জ্যোতি প্রকাশ মুখার্জ্জী,গুসকরা(পূর্ব বর্ধমান),২৪ ডিসেম্বর : কোটি কোটি টাকা ঋণখেলাপি কর্পোরেট সংস্থাগুলিকে অথবা ধনী ব্যক্তিদের পুনরায় ঋণ দিতে অথবা ‘জামাই আদরে’ আপ্যায়ন করতে বিভিন্ন ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ নুন্যতম কার্পণ্য না করলেও নানা অজুহাতে সাধারণ মানুষকে হেনস্থা করতে তাঁরা ইতস্তত করে না বলে অভিযোগ তুলেছেন বিভিন্ন ব্যঙ্কের গ্রাহকরা । তাঁদের অভিযোগ, ঋণ নিতে গিয়ে সাধারণ কৃষক বা স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড করাতে গিয়ে ছাত্র ছাত্রীদের বারবার ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ ফিরিয়ে দিচ্ছে । এমনকি নতুন অ্যাকাউন্ট করতে গিয়ে গ্রাহকদের দিনের পর দিন হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে । কোনো বিষয়ে গ্রাহকরা প্রশ্ন করলেই বিরক্তি ঝরে পড়ে কর্মীদের চোখে মুখে । সারা রাজ্যের সঙ্গে গুসকরার ব্যাঙ্ক গ্রাহকদের অভিজ্ঞতা আলাদা কিছু নয় বলে তাঁদের দাবি ।
কয়েকটি বেসরকারি ব্যাঙ্কসহ একাধিক রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের শাখা অফিস আছে গুসকরায় । বেসরকারি ব্যাঙ্কের কর্মীদের বিরুদ্ধে সেইভাবে হয়রানির অভিযোগ না থাকলেও তিক্ত অভিজ্ঞতার শিকার হতে হচ্ছে গুসকরার বিভিন্ন সরকারি ব্যাঙ্কের গ্রাহকদের । বারবার অভিযোগ জানিয়েও পরিস্থিতির কোনো উন্নতি হয়নি । কৃষকদের এবং স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড সংক্রান্ত হয়রানির বিষয়টি কানে যায় গুসকরা শহর তৃণমূলের কানে । স্থানীয় বিধায়ক অভেদানন্দ থাণ্ডারকে জানালে তিনি ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সাক্ষাতের পরামর্শ দেন।
সিদ্ধান্ত অনুযায়ী গত ২২ শে ডিসেম্বর গুসকরা শহর যুব তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে একগুচ্ছ দাবি নিয়ে বিভিন্ন ব্যাঙ্কের শাখা প্রবন্ধকের সঙ্গে সাক্ষাৎ করা হয় এবং প্রত্যেকের হাতে তুলে দেওয়া হয় দাবি সম্বলিত পত্র । সমস্যা নিয়ে ব্যাঙ্কগুলির শাখা প্রবন্ধকের সঙ্গে আলোচনায় বসেন স্বয়ং স্থানীয় বিধায়ক ও শহর সভাপতি। তাদের দাবি ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ সমস্যা সমাধানে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার নাকি আশ্বাস দিয়েছেন ।
এর আগে শহর যুব তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে মিছিল করে শহরের বিভিন্ন ব্যাঙ্কের শাখায় যাওয়া হয়। মিছিলে পা মেলান স্বয়ং বিধায়ক অভেদানন্দ থাণ্ডার, আউসগ্রাম ১ নং ব্লক সভাপতি সেখ সালেক রহমান, দুই কার্যকরী সভাপতি অরূপ সরকার ও প্রশান্ত গোস্বামী, আউসগ্রাম ১ নং যুব সভাপতি দেবাঙ্কুর চ্যাটার্জ্জী ও ছাত্র পরিষদ সভাপতি তন্ময় গোস্বামী, শহর তৃণমূল কার্যকরী সভাপতি মলয় চৌধুরী ও ছাত্র পরিষদ সভাপতি সৌম্যদীপ চ্যাটার্জ্জী, তৃণমূল নেত্রী সাধনা কোনার এবং শহর তৃণমূল যুব সভাপতি উৎপল লাহা ও তৃণমূল শহর সভাপতি কুশল মুখার্জ্জী সহ বিভিন্ন ওয়ার্ড থেকে আগত তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা।
বিধায়ক বলেন, ‘সাধারণ মানুষের প্রতি ব্যাঙ্ক কর্মীদের দুর্ব্যবহারের কথা দীর্ঘদিন ধরে শুনে আসছি। তাদের অসহযোগিতার জন্য মুখ্যমন্ত্রীর অন্যতম স্বপ্নের প্রকল্প স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড নিয়ে ছাত্র ছাত্রীরা চরম বিপদে পড়েছে । তাই আজ আমরা ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের কাছে এসেছি । পরিস্থিতির উন্নতির ব্যাপারে আমরা আশাবাদী ।
অন্যদিকে শহর সভাপতি কুশল মুখার্জ্জী বলেন,’শুধু গুসকরা পৌর এলাকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলি নয়, আশেপাশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্র ছাত্রীরা
স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ডের বিষয়ে এখানকার সরকারি ব্যাঙ্কের উপর নির্ভরশীল । কিন্তু বারবার তাঁরা হয়রানির শিকার হয় । একইভাবে হয়রানির শিকার হন সাধারণ মানুষও । সমস্যা সমাধানে বিধায়কের সঙ্গে আলোচনা করে আমরা এখানে এসেছি। ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন ।’।