলার তথা শহর তৃণমূলের সভাপতি রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়কে লক্ষকরে চায়ের কাপ ছুঁড়ে মারার অভিযোগ ওঠে অপর তৃণমূল কাউন্সিলার অনিল বসুর বিরুদ্ধে। এই ঘটনা জানার পরেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন আক্রান্ত রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়কে অনুগামীরা। প্রতিবাদে তাঁরা এদিন সন্ধ্যায় কালনা এসটিকেকে রোডে টায়ার জ্বলিয়ে পথ অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখায় ।পুলিশি আশ্বাসে তখনকার মত অবরোধ উঠ।পরে কালনা থানার সামনেও তাঁরা বিক্ষোভ দেখান ।
কাউন্সিলার তাপস দাস এদিন অভিযোগে বলেন,
‘বৈঠকের শেষের দিকে দুই কাউন্সিলর সন্দীপ বসু
ও অনিল বসু আমাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে শুরু করে । তা নিয়ে আমি প্রতিবাদ করতেই অপর পক্ষ আমাকে চেয়ার ছুড়ে মারতে আসে।একের পর এক কাপ ছুঁড়তে মারতে শুরু করে ।ছুঁড়ে মারা কাপ সজোরে এসে লাগে কাপকাউন্সিলর রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়ে দাঁতে ও কপালে। সেই আঘাত সহ্যকরতে না পেরে তিনি সংজ্ঞাহীন হয়ে পড়েন।এরপরেই রবীন্দ্রনাথ বাবুকে অ্যাম্বুলেন্সে করে কালনা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় ।”তাপস বাবু তাঁর অভিযোগে আরও বলেন,“আমার ওয়ার্ডে হাইড্রেনগুলি অপরিস্কার হয়ে রয়েছে সেই বিষয়টি ৪ঠা নভেম্বর আমি লিখিত ভাবে চেয়ারম্যানকে জানাই। তার পরেও কোন ব্যবস্থা হয় না ।বোর্ড মিটিংয়ে সেই আলোচনা উঠতেই ওই কাউন্সিলর টেবিল চাপড়ে অকথ্য ভাষায় আমাকে গালিগালাজ করতে শুরু করলে ঘটনা নক্কারজক মোড় নেয় ।
এই বিষয়ে প্রতিক্রিয়ার জন্য কালনা পৌরসভার চেয়ারম্যান আনন্দ দত্তকে ফোন করা তিনি ফোন রিসিভ করেননি । তবে কালনা পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান তপন পোড়েলের বক্তব্য, ‘বৈঠকে শেষ পর্যন্ত আমি ছিলাম না।কি নিয়ে এমন ঘটনা ঘটলো তাও সবিস্তার জানা নেই,খোঁজ নিয়ে দেখছি ।’ ভাইস চেয়ারম্যান এমনটা জানালেও ঘটনা নিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়েননি বিজেপির জেলা সভাপতি গোপাল চট্টোপাধ্যায় । তিনি বলেন,’গায়ের জোরে কালনা পৌরসভার ভোট করিয়েছে তৃণমূল । মানুষের রায়ে তৃণমূলের কাউন্সিলাররা জয়ী হন নি । তাই যা হবার তাই হচ্ছে । তৃণমূলে মুসল পর্ব যে শুরু হয়ে গিয়েছে তারই প্রকাশ এদিন ঘটেছে কালনা পৌরসভায় । এমন মারামারি পশ্চিমবাংলার মানুষ আগামী দিনে আরো দেখবেন ।’।