এইদিন ওয়েবডেস্ক,কাটোয়া(পূর্ব বর্ধমান),২৮ অক্টোবর : আজ মঙ্গলবার পবিত্র ছটপুজো । গোটা রাজ্য জুড়ে পূণ্যার্থীরা জড়ো হয়েছেন সূর্যদেব ও এবং ছঠী মাইয়ার (সূর্যের বোন) আরাধানার জন্য । পূর্ব বর্ধমান জেলার কাটোয়ার ভাগীরথী নদীর ঘাটে ঘাটে ভোর থেকে পূণার্থীদের ভিড় লক্ষ্য করা যায় । কিন্তু কাটোয়ার দেবরাজঘাটে পূণ্যার্থীদের একটা দল পূণ্যস্নান করার সময় শিবম সাউ(২৫) ও সুজন সাউ (১৮) নামে দুই তরুনী তলিয়ে যায় । উৎসবের আবহ মুহুর্তের মধ্যে শোকে পরিনত হয় । খবর পেয়ে আসে বিপর্যয় মোকাবিলা বিভাগের পাশাপাশি পুলিশের নজরদারি বোট । শুরু হয় তল্লাশি । কিন্তু ছেলে দুটির এখনো পর্যন্ত কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি বলে জানা গেছে । তবে কাটোয়ার ভাগিরথীর ঘাটে স্নান করতে আসা পূণ্যার্থীদের বেঘোরে প্রাণ যাওয়ার ঘটনা এই প্রথম নয় । স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ,বারবার একই দুর্ঘটনা ঘটলেও ঘাটের নিরাপত্তা নিয়ে স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক ও তৃণমূল পরিচালিত পুরসভার কোনো হেলদোল নেই । এনিয়ে তারা ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন ।
জানা গেছে,কাটোয়া ন্যাশনালপাড়ায় বাড়ি নিখোঁজ দুই তরুন শিবম সাউ ও সুজন সাউয়ের । তারা সম্পর্কে খুড়তুতো ভাই। শিবম পেশায় ব্যবসায়ী মনোজ সাউয়ের দুই ছেলেমেয়ের মধ্যে বড় । অন্যদিকে মনোজের ভাই রঞ্জিত সাউয়ের দুই ছেলের মধ্যে বড় সুজন। রঞ্জিত সাউ ব্যবসার সূত্রে মুর্শিদাবাদ জেলার সালারে থাকেন । ছটপুজো উপলক্ষ্যে বাড়ি এসেছিলেন। আজ মঙ্গলবার ভোর পাঁচটার মধ্যে ন্যাশানালপাড়ার ওই পরিবারগুলি ছটপুজোর জন্য দেবরাজঘাটে স্নান করতে এসেছিল । একে একে সবাই স্নান করে উঠে গেলেও শিবম ও সুজন নদীর স্রোতে তলিয়ে যান ।
নিখোঁজ দুই তরুনের কাকা প্রসেনজিৎ সাউ আক্ষেপ করে বলেন,’আমি ছেলেদুটোকে বাঁচানোর অনেক চেষ্টা করেছিলাম । কিন্তু নদীর স্রোত এতটাই প্রবল ছিল যে হাত ফস্তে গিয়ে ওরা তলিয়ে যায় । ভাইপো দুটো আমার চোখের সামনেই…..।’ একথা বলেই তিনি কান্নায় ভেঙে পড়েন ।
এদিকে উৎসবের আবহে এই মর্মান্তিক ঘটনার কথা চাওড় হতেই গোটা এলাকা জুড়ে নেমে আসে শোকের ছায়া । প্রচুর মানুষ কাটোয়ার দেবরাজঘাটে এসে জড়ো হয় । আসে কাটোয়া মহকুমা পুলিশ আধিকারিক কাশীনাথ মিস্ত্রি সহ বিশাল পুলিশ বাহিনী ঘাটের কাছে আসেন। শুরু হয় তল্লাশি । কিন্তু স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ যে কাটোয়ার দেবরাজঘাট অত্যন্ত বিপদজনক। প্রায়ই প্রাণহানির ঘটনা ঘটলেও পূণ্যার্থীদের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করার বিষয়ে তৃণমূল কংগ্রেস পরিচালিত পুরসভা বা প্রশাসনকে কোনো উদ্যোগ নিতে দেখা যায়নি৷ উল্লেখ্য,পূর্ব বর্ধমান জেলার তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় কাটোয়ারই বিধায়ক । এবিষয়ে তার ভূমিকা নিয়েও বিস্তর প্রশ্ন তুলেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা ।।

