এইদিন ওয়েবডেস্ক,বর্ধমান,০৩ এপ্রিল : মুর্শিদাবাদ জেলার ভরতপুর বিধানসভার তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়ক হুমায়ুন কবিরের হিন্দুদের ভাগিরথীর জলে ভাসিয়ে দেওয়ার হুমকির প্রসঙ্গ উঠে এল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বক্তব্যে । আজ শুক্রবার বর্ধমান দুর্গাপুর লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী দিলীপ ঘোষের সমর্থনে তালিতে নির্বাচনে জনসভা করতে এসে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘পশ্চিমবঙ্গে হিন্দুদের দ্বিতীয় শ্রেণীর নাগরিক করে রেখে দিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস ।’
উল্লেখ্য, দিন কয়েক আগে মুর্শিদাবাদ জেলার ভরতপুরের শক্তিপুরে কর্মীদের সঙ্গে বৈঠক করছিলেন তৃণমূল কংগ্রেস স্থানীয় বিধায়ক হুমায়ুন কবির । সেই সময় তিনি বলেন,”কত ধানে কত চাল হয়, দু’ঘণ্টার মধ্যে যদি তোমাদের ভাগীরো দিতে না ফেলতে পারি তাহলে আমি তাহলে পৃথিবী থেকে সরে যাব । ভোর এলাকায় বসবাস করা বন্ধ করে দেব । তোমরা হাতির ৫ পা দেখেছো ? কিন্তু মনে রেখো তোমরা ৩০% লোক মুর্শিদাবাদ জেলায়, আর আমরা ৭০ শতাংশ । এখানে কামনগরে তোমরা বেশই আছো বলে কাজীপাড়ার পাড়ায় মসজিদ ভাঙবে আর বাকি এলাকার মুসলমান ভাইরা হাত গুটিয়ে বসে থাকবে, এটা কোনদিন হবে না । বিজেপিকে হুঁশিয়ার করে দিয়ে বলছি, কোনদিন হবে না ।”
তৃণমূল বিধায়কের এই মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় আজ প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘কাল আমি টিভিতে দেখলাম তৃণমূলের বিধায়ক প্রকাশ্যে ধমকি দিচ্ছেন। ও বলছে হিন্দুদেরকে দু ঘন্টায় ভাগীরথী দিয়ে ভাসিয়ে দেবে । এটা কেমন ভাষা ভাই? এটা কেমন রাজনৈতিক সংস্কৃতি? হিন্দুদের ভাসিয়ে দেবে? সত্যি কি অবস্থা হয়ে গেছে ! পশ্চিমবঙ্গের হিন্দুদের সাথে কি হচ্ছে? মনে হচ্ছে পশ্চিমবঙ্গে হিন্দুদের দ্বিতীয় শ্রেণীর নাগরিক করে রেখে দিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস ।’ প্রধানমন্ত্রী বলেন,’এরা কেমন লোক? জয় শ্রী রামের স্লোগানেও এদের আপত্তি! জয় শ্রীরাম বললে ওদের জ্বর চলে আসে । এদের রাম মন্দিরে নির্মাণ নিয়েও আপত্তি । এদের রামনবমীর শোভাযাত্রাতে আপত্তি ।’
প্রধানমন্ত্রীর সন্দেশখালীকান্ড প্রসঙ্গে বলেন, গোটা দেশ যখন সন্দেশখালি অপরাধীদের সাজার জন্য দাবি জানাচ্ছিল তখন তৃণমূল তাদের বাঁচানোর চেষ্টা করছিল । এই কারণে যে অপরাধী নাম শাহজাহান শেখ বলে? তৃণমূল তোষামোদ করতে ব্যস্ত। ভোটব্যাঙ্ক কি মানুষের থেকে বড়? তোষামোদ কি মানব ধর্মের থেকে বড়?’
পাশাপাশি নরেন্দ্র মোদী বলেন,’আমার দেশবাসী আর গরিব থাকবে না । গত বছর ২৫ কোটি মানুষ গরিবি থেকে বেরিয়ে এসেছে । এরপর যে আমি চুপচাপ বসে থাকব তা নয়,তবে হ্যাঁ আমার আত্মবিশ্বাস বেড়ে গেছে । এক বছরে যদি পঁচিশ কোটি মানুষ গরিবি থেকে বেরিয়ে আসতে পারে তাহলে আগামী দিনে আমি আরো বেশি পরিশ্রম করব, যাতে সবাই গরীবের থেকে বাইরে বেরিয়ে আসে ।’ প্রধানমন্ত্রী শস্যভূমি বর্ধমানকে বিকশিত করা, দুর্গাপুরের শিল্পাঞ্চলকে বিশ্বের দরবারে তুলে ধরার শপথ করেন । প্রধানমন্ত্রী জানান যে তিনি তিন কোটি মহিলাকে লাখপতি করার শপথ নিয়েছেন ।
এরপর তৃণমূল কংগ্রেস সরকারকে নিশানা করে তিনি বলেন,’তৃণমূল কি করছে? এরা বলছে লাঠি মেরে মোদীর মাথা ফাটাবে । মোদীকে গুলি মারবে । কিন্তু আমি ভয় পাওয়ার নই । এই নামদার লোকেরা শুনে রাখুক কামদার লোকেরা কখনো ভয় পায় না । এই নামদার লোকেরা কান খুলে শুনে রাখুন গরিবরা কখনো ভয় পায় না । তাই মোদির ডিকশনারিতে ভয় বলে কোন শব্দই নেই । আর গরিবরা যেটা করবো বলে সেটা করে দেখায় । আমিও ঠিক করেছি যত গালাগালি আমায় দেবে যত ঘৃণা আমায় করবে ততো আমি দেশবাসীর সেবা করব ।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন,’কংগ্রেস তৃণমূল আর বামপন্থীদের কোন লক্ষ্যই নেই । পার্শ্ববর্তী ত্রিপুরাতে ৩৫ বছর রাজত্ব করে ধ্বংস করে দিয়েছিল বামপন্থীরা । বিজেপি আসার পর গোটা ত্রিপুরাকে বদলে দিয়েছে । বামপন্থীরা যাওয়ার পর উন্নয়নের সূর্য উঠেছে । দেশের উন্নয়ন করার এদের ক্ষমতা নেই । এরা কেবল একটা কাজই করতে পারে ভোটের জন্য সমাজকে বিভাজিত করা’ ।।