এইদিন ওয়েবডেস্ক,কেতুগ্রাম(পূর্ব বর্ধমান),০৮ মে : বাড়িতে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছিল বর্ষীয়ান এক বিজেপি কর্মীর । কিন্তু করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে ভেবে কেউই ওই বিজেপি কর্মীর বাড়ির ধার দিয়ে ঘেঁষেননি । ফলে মৃতের স্ত্রীকে রাতভর মৃতদেহ আগলে বসে থাকতে হল । শেষ পর্যন্ত শনিবার বিষয়টি জানতে পেরে মৃতদেহ সৎকারের ব্যাবস্থা করলেন গ্রামের তৃণমূল কর্মীরা । ভোট পরবর্তী হিংসার মাঝে মানবিকতার এমনই নজির দেখল পূর্ব বর্ধমান জেলার কেতুগ্ৰাম থানার চাকতা গ্রামবাসী ।
স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে, মৃত বিজেপি কর্মীর নাম অনুপ বন্দ্যোপাধ্যায় (৬০) । তিনি ওই গ্রামে দলের বুথ সভাপতি ছিলেন । শুক্রবার দুপুর নাগাদ বাড়িতে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান অনুপবাবু । কিন্তু মৃতদেহ সৎকার করতে এগিয়ে আসেননি প্রতিবেশীরা । দেখা যায়নি বিজেপির কোনও নেতা বা কর্মীকেও । ফলে শুক্রবার দুপুর থেকে রাতভর মৃতদেহ আগলে বসে থাকতে হয়েছিল মৃতের স্ত্রী রীনা বন্দ্যোপাধ্যায়কে । রীনাদেবী বলেন, ‘প্রতিবেশীরা মনে করেছিলেন আমার স্বামী করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন । তাই সংক্রমণের ভয়ে কেউ আসেননি । শেষে এদিন সকালে তৃণমূলের লোকজন এসে আমার স্বামীর দেহ সৎকারের ব্যাবস্থা করেন ।’
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে,এদিন সকালে ঘটনার কথা জানতে পারেন আনখোনা অঞ্চলের তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা বুদুন শেখ । তিনি তৎক্ষনাৎ এলাকার তৃণমূলের কর্মীদের নির্দেশ দেন যাতে অবিলম্বে মৃতদেহ সৎকারের ব্যাবস্থা করা হয়। এরপর তাঁর নির্দেশে চাকটা গ্রামের কয়েকজন তৃণমূলকর্মী এদিন সকালে ওই বিজেপি কর্মীর বাড়িতে যান । শেষে মারা যাওয়ার প্রায় কুড়ি ঘন্টা পর মৃতদেহের সৎকার হয় উদ্ধারণপুর শ্মশান ঘাটে । স্থানীয় তৃণমূল কর্মীদের কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন মৃতের পরিবারের লোকজন ।
তবে চাকতা গ্রামের বর্ষীয়ান দলীয় কর্মীর মৃতদেহ সৎকারে দলের অনান্য কর্মীদের এগিয়ে না আসার বিষয়ে বিজেপির সাংগঠনিক কাটোয়া জেলার সহ সভাপতি অনিল দত্ত বলেন, ‘ভোটের ফল ঘোষণার পর থেকেই ওই গ্রামে আমাদের কর্মীরা সব গ্রামছাড়া রয়েছেন। তাই তারা যেতে পারেননি । তবে শেষে গ্রামের কয়েকজন যুবক অনুপবাবুর দেহ সৎকারে সাহায্য করেছেন। ওনাদের আমি ধন্যবাদ জানাই ।’।