এইদিন ওয়েবডেস্ক,নয়াদিল্লি,১০ নভেম্বর : মহুয়া মৈত্র, কল্যাণ ব্যানার্জির পর এবারে বিতর্কে জড়িয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্যসভার সাংসদ সাকেত গোখলে । দিল্লির বিশ্বম্ভর দাস মার্গে এমএস ফ্ল্যাটে দুর্গার জাগরণ জোর করে বন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে মমতা ব্যানার্জির দলের ওই সাংসদের বিরুদ্ধে । হিন্দি নিউজ পোর্টাল ওপি ইন্ডিয়ার প্রতিবেদনে জানা গেছে,দিল্লির বিশ্বম্ভর দাস মার্গে সিন্ধু এবং গোমতী নামে দুটি পৃথক ব্লক সহ এমএস ফ্ল্যাট রয়েছে । সিন্ধু এবং গোমতী ব্লকে সাংসদ এবং অনেক কেন্দ্রীয় মন্ত্রীরা থাকেন৷ একই সময়ে,এমএস ফ্ল্যাটে তাদের গৃহকর্মীরা থাকে ৷ গৃহকর্মীরা বিহার, ওড়িশা, পশ্চিমবঙ্গ, উত্তরপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ এবং রাজস্থান প্রভৃতি রাজ্যের বাসিন্দা ৷
জানা গেছে,গৃহকর্মীরা প্রতি বছর নবরাত্রি থেকে শুরু করে ৩৫ দিন ধরে মা দুর্গার জাগরণ পালন করেন । ওই ৩৫ দিন ধরে তাঁরা অনশন ব্রত এবং দেবীর সাধন ভজন করে কাটিয়ে দেন । সোমবার মা দুর্গার প্রতিমা বিসর্জন করা হবে। জাগরণের দিন এমএস ফ্ল্যাটে শ্রদ্ধালুরা জড়ো হয়েছিলেন, যার মধ্যে নারী, শিশু, যুবক ও বৃদ্ধ ছিল। বিকাল ৫টায় জাগরণ শুরু হয়। মিউজিক সিস্টেমে ভজন বাজাতেই তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ সাকেত গোখলের আপত্তিতে পুলিশ গিয়ে পূজো বন্ধ করে দেয় । পূজো সম্পন্ন করার জন্য গোখলের ফ্লাটে গিয়ে বয়স্ক ব্যক্তিরা অনেক অনুরোধ করেন । কিন্তু গোখলে তাদের কোনো কথাতে কান না দিয়ে বকাঝকা করে বের করে দেন বলে অভিযোগ ।
সেখানে উপস্থিত শ্রদ্ধালুরা এটাকে বিশ্বাসের অবমাননা বললে পুলিশ তাদের জেলে পাঠানোর হুমকি দেয়। অবশেষে মানুষ ভয় পেয়ে মিউজিক সিস্টেম বন্ধ করে দেয়। এর পরে ভক্তরা পুলিশের কাছে অনুরোধ করেন যে তাদের শুধুমাত্র হাততালি দিয়ে মাতা রানীর স্তব গাওয়ার অনুমতি দেওয়া হোক। পুলিশও এ ব্যাপারে প্রস্তুত ছিল না। ভক্তরা ফিরে যায় এবং প্যান্ডেল সারা রাত চুপচাপ বসে থাকেন । যদিও সাকেতের ফ্লাট থেকে পূজো মণ্ডপ প্রায় ৩০০ মিটার দূরে বলে জানা গেছে ৷
এদিকে সাকেত গোখলেও মা দুর্গার ভাণ্ডার ও জাগরণে অংশগ্রহণের আমন্ত্রণপত্র গ্রহণ করতে অস্বীকার করেন। এমএস ফ্ল্যাটের বাসিন্দাদের মতে, সাকেত গোখলেই একমাত্র সাংসদ যিনি এটি করেছেন । এমনকি দেবীর ভোগের(ভান্ডারা) আয়োজন করা হলেও সাকেতের ভয়ে কেউ প্রসাদ গ্রহণ করতে পর্যন্ত যেতে পারেননি বলে জানা গেছে । এমবস্থায় ওই গৃহকর্মীর আশঙ্কা যে তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্যসভার সাংসদ সাকেত গোখলের ইশারায় তাদের চাকরি হারাতে হতে পারে৷
দিল্লির বিজেপি নেতা আদেশ গুপ্ত গোখলের কর্মকে টিএমসির পার্টি লাইন হিসাবে বর্ণনা করেছেন এবং ঘটনার নিন্দা করেছেন। তিনি ঘোষণা করেছেন যে তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ যে জাগরণ বন্ধ করেছেন সেখানে এক সপ্তাহের মধ্যে মহা জাগরণ করা হবে। ক্ষমতা থাকলে বন্ধ করে দেখাক । তিনি এই ইস্যুতে দিল্লির প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা এএপি প্রধান অরবিন্দ কেজরিওয়ালকেও আক্রমণ করেছেন। তিনি বলেন, অরবিন্দ কেজরিওয়াল এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একই ধারার রাজনীতি করছেন । পরোক্ষভাবে, আদেশ গুপ্তা এই ষড়যন্ত্রে জড়িত থাকার জন্য অরবিন্দ কেজরিওয়ালকে অভিযুক্ত করেছেন।।