প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়,বর্ধমান,১০ নভেম্বর : রান্নাবান্নায় খাদ্যগুন সম্পন্ন মসলা হিসাবে লঙ্কার যথেষ্ট কদর রয়েছে।সেই লঙ্কাই বোধহয় এবার তৃণমূল কংগ্রেস দলে গোষ্ঠী দ্বন্দ্বের অন্যতম হতিয়ার হতে চলেছে ! না ,এটা কোন কথার কথা নয়। ভাইরাল হওয়া শাসক দলের এক নেতা ও বিধায়কের কথোপকথনের অডিও ভিডিও থেকেই স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে তাঁদের কাছে লঙ্কার গুরুত্বের কথা। তরকারিতে লঙ্কার গুড়ো দিয়ে তৃণমূলের সাংসদকে মেরে দেবের কথা দলেরই এক নেতাকে বলছেন তৃণমূলেরই বিধায়ক! আর সেই অডিও ভিডিও কথোপকথন ভাইরাল হতেই জেলার রাজনৈতিক মহলে ব্যাপক শোরগোল পড়ে গিয়েছে।
জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের বিজয়া সম্মিলনী অনুষ্ঠানের পর দলীয় কর্মসূচি অনুযায়ী গত রবিবার পূর্ব বর্ধমানের আউশগ্রামে সাংবাদিক সম্মেলন ডাকা হয়েছিল।গুসকরা শহরের একটি লজে ওই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে সাংবাদিকদের মুখোমুখি বসেছিলেন স্থানীয় বিধায়ক সহ দলের এক ঝাঁক নেতানেত্রী। তৃণমূল নেতৃত্বের সামনে টেবিলে নামানো ছিল বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের বুম। সাংবাদিকদের মধ্যে কেউ একজন আউশগ্রামের বিধায়ক অভেদানন্দ থান্দারের পাঞ্জাবির কলারে ল্যাপেল (কলার মাইক) লাগিয়ে দিয়ে ছিলেন।
অনুষ্ঠানে একেবার গা ঘেসে পাশাপাশি বসে ছিলেন বিধায়ক অভেদানন্দ থান্দার এবং আউশগ্রাম-২ নম্বর ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা আব্দুল লালন । সাংবাদিক বৈঠকের সময় তাঁরা দু’জনে তাঁদের বিপক্ষ গোষ্ঠী নিয়ে একান্তে কথাবার্তা বলছিলেন।এমনকি আমন্ত্রিত থাকা সত্ত্বেও সম্মেলনে দলের জেলা সভাপতি তথা কাটোয়ার বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় এবং বোলপুরের সাংসদ অসিত মালে না আসা নিয়েও তাঁরা কথা বলছিলেন । ওই সময়েই বিধায়ক অভেদানন্দ থান্দার তৃণমূল নেতা লালন সেখকে বলেন,’রবি না এলে আমার বয়েই গেল। রবি এখানে ভোট করে দিয়ে যাবে নাকি ?’ এরপর বিধায়ক দলের সাংসদ অসিত মাল সম্পর্কে লালন কে বলেন,’তোমার বাড়িতে ওকে নেমন্তন্ন করে তরকারিতে লঙ্কার গুঁড়ো দিয়ে মেরে দেব ।’ তৃণমূলের দুই জনপ্রতিনিধির এই গোটা কথোপকথন রেকর্ড হয়ে যায় ।পরে সেই কথোপকথনের অডিও ভিডিও ঝড়ের গতীতে ভাইরাল হয়ে যায় ।
বিধায়কের বিপক্ষ গোষ্ঠীর লোকজন ভাইরাল হওয়ায় ওই অডিও ভিডিওকে হাতিয়ার করেতে বিন্দু মাত্র দেরি করো নি। যদিও এনিয়ে অভেদানন্দ থান্দার কোনও মন্তব্য করতে রাজি হননি। তবে আব্দুল লালন বলেন,আমাদের নিজেদের মধ্যে ঠাট্টা ইয়ার্কিও যদি কেউ রাজনৈতিক হাতিয়ার করে,সেটা দুর্ভাগ্যজনক। এর পর থেকে আমরা হাল্কা কথাবার্তা বলার ক্ষেত্রেও সতর্ক থাকব । আর দলের জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় বলেন,ঘটনাটি শুনেছি। বিষয়টি নিয়ে খোঁজ নিচ্ছি ।।