এইদিন আন্তর্জাতিক ডেস্ক,২৮ সেপ্টেম্বর : বাংলাদেশের খাগড়াছড়ির গুইমারা উপজেলায় এক আদিবাসী স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের ঘটনাকে কেন্দ্র করে কয়েকদিন ধরে উত্তপ্ত হয়ে আছে গোটা এলাকা । ‘জুম্ম ছাত্র-জনতা’ ব্যানারে দৃষ্টান্তমূলক বিচার দাবিতে বিক্ষোভ ও অবরোধ চলছে । আজ রবিবারও বিক্ষোভ অব্যাহত আছে । সকাল থেকে জেলার বিভিন্ন স্থানে সড়কে অবরোধ পালন করা হয়। গুইমারা টাউন হলের সামনে ও রামেসু বাজার এলাকায় আন্দোলনকারীরা সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে ও গাছের গুঁড়ি ফেলে যান চলাচল বন্ধ করে দেয়।
বেলা ১২টার দিকে রামেসু বাজারে অবরোধ চলাকালে সেনাবাহিনী ও পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে। তারা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে অবরোধকারীদের সঙ্গে কথা বলেন এবং মহাসড়ক থেকে প্রতিবন্ধকতা সরিয়ে নেওয়ার অনুরোধ করেন। এ সময় দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হয় এবং ধস্তাধস্তির ঘটনাও ঘটে। প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বারবার অবরোধ তুলে নিতে আন্দোলনকারীদের অনুরোধ জানালেও তারা কর্মসূচি চালিয়ে যেতে থাকেন।
স্থানীয়দের অভিযোগ, একই সময়ে কিছু সেটলার (মুসলিম) বাঙালি পাহাড়িদের দোকানপাটে হামলা ও অগ্নিসংযোগ করে বেশ কিছু দোকানপাট পুড়িয়ে দেয়। এর ফলে সাধারণ মানুষ আতঙ্কিত হয়ে পড়েন এবং বাজার এলাকা ফাঁকা হয়ে যায়। এর আগে ২৭ সেপ্টেম্বর খাগড়াছড়ি সদর উপজেলার খেজুরবাগান, মহাজনপাড়া ও পানখাইয়া পাড়া এলাকাতেও সেটলার (মুসলিম)বাঙালিদের হামলার ঘটনা ঘটেছিল।
আজকের অবরোধের কারণে খাগড়াছড়ি–ঢাকা আঞ্চলিক মহাসড়কসহ বিভিন্ন যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। বিজিবি সদস্যরা সড়কে ফেলা গাছের গুঁড়ি পরিষ্কার করতে গেলে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে উত্তেজনা দেখা দেয়। পরে সেনাবাহিনী ও পুলিশ উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা করে।
আন্দোলনকারীরা ধর্ষণের ঘটনার পূর্ণ তদন্ত ও অভিযুক্তদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি তুলেছেন। পাশাপাশি তারা হামলা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় দায়ীদের বিচার এবং আহতদের চিকিৎসা ও ক্ষতিপূরণ দাবি করছেন।
বর্তমানে অঞ্চলে এখনো টানটান উত্তেজনা রয়েছে। দোকানপাট আংশিক বন্ধ রয়েছে এবং সাধারণ মানুষ গৃহবন্দী আছে । প্রশাসনের পক্ষ থেকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সর্বোচ্চ সতর্কতায় রয়েছে।
মানবাধিকারকর্মীদের মতে, দ্রুত ও নিরপেক্ষ তদন্ত ও ন্যায়বিচার ছাড়া উত্তেজনা প্রশমিত হবে না এবং দীর্ঘদিনের সহাবস্থানের পরিবেশ ঝুঁকির মুখে পড়তে পারে।।