এইদিন ওয়েবডেস্ক,কলকাতা,২৫ ডিসেম্বর : আজ ২৫ শে ডিসেম্বর বড়দিনে,কোচবিহারের মাথাভাঙ্গায় খুন হয়ে গেলেন দুই বিজেপি কর্মী । আহত হয়েছেন আরও অন্তত ৬ জন । ঘটনাটি ঘটেছে মাথাভাঙ্গা ১ ব্লকের হাজরাহাট ১ গ্রাম পঞ্চায়েতের বালাসী এলাকায় । মৃতরা হলেন মানব সরকার (৩৮) ও যাদব সরকার (২৭) । তাদের ধারালো অস্ত্র দিয়ে নির্মমভাবে কুপিয়ে খুন করা হয় । আহতরা হলেন বিমল সরকার,দেব সরকার,অর্জন সরকার,বিপ্লব সরকার।তারা মাথাভাঙ্গা মহকুমা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন । রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর অভিযোগ,ঘাতকরা প্রত্যেকেই তৃণমূলের সদস্য এবং এই ঘটনাকে পুলিশ পারিবারিক ও গ্রাম্য বিবাদ বলে চালানোর চেষ্টা করছে । পাশাপাশি তিনি অভিযোগ করেছেন যে হতাহতের বাড়ি ও গোটা গ্রাম শতাধিক পুলিশ ও র্যাফ বাহিনী দিয়ে ঘিরে ফেলা হয়েছে যাতে বিজেপির নেতারা গ্রামে ঢুকতে না পারে । হতাহতদের পাশাপাশি “ঘাতক তৃণমূল” কর্মীদের নামগুলি তিনি প্রকাশ্যে এনেছেন ।
আজ সন্ধ্যায় কলকাতা ৬ মুরলীধর সেন লেনে রাজ্য বিজেপি মুখ্য কার্যালয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে শুভেন্দু অধিকারী বলেছেন,’আজ মাথাভাঙ্গা বিধানসভার হাজরাহাট এক গ্রাম পঞ্চায়েতের একটি মারাত্মক ঘটনা ঘটেছে । তাতে দুজন মারা গেছেন৷ মানব সরকার (৩৮) ও যাদব সরকার (২৭) । এছাড়া ছয় জন গুরুতর আহত হয়েছেন । যাদের মধ্যে দুজনের অবস্থা খুব গুরুতর । মারাত্মক আঘাত যাদের রয়েছে তাদের সেখানে চিকিৎসা চলছে । ঘটনার পর থেকে পুলিশ পারিবারিক বিরোধ, গ্রাম্য বিরোধ বলার বা বলানোর চেষ্টা করলেও, বাস্তবিক যে দুজন মারা গেছেন তারা বিজেপির সক্রিয় সদস্যবা কার্যকর্তা ছিলেন ।’
তিনি বলেন,’যারা খুন করেছে তাদের উদ্দেশ্য যাই থাকুক না কেন, তদন্ত সাপেক্ষ, তবে তারা প্রত্যেকেই তৃণমূল কংগ্রেসের পরিচিত মুখ এবং গুন্ডা । মানব সরকার শুধু বিজেপির সদস্য নন, তিনি ওখানকার মন্ডলের যুব মোর্চার সহ-সভাপতিও । বিজেপির যে সদস্যতা অভিযান চলেছিল, তিনি ৩০ শে সেপ্টেম্বর ২০২৪ তারিখে সেই অভিযানের সদস্য পদ নিয়েছিলেন । তার সেই নম্বর হচ্ছে ৭০ ৬৭৬ ১৫৭৪০।’
বিরোধী দলনেতা হামলাকারীদের নামও প্রকাশ্যে এনেছেন । তিনি বলেন,’আক্রমণকারীদের নাম জাবেদ আলী, মেজবাউল হক,মকসুদুল মিঁয়া,আয়ূব আলি মিঁয়া,ভজন সরকার ৷ আর এই ভজন সরকার তৃণমূলের ওই এলাকার সদ্য প্রাক্তন বুথ সভাপতি এবং একজন তৃণমূল স্তরের নেতৃত্ব । এর বাইরে ও সজল সরকার, কমল শিকদার, ঝন্টু সিকদার সহ মোট ১৩ জন আক্রমণকারী দুজনকে খুন করেছে । ৬ জন মারাত্মক আহত হয়েছে । দেব সরকার, বিজন সরকার,অর্জুন সরকার, বিপ্লব সরকার, সপ্তম সরকার এবং অতন রায়।’
শুভেন্দু অধিকারী বলেন,’আমরা বিজেপির পক্ষ থেকে এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করছি । সমস্ত খুনিদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি।’ তিনি অভিযোগ করেছেন,’স্থানীয় নেতারা সকালের দিকে পরিবারগুলোর কাছে যেতে পারলেও পরে কয়েকশো পুলিশ এবং র্যাফ দিয়ে ওদের বাড়ি এবং গোটা গ্রাম ঘিরে ফেলে । বিকেল তিনটা পর্যন্ত আমি যে খবর পেয়েছি তাতে স্থানীয় বিধায়ক এবং নেতৃত্বকে পরিবারের কাছে পৌঁছতে দেয়নি,পুলিশ প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি করেছে ।’ পুলিশ এই ঘটনাকে পারিবারিক এবং গ্রাম্য বিবাদ বলে চালানোর চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ তার ।
তিনি আরও বলেছেন,’আমরা দায়িত্ব নিয়ে বলতে পারি, ইস্যু যাই থাকুক না কেন, এই হত্যা তৃণমূল কংগ্রেসের খুনিরা করেছে । যারা হতাহত হয়েছেন তারা বিজেপির সক্রিয় সদস্য, কর্মী ও কার্যকর্তা । মানব সরকার মন্ডলস্তরে আমাদের অন্যতম প্রমুখ নেতৃত্ব ছিলেন। আমরা নিরপেক্ষ তদন্তের দাবী করছি । পুলিশকে বলব লুকানোর চেষ্টা করবেন না । যে ১৩ জনের বিরুদ্ধে নির্দিষ্ট অভিযোগ, তাদের প্রত্যেককে গ্রেফতারের ব্যবস্থা করুন । আর পরিবারের পাশে বিজেপি দাঁড়াবে।আপনারা আজকে না ঢুকতে দিলেও কালকে আমাদের বিধায়করা গ্রামে যাবে । আমরা পরিবারকে সর্বতোভাবে সাহায্য করবো। আর পুলিশের ভূমিকায় যদি আমরা কোন ত্রুটি দেখি তাহলে পরিবারকে নিয়ে আমরা যা ব্যবস্থা করার করব ।’।

