এইদিন ওয়েবডেস্ক,নদীয়া,১৯ সেপ্টেম্বর : নবদ্বীপের মায়াপুর এলাকায় এক বিজেপি কর্মীকে বৃদ্ধা মা- বাবার সামনে থেকে টেনে নিয়ে গিয়ে নৃশংস ভাবে পিটিয়ে খুনের অভিযোগ উঠল তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে । মৃতের নাম সঞ্জয় ভৌমিক(৪০) । তার বাড়ি মায়াপুর পুর এলাকার ৬ নম্বর ওয়ার্ডে । বৃহস্পতিবার এই খুনের ঘটনার পর থানায় সুনির্দিষ্ট অভিযোগ দায়ের করেছে পরিবার । যদিও পুলিশের উপর ভরসা রাখতে পারছেন মৃতার দিদি স্বাতী চক্রবর্তী ভৌমিক ৷ তিনি সিবিআই তদন্তের পাশাপাশি অভিযুক্তদের ফাঁসির দাবি জানিয়েছেন ।
ঘটনার বিবরণে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী সোশ্যাল মিডিয়ায় জানিয়েছেন,রাজ্যে বিজেপি কর্মীদের উপর তৃণমূলী সন্ত্রাস অব্যাহত। শুধুমাত্র বিজেপি করার অপরাধে এবার বাড়িতে ঢুকে পিটিয়ে খুন করা হল নবদ্বীপের প্রাচীন মায়াপুর এলাকার ৬ নং ওয়ার্ডের বিজেপি কার্যকর্তা ৪০ বছর বয়সী সঞ্জয় ভৌমিককে।
গতকাল, অর্থাৎ 18/09/2025 তারিখে নবদ্বীপের বিধায়ক পুন্ডরীকাক্ষ সাহা’র গাড়ির প্রাক্তন চালক তারক দাস, তৃণমূলের বুথ সভাপতি গদাধর রায়, তাপস দাস, অরিন্দম মণ্ডল সহ আরো ছয় সাতজন তৃণমূলের দুষ্কৃতী কোনো রকম প্ররোচনা ছাড়াই বিজেপি কার্যকর্তা সঞ্জয়কে ঘর থেকে বের করে বাড়ির উঠোনে ফেলে বেধড়ক মারধর করে, বাধা দিতে গেলে সঞ্জয়ের বাবা সুকুমার বাবু ও তার মা অলকাদেবীকেও মারধর করা হয়। পরে আহত সঞ্জয় কে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নিয়ে গেলে ডাক্তাররা তাকে মৃত বলে ঘোষনা করেন।’
তিনি আরও লিখেছেন,’এখনো পর্যন্ত রাজ্যে শুধুমাত্র বিজেপি করার অপরাধে তৃণমূলের দুষ্কৃতীদের হাতে প্রায় তিন শতাধিক বিজেপি কার্যকর্তা খুন হয়েছেন। এইভাবে খুন সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে তৃণমূল রাজ্যে একটা ভয়ের পরিবেশ তৈরী করতে চাইছে। আমি শাসক দল তৃণমূলকে বলতে চাই এভাবে বিজেপিকে দমিয়ে রাখা যাবে না। আমরা প্রশাসনের কাছে অবিলম্বে সঞ্জয়ের খুনীদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করার দাবি জানাচ্ছি। বিজেপি পরিবার এই কঠিন সময়ে সঞ্জয়ের পরিবারের পাশে রয়েছে এবং সঞ্জয়ের খুনীরা কঠোর থেকে কঠোরতম সাজা না পাওয়া পর্যন্ত লড়াই জারি থাকবে ।’
মৃতার মা অলকা ভৌমিকের অভিযোগ, তাদের পাড়ায় “রয়্যাল স্টার” নামে একটা ক্লাব রয়েছে । ওই ক্লাবে মদ পান করতে আসে তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা । মাঝেমধ্যে তৃণমূলের নেতারাও ক্লাবে আসে । ওই দুষ্কৃতীরা এলাকায় ত্রাসের সৃষ্টি করে রেখেছে । যাকে খুশি যখন তখন মারধর করে । এর আগে তার ছেলেকেও একবার অকারণে মারধর করেছিল বলে অভিযোগ তার ।
মৃতার দিদি স্বাতী চক্রবর্তী ভৌমিকের অভিযোগ, ‘দুষ্কৃতীরা গতকাল মদ্যপ অবস্থায় আমাদের বাড়িতে ঢোকে৷ আমার মা-বাবার সামনে থেকে ভাইকে ঘর থেকে টেনে বের করে । তারপর নির্মমভাবে আমার ভাইকে মাটিতে ফেলে লাথি মারে, কোপায় । ভাইয়ের মাথা ফেটে রক্তপাত শুরু হলেও তারা নিস্তার দেয়নি ।’ জানা গেছে,অমানবিক ভাবে মারধরের পর অচৈতন্য হয়ে পড়েন সঞ্জয় ভৌমিক । এরপর পরিবারের লোকজন ও প্রতিবেশীরা মিলে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায় । কিন্তু তার আগেই মৃত্যু হয় ওই যুবকের । আজ শুক্রবার মৃতদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য শক্তিনগর জেলা হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে ।।