এইদিন ওয়েবডেস্ক,বালুরঘাট,২২ এপ্রিল : ২০১৬ সালে শিক্ষক নিয়োগ প্যানেল বেআইনিভাবে চাকরি পাওয়া ২৫ হাজার ৭৫৩ জনের চাকরি আজ সোমবার বাতিল করে দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ । এতে একদিকে লোকসভা নির্বাচনের ঠিকমুখেই যেমন তৃণমূল কংগ্রেস চরম অস্বস্তিতে পড়েছে তেমনি অন্যদিকে এদিকে প্রচারের হাতে আর করেছে বিজেপি । বালুরঘাট লোকসভার বিজেপি প্রার্থী মজুমদারের সমর্থনে বিজয় সংকল্প সভায় বক্তব্য রাখার সময় বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী হাইকোর্টের রায়কে ‘ঐতিহাসিক’ বলে স্বাগত জানিয়