জ্যোতি প্রকাশ মুখার্জ্জী,গুসকরা(পূর্ব বর্ধমান),০৯ মে : লোকসংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে বেড়ে চলেছে দুর্ঘটনা এবং তৎজনিত অকাল মৃত্যু ও আহতের সংখ্যা। বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জ্জী লক্ষ্য করে দেখছিলেন কার্যত ট্রাফিক আইনকে লঙ্ঘন করে মাথায় হেলমেট ছাড়াই গতির নেশায় মেতে ওঠা যুব সম্প্রদায় শেষ পর্যন্ত গতির কাছে হার মেনে অকালে না ফেরার দেশে চলে গ্যাছে। আর দুঃখের সাগরে ভাসিয়ে দিয়ে গ্যাছে নিকট আত্মীয় স্বজনদের। গতি জনিত দুর্ঘটনা নিয়ন্ত্রণের জন্য ২০১৬ সালে তিনি চালু করেছিলেন ‘সেফ ড্রাইভ সেভ লাইফ’ প্রকল্প। লক্ষ্য একটাই দুর্ঘটনার সংখ্যা কমিয়ে আনা। তাঁর এই প্রকল্পকে বাস্তবে সফল করার জন্য রাজ্যের বিভিন্ন এলাকার মত দিন-রাত পরিশ্রম করে চলেছে পূর্ব বর্ধমান জেলার গুসকরার ট্রাফিক গার্ডের আধিকারিকরা। মাঝে মাঝে ট্রাফিক সচেতনতা শিবিরের আয়োজনও করেছে ।
গত ৮ ই মে পূর্ব বর্ধমান জেলা পুলিশের উদ্যোগে ‘সেফ ড্রাইভ সেভ লাইফ’ প্রকল্পের অঙ্গ হিসাবে একটা র্যালির মাধ্যমে ট্রাফিক সচেতনতা সংক্রান্ত একটি সুসজ্জিত ট্যাবলো বের হয় গুসকরা শহরে। স্কুল মোড় থেকে এই র্যালি যাত্রা শুরু করে এবং শেষ হয় নদীপটিতে। প্রচণ্ড সূর্যতাপকে উপেক্ষা করে প্রায় এক কিলোমিটার ব্যাপী এই র্যালিতে পা মেলান ডি.এস.পি (ডি এণ্ড টি) বীরেন্দ্র কুমার পাঠক , আউসগ্রাম থানার আই.সি উত্তম মণ্ডল, গুসকরা থানার ওসি অরুণ সোম সহ বেশ কয়েকজন পুলিশ আধিকারিক এবং গুসকরা ট্রাফিক গার্ড আধিকারিক অনন্ত দেব সাহা সহ ট্রাফিকের সঙ্গে যুক্ত সিভিক ভলাণ্টিয়াররা। এই র্যালিকে কেন্দ্র করে সাধারণ মানুষের মনে কৌতুহল মিশ্রিত উৎসাহ দেখা যায়।
প্রসঙ্গত গুসকরা হলো আউসগ্রাম, মঙ্গলকোট, ভাতার ও গলসী থানার বিস্তীর্ণ এলাকার ‘লাইফ লাইন’। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, সরকারি অফিস এবং বাজারে মানুষের ভিড় লেগেই থাকে। শহরের পূর্ব দিক দিয়ে চলে গ্যাছে এন.এইচ টু বি জাতীয় সড়ক। এই সড়ক পথ ধরে দক্ষিণ বঙ্গের বিভিন্ন জেলার মানুষ পৌঁছে যায় রবীন্দ্রনাথের স্মৃতি ধন্য শান্তিনিকেতনে এবং তারাপীঠ, কঙ্কালীতলা সহ বীরভূমের বিভিন্ন তীর্থস্থান তথা পর্যটনকেন্দ্রে। স্বাভাবিক ভাবেই বছরভোর ট্রাফিকের চাপ থেকে যায়। তার মধ্যেও দীর্ঘদিন ধরে গুসকরা শহরকে দুর্ঘটনা মুক্ত রাখা সত্যিই প্রশংসনীয়।
বীরেন্দ্র বাবু বললেন,’শহরের বুকে দুর্ঘটনা প্রায় নাই বললেই চলে। তবে এরজন্য আত্মতুষ্টির কোনো অবকাশ নাই। আমাদের সংশ্লিষ্ট দপ্তরের আধিকারিকরা সদাসতর্ক আছে। যেকোনো প্রয়োজনে আমরা তাদের পাশে আছি ।’ প্রিয় শহরকে দুর্ঘটনা মুক্ত রাখার জন্য জনগণকে তিনি সচেতন হওয়ার জন্য আহ্বান জানান।
সরাসরি মাঠে নেমে যারা ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ করেন সেই গুসকরা ট্রাফিক গার্ড আধিকারিক অনন্ত দেব সাহা বললেন – আমাদের উর্ধ্বতন আধিকারিকরা সর্বদা পাশে থেকে উৎসাহ দেওয়ার জন্য এবং ধীরে ধীরে অধিকাংশ মানুষ ট্রাফিক আইন মেনে চলার জন্য আমাদের কাজটা সহজ হয়েছে। আশাকরি আগামী দিনে মানুষ আরও সচেতন হবে।
গুসকরা পুরপ্রধান কুশল মুখার্জ্জী বলেন, ‘নানান প্রতিকূলতাকে সঙ্গী করে যেভাবে ট্রাফিক গার্ডরা কাজ করে চলেছে সত্যিই প্রশংসনীয়। মূলত তাদের জন্যই গুসকরা শহর আজ অনেকটাই দুর্ঘটনা মুক্ত।’ তিনি প্রত্যেককে ট্রাফিক আইন মেনে চলার সঙ্গে সঙ্গে ট্রাফিক গার্ডদের সহযোগিতা করার জন্য আহ্বান জানান ।।