এইদিন ওয়েবডেস্ক,কলকাতা,০৬ অক্টোবর : আজ সোমবার কোজাগরী লক্ষীপুজো । ধনসম্পদের দেবীর আরাধনার দিন । হিন্দু সম্প্রদায়ের কাছে অত্যন্ত একটা পবিত্র দিন আজ । কিন্তু আজকের এই পবিত্র দিনেই বাংলাদেশের নোয়াখালিতে হিন্দু নরসংহারের ঘটনা ঘটেছিল । ১৯৪৬ সালের ১০ অক্টোবর থেকে ৯ নভেম্বর পর্যন্ত নোয়াখালী জেলায় নির্বিচারে হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষকে হত্যা করে মুসলিমরা । উগ্র মুসলিম জনতা হিন্দুদের উপর ব্যাপকভাবে হত্যা, ধর্ষণ, অপহরণ, সম্পত্তি লুন্ঠন ও অগ্নিসংযোগের মতো ঘটনা ঘটায় ।
আজকের এই পবিত্র দিনে ইতিহাসের সেই কালো অধ্যায়কে ফের স্মরণ করিয়ে দিলেন ত্রিপুরার প্রাক্তন রাজ্যপাল ও হিন্দুত্ববাদী লেখক তথাগত রায় । তিনি আজ এনিয়ে এক্স-এ লিখেছেন,”ইতিহাস যারা ভুলে যায় তাদের কপালে আছে আবার সেই ইতিহাসের বলি হওয়া” — সান্তাইয়ানা, স্পেনীয় দার্শনিক।
আজ কোজাগরী লক্ষীপুজো, নোয়াখালির হিন্দুহত্যার ৮৮ বছর পূর্ণ হল। ১৯৪৬ সালে এই দিনটিতে গোলাম সারোয়ার নামক মুসলিম লীগের এক নরপিশাচের নেতৃত্বে ব্রিটিশ ভারতের প্রাক্তন নোয়াখালি জেলা ও সংলগ্ন চাঁদপুর মহকুমা (বর্তমান বাংলাদেশের নোয়াখালি, ফেনী, লক্ষ্মীপুর ও চাঁদপুর জেলা) জুড়ে ৮০% মুসলমান ২০% হিন্দুর উপর অমানুষিক অত্যাচার করেছিল – প্রধানত হত্যা, ধর্ষণ, বলপূর্বক ধর্মান্তরকরণ ও সম্পত্তি নষ্ট করা। হিন্দু মহাসভা নেতা রাজেন্দ্রলাল রায়চৌধুরীর কাটা মুন্ডু একটি ডেকচিতে করে সারোয়ারের কাছে উপহার দিয়েছিল তার চ্যালারা। এর বিস্তারিত আছে দীনেশচন্দ্র সিংহের ‘নোয়াখালির মাটি ও মানুষ’, অশোকা গুপ্তের ‘নোয়াখালির দুর্যোগের দিনে’ ও আমার ‘যা ছিল আমার দেশ’ বইতে।
মোহনদাস গান্ধী এই সময় নোয়াখালি পরিভ্রমণ করে খুব নাম কিনেছিল, কিন্তু মুসলমান হত্যাকারীদের বিরুদ্ধে একটি কথাও বলেনি। তবে তার আরো বেশি নামডাক হয়েছিল, কারণ এই ভ্রমণকালীন সে দুটি নাতনির বয়সী মেয়েকে বিছানায় দুপাশে নিয়ে ন্যাংটো হয়ে শুত। বলত, সে নাকি নিজের উপর এক্সপেরিমেন্ট করছে। বাচ্চা বাচ্চা মেয়েদুটির কি অবস্থা হত তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
এই সময় হত্যা-ধর্ষণকারীদের একটা standard operating procedure ছিল, কোনো হিন্দু গৃহস্থের একমাত্র গরুটিকে কেটে তার মাংস গৃহস্থকে খাওয়ানো। সেই সময় হিন্দুদের বিশ্বাস ছিল, একবার গরুর মাংস মুখে দিলে আর হিন্দুসমাজে ফিরে আসতে পারবে না। রামকৃষ্ণ মিশনের স্বামী মাধবানন্দ ও শ্যামাপ্রসাদ দুজনে মিলে তাঁদের হিন্দুসমাজে ফিরে আসার ব্যবস্থা করেছিলেন।
