এইদিন ওয়েবডেস্ক,ভাতার(পূর্ব বর্ধমান),২৫ সেপ্টেম্বর : রামপুরহাটে সপ্তম শ্রেণির আদিবাসী ছাত্রীকে ধর্ষণের পর খুন করে দেহ টুকরো টুকরো করার পর বস্তাবন্দি করে ফেলে দিয়েছিল শিক্ষক মনোজকুমার পাল ৷ পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করেছে ৷ ধর্ষক-খুনি ওই শিক্ষকের ফাঁসির দাবি উঠছে বিভিন্ন মহল থেকে । আজ বৃহস্পতিবার ওই নৃশংস ঘাতক শিক্ষকের ফাঁসি ও ‘ব্যর্থ’ পুলিশমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির পদত্যাগের দাবিতে তুমুল বিক্ষোভ দেখালো আদিবাসীদের সংগঠন ভারত জাকাত মাঝি পারগণা মহল (বিজেএমপিএম) । সংগঠনের সদস্যরা প্রথমে ভাতার বাজারের নাসিগ্রাম বাসস্ট্যান্ডে তুমুল বিক্ষোভ দেখায় । পরে সংগঠনের জেলা নেতৃত্বের উপস্থিতিতে তারা ভাতার থানা ঘেরাও করে । সেই সময় সংগঠনের সদস্যদের কারো কারোর হাতে তরবারি ও টাঙি দেখা গেছে ।
এদিন সংগঠনের তরফে শ্লোগান তোলা হয় : “ধর্ষক শিক্ষক মনোজ পালের ফাঁসি চাই”, আদিবাসীদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ পুলিশ প্রশাসন দূর হঠো”, “পুলিশ মন্ত্রী দূর হঠো”,” ব্যর্থ পুলিশমন্ত্রী হায় হায়”, “রাজ্যে নারী নির্যাতন হচ্ছে কেন পুলিশমন্ত্রী জবাব দাও”, “জবাব তোমায় দিতেই হবে, নইলে গদি ছাড়তে হবে” প্রভৃতি ৷
উল্লেখ্য, গত ২৮ আগস্ট সকালে রামপুরহাটে মনোজকুমার পালের কাছে টিউশন পড়তে গিয়ে নিখোঁজ হয়ে যায় রামপুরহাট থানা এলাকার সপ্তম শ্রেণির এক আদিবাসী ছাত্রী । ছাত্রীর বাড়ির লোকেরা চারিদিক খোঁজাখুঁজি করেও মেয়ের সন্ধান পায়নি । শেষ পর্যন্ত রামপুরহাট থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন পরিবারের সদস্যরা । পুলিশ সেই অভিযোগের ভিত্তিতে ওই নিখোঁজ ছাত্রীর স্কুলের এক মনোজকুমার পালকে আটক করে । কিন্তু একদিন পরই তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয় । তবে তার উপর নজর রাখা হচ্ছিল ৷ শিক্ষকের গতিবিধি সন্দেহজনক হওয়ায় তাকে ফের আটক করা হয় । তখন পুলিশি জেরায় সে খুনের কথা কবুল করে ৷ তার বয়ানের ভিত্তিতে রামপুরহাট শহরের একটি খালের ব্রিজের নীচ থেকে বস্তাবন্দি অবস্থায় ছাত্রীর দু’টুকরো দেহ উদ্ধার করে পুলিশ । কিন্তু মৃত ছাত্রীর সম্পূর্ণ দেহ পাওয়া যায়নি । তার দুটি হাত ও শরীরের নিম্নাঙ্গ বস্তায় ছিল না । এছাড়া ধৃতের বাড়ি থেকে সেক্স টয় উদ্ধার হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে ৷
পুলিশ জানতে পারে, ওই নাবালিকা কিশোরীকে খুন করে, তার দেহ টুকরো করে বস্তায় ভরে রামপুরহাটের কালিডাঙা সংলগ্ন একটি ব্রিজের নীচে ফেলে দেন মনোজকুমার পাল ৷ এরপর মঙ্গলবার রাতেই পুলিশ সেখানে অভিযান চালায় ৷ সেখানে দু’টুকরো অবস্থায় ছাত্রীর দেহ উদ্ধার হয় ৷ প্রাথমিক তদন্তে দেহটি ওই ছাত্রীর বলে নিশ্চিত হয়েছে পুলিশ ৷ ময়নাতদন্তের জন্য দেহ পাঠানো হয়েছে ৷ পুলিশের অনুমান, নৃশংস এই খুনের পর প্রমাণ লোপাট করতেই দেহ টুকরো করে বস্তায় ভরে ফেলে দেওয়া হয়েছিল ৷
কিন্তু, প্রশ্ন উঠছে কেন ওই ছাত্রীকে খুন করলেন অভিযুক্ত শিক্ষক ? যা নিয়ে মৃত ছাত্রীর পরিবারের তরফে তাঁদের মেয়েকে ধর্ষণ করে খুনের অভিযোগ করা হয়েছে ৷ এ নিয়ে মৃত ছাত্রীর মা বলেন,’আমার মেয়েকে নৃশংসভাবে খুন করা হয়েছে ৷ আমি চাই ওই শিক্ষকের ফাঁসি হোক ৷ আমার মেয়েকে বিয়ের প্রস্তাব দিয়েছিল ওই শিক্ষক ৷ একবার আমার মেয়ে আমাকে ওই শিক্ষকের কথা বলেছিল ৷ কীভাবে খুন করেছে আমি জানি না ৷’।