৮৮ বছর আগে নোয়াখালীতে ঠিক কত সংখ্যক হিন্দুকে হত্যা, মহিলাদের ধর্ষণ বা গনধর্ষণ এবং ধর্মান্তরিত হতে বাধ্য করা হয়েছিল তার সঠিক পরিসংখ্যান আজও অজানা । তবে তাদের মধ্যে অন্যতম ভুক্তভোগী ছিলেন শচীন্দ্রকুমার ভৌমিক নামে এক ব্যক্তি । বাংলাদেশের নোয়াখালি জেলার বেগমগঞ্জ থানার ঘাইচাদ পোস্ট অফিসের অন্তর্গত জয়কৃষ্ণপুর গ্রামের বাসিন্দা ওই ব্যক্তি পরে পরিবার নিয়ে পশ্চিমবঙ্গে পালিয়ে আসেন । গুরের ব্যবসায়ী শচীন্দ্রকুমার ভৌমিক ইসলামি মৌলবাদীদের নৃশংসতার যে ছোট্ট বিবরণ দিয়েছিলেন, তাতে শিহরিত হয়ে উঠেছিল এরাজ্যের মানুষ । তিনি বলেছিলেন,আমাদের গ্রামের চতুষ্পার্শের গ্রামে মুসলমানরা আগুন লাগাইয়া দেয়। বহু হিন্দু পরিবার মুসলমান করিয়া তাহাদের গোমাংস ভক্ষণ করান হয়। যে দু একটি বড় বড় পরিবার ধর্মান্তর গ্রহণে অস্বীকার করে তাহাদের পরিবারের সকল লোককে কাটিয়া ফেলা হয়। যুবতী মেয়েদিগকে বলপূর্ব্বক বিবাহ করা হয়। অনেক শিশুকে প্রজ্বলিত অগ্নিকুণ্ডে নিক্ষেপ করা হইয়াছে। এই সকল নিদারুণ অত্যাচার কাহিনী প্রতিদিনই আমরা পার্শ্ববর্তী গ্রাম হইতে পাইতাম। সেই ভয়ে আমি আমাদের গ্রাম আক্রান্ত হওয়ার পূর্ব্বেই গ্রাম ছাড়িয়া চলিয়া আসি। পার্শ্ববর্তী গ্রামে যখন আগুন লাগে তখন ঐ সকল গ্রাম হইতে বহু আশ্রিত আমাদের গ্রামে আশ্রয় লয়। তাহাদের নিকট শুনিতে পাই যে অত্যাচারী মুসলমানগণ তাহাদেরই প্রতিবেশী বন্ধুবান্ধব।’ তিনি নিজের ক্ষয়ক্ষতির বিবরণও দেন ।
তৎকালীন অবিভক্ত নোয়াখালী ছিল বর্তমান বাংলাদেশের নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী নিয়ে এবং অবিভক্ত ত্রিপুরা জেলা ছিল বর্তমান কুমিল্লা, চাঁদপুর ও ব্রাহ্মণবাড়ীয়া অঞ্চল নিয়ে গঠিত।১৯৪৬ সালের অক্টোবর মাসের ১০ তারিখ কোজাগরী লক্ষ্মী পূজার দিন নোয়াখালীর হিন্দুরা বাড়িতে বাড়িতে পূজার আয়োজনে ব্যস্ত। কোজাগরীর চাঁদ তখন জ্বলজ্বল করছে। দীপ জ্বলছিল তুলসীমঞ্চে। আলপনা, আর সারি সারি লক্ষীর পা গৃহস্থের আঙিনায় শোভা পাচ্ছিল ।গৃহস্থের বাড়ীতে সবাই দেবী আরাধনায় রত। হঠাৎ এক পৈশাচিক চীৎকারে কেঁপে উঠল স্নিগ্ধ সুন্দর চাঁদনি রাতের আকাশ বাতাশ ।
এদিকে তখন মুসলিম লীগ নেতা-কর্মীরা প্রচার করে যে, শিখ সম্প্রদায় দিয়ারা শরীফ আক্রমণ করেছে।গুজবের ফলে আশে পাশের এলাকার মুসলিমরা দলে দলে দিয়ারা শরিফে জড় হয়। গোলাম সরোয়ার হুসেনি সমবেত মুসলিমদেরকে সাহাপুর বাজার আক্রমণ করতে নির্দেশ দেয়। কাশেম নামের আরেকজন মুসলিম লীগ নেতাও তার নিজস্ব বাহিনী নিয়ে সাহাপুর বাজারে পোঁছায়, যাদেরকে কাশেমের ফৌজ বলা হত।
যখন বহু হিন্দু পুরুষকে হত্যা,নারীকে গনধর্ষণ ও অপহরণ করে ধর্মান্তরিত করা হয়েছে তখন মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধী এই দাঙ্গা পীড়িত এলাকায় কথিত শান্তি স্থাপন করতে যান । কিন্তু তিনি স্বেচ্ছাসেবকদের নিয়ে উপদ্রুত এলাকায় ঘুরে যখন দেখেন যে শুধু হিন্দুরাই অত্যাচারিত হয়েছে,তখন কর্মসূচির বাহানায় চুপচাপ মুম্বাই পালিয়ে আসেন । ভগবান ভরসায় ছেড়ে দিয়ে আসেন হিন্দুদের ভাগ্য ।
বিভিন্ন প্রতিবেদনে জানা যায়, কাশেমের ফৌজ নারায়ণপুর থেকে সুরেন্দ্রনাথ বসুর ‘জামিনদার অফিসের’ দিকে এগিয়ে যায়। কল্যাননগর থেকে আসা আরেকদল মুসলিম কাশেমের ফৌজের সাথে যোগ দেয়। এদের সাথে আরও অনেক ভাড়া করে আনা মুসলিম জামিনদার অফিসে আক্রমণ করে। সামান্য প্রতিরোধের পরই সুরেন্দ্রনাথ বসু ধারাল অস্ত্রের আঘাতে মারাত্মক ভাবে আহত হন। মুসলিম জনতা হাত-পা বেধে তাকে জীবন্ত আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করে।সুরেন্দ্রনাথ বসুকে মুসলিমরা আক্রমণ করেছে শুনতে পেয়ে পাশের পাঁচঘরিয়া গ্রামের ডাক্তার রাজকুমার পাল তাকে সাহায্য করতে এগিয়ে আসেন। কিন্তু পথমধ্যে তাকে মুসলিমরা ছুরিকাহত করে।
নোয়াখালী জেলার রামগঞ্জ পুলিশ স্টেশনের অন্তর্গত সোনাচাকা গ্রামের অধিবাসী রায়পুর উচ্চ ইংরেজি বিদ্যালয়ের হেড পণ্ডিত শরৎচন্দ্র চক্রবর্তী ঠাকুর (কাব্যতীর্থ) একটি হলফনামায় উল্লেখ করেন,১০ অক্টোবর রায়পুর ও রামগঞ্জে লুণ্ঠন,হত্যা,অগ্নিকাণ্ড শুরু হয়।১৪ অক্টোবরে রায়গঞ্জ বাজার সংলগ্ন গ্রামগুলোতে অগ্নিকাণ্ড দেখতে পেয়ে প্রায় দুইশত নরনারী স্থানীয় থানায় আশ্রয় নেয়। সংগঠিত মুসলিম জনতা এসময় রায়পুরের সকল দেবদেবীর বিগ্রহ ভেঙ্গে ফেলে,মন্দিরগুলি ধ্বংস করে এবং হিন্দু দোকান- বাড়িঘর লুট করে থানায় প্রবেশ করে।থানার মুসলিম দারোগা সব হিন্দু পুরুষকে থানা থেকে জোর করে বের করে দেয়।উন্মত্ত মুসলিম জনতা এসময় তাদেরকে তীব্রভাবে প্রহার করে স্থানীয় বড় মসজিদে নিয়ে ইসলাম ধর্মে ধর্মান্তরিত করে এবং গো-মাংস খেতে বাধ্য করে।
স্থানীয় খ্যাতনামা ব্যবসায়ী নবদ্বীপচন্দ্র নাথ থানা থেকে বের হতে শেষ পর্যন্ত অস্বীকৃতি জানালে, মুসলিমরা তাকে থানার ভিতর থেকে টেনে হিঁচড়ে বের করে নিয়ে যায়।তাকে সেখানেই প্রকাশ্যে নৃশংস ভাবে প্রহার ও ছুরিকাঘাত করে হত্যা করে এবং মৃতদেহ রশিতে বেঁধে টানতে টানতে উত্তর দিকে নিয়ে যায়।
ডাঃ প্রতাপ চন্দ্র মজুমদারকে ১৯৪৬ সালে নোয়াখালী দাঙ্গার সময় মুসলিমরা নৃশংস ভাবে হত্যা করে।
অক্টোবর মাসের ১১ তারিখে গোলাম সরোয়ারের ব্যক্তিগত বাহিনী ‘মিঞার ফৌজ’ নোয়াখালী বার এ্যাসোসিয়েশন ও জেলা হিন্দু মহাসভার সভাপতি রাজেন্দ্রলাল রায়চৌধুরীর বসতবাড়িতে আক্রমণ করে। সে সময়ে ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘের স্বামী ত্রেম্বকানন্দ তাঁর বাড়িতে অতিথি হিসেবে ছিলেন। রাজেন্দ্রলাল পুরোটা দিন তাঁর বাড়ির ছাদ থেকে রাইফেল নিয়ে আক্রমণ প্রতিহত করেন। রাত নেমে আসার পর যখন মুসলিমরা ফিরে গেল তখন রাজেন্দ্রলাল স্বামী ত্রম্বকানন্দ এবং তার পরিবারের সদস্যদের নিরাপদ স্থানে পাঠিয়ে দেন। পরের দিন আবার মুসলিম জনতা সংগঠিত হয়ে রাজেন্দ্রলালের বাড়িতে আক্রমণ করে। তারা বাড়িতে অগ্নি সংযোগ করে। রাজেন্দ্রলাল, তার অগ্রজ চিন্তাচরন এবং অনুজ সতীশসহ পরিবারের ২২ জন সদস্যকে হত্যা করা হয়। রাজেন্দ্রলাল রায়চৌধুরীর শরীর থেকে মস্তক বিচ্ছিন্ন করে ফেলে মুসলিমরা। এরপর সে ছিন্ন মস্তক একটি থালায় করে গোলাম সরোয়ার হুসেনির নিকট নিয়ে আসে তার বাহিনী।
রাজেন্দ্র লাল ছিলেন নোয়াখালী বারের চেয়ারম্যান এবং নোয়াখালী হিন্দু মহাসভার প্রেসিডেন্ট।রামগঞ্জ পুলিশের নিয়ন্ত্রণাধীন সোমপাড়া বাজারের কাছে গোপাইরবাগে দাস পরিবারের উপর কাশেমের নিজস্ব বাহিনী আক্রমণ করে। দাস পরিবার ছিল কাশেমের নিকটতম প্রতিবেশী। আক্রমণকারী বাহিনী দাস পরিবারের ১৯ জন সদস্যকে নির্মম ভাবে হত্যা করে। হত্যার পূর্বে বাড়ির নারীদের ধর্ষণ করা হয়। মুসলিমরা রামগঞ্জ পুলিশ স্টেশনের আওতাধীন নোয়াখোলা গ্রামের চৌধুরী পরিবারের উপর হামলা চালায় বর্বর মুসলিমরা । হামলাকারীরা উন্মত্তের মত হত্যার তাণ্ডব চালায়, লুটপাট করে এবং আগুন লাগিয়ে দেয়। ওই বাড়ির মোট ৮ জন পুরুষ সদস্যের সবাইকে হত্যা করা হয়। বাড়ির মহিলাদের টেনে হিঁচড়ে ঘর থেকে বের করে প্রকাশ্য দিবালোকে জনসম্মুখে গণধর্ষণ করা হয়।
বিপ্লবী লালমোহন সেনকেও মুসলিমরা নির্মমভাবে তাঁকে হত্যা করে।মুসলিমদের আরেকটি দল রামগঞ্জ পুলিশ স্টেশনের গোবিন্দপুরের যশোদা পাল ও ভরত ভূঁইয়ার বাড়িতে আক্রমণ করে।তারা পরিবারের ১৬ জন সদস্যকে দড়ি দিয়ে বেধে জীবন্ত অগ্নিদগ্ধ করে নির্মম ভাবে হত্যা করে। বাড়ির মহিলাদের গণধর্ষণ করা হয়।আমিশাপাড়া এবং সাতঘরিয়ার মধ্যবর্তী এলাকার ভৌমিক এবং পাল পরিবারের সবাইকে আগুনে পুড়িয়ে মারা হয়। এই দুই পরিবারের ১৯ সদস্যকে হত্যা করে মুসলিমরা। বাড়ির নারীদের সম্মানহানি করা হয়।গোলাম সরোয়ারের নিজস্ব বাহিনী নন্দীগ্রামের নাগ পরিবারের বাড়িঘর আগুনে পুড়িয়ে শুধু ক্ষান্ত হয়নি, রমনীকান্ত নাগের প্রতিষ্ঠিত পোস্ট অফিস ও বিদ্যালয় ভবনও পুড়িয়ে দেয়।
শ্রী যোগেশ চন্দ্র শীল আদালতে সাক্ষী দেন।যে নোয়াখালী দাঙ্গা চলাকালীন সময়ে বেগমগঞ্জ থানার দুর্গাপুর গ্রামের তরঙ্গবালা দাসী নামক জনৈক মহিলাকে মুসলিমরা বেশ কয়েকবার নির্যাতন করে। এই সাক্ষ্য ১৯৪৭ সালের ২৬ এপ্রিল গৃহীত হয়। (সুত্রঃ নোয়াখালী-১৯৪৬,সুহাসিনী দাস)
আশেপাশের হিন্দু পরিবার গুলো নাগ পরিবারের বাড়িতে আশ্রয় নেন এবং প্রথম দিকে পুলিশ বাহিনীও তাদেরকে নিরাপত্তা দেয়। যখন গোলাম সরোয়ারের বাহিনী নাগ পরিবারের বাড়িতে আক্রমণ করে, পুলিশ তাদের হটিয়ে দেয়।পরবর্তীতে আক্রমণকারী মুসলিম জনতা সুসংগঠিত হয়ে সমস্ত গ্রাম জুড়ে নির্বিচারে লুটপাটের তাণ্ডব চালায়। কুঞ্জ কুমার নামে বৃদ্ধকে জ্যান্ত পুড়িয়ে হত্যা করে মুসলিম জনতা ।
গ্রামের পর গ্রাম জুড়ে হিন্দুদেরকে জোর করে ইসলামে ধর্মান্তরিত করার মত ঘৃণ্য পাশবিকতায় উন্মত্ত হয়ে ওঠে মুসলিমরা। হিন্দু পুরুষদেরকে মাথায় টুপি এবং মুখে দাড়ি রাখা বাধ্যতামুলক করা হয়। মহিলাদের হাতের শাঁখা ভেঙ্গে ফেলে এবং কপালের সিঁদুর মুছে দেয় মুসলিমরা। তাদেরকে কলেমা পড়ে ইসলামে ধর্মান্তকরন করা হয়। সেখানে হিন্দু মহিলাদের মাটিতে চিৎ করে শুইয়ে মুসলিম লীগের গুণ্ডারা পায়ের বুড়ো আঙ্গুল দিয়ে সিঁথির সিঁদুর মুছে দিয়ে হাতের শাঁখা ভেঙ্গে তাদের স্বামী ও পুত্র ও শিশু কন্যাদের হত্যা করে ওই হিন্দু মহিলাদের জোর করে ইসলাম ধর্মে ধর্মান্তরিত করে নিকাহ করত।লীলা রায় ১৩০৭ জন হিন্দু মেয়েকে উদ্ধার করেছিলেন। ১০ অক্টোবর ১৯৪৬ কোজাগরী লক্ষ্মী পূর্ণিমার রাতের বিভীষিকা ইতিহাসের পাতায় রক্তে রাঙানো এক মধ্যযুগীয় বর্বরতার চূড়ান্ত সাক্ষ্য বহন করে চলেছে। অথচ ভারতে তথাকথিত ধর্মনিরপেক্ষ ইতিহাসকাররা সেই কালো অধ্যায়কে আড়াল করে গেছে । বামপন্থী ইতিহাসকার ও মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধী ধর্মনিরপেক্ষ শব্দটাকেই কলুষিত করে গেছে এবং আজও করে যাচ্ছে তাদের সাঙ্গপাঙ্গরা ।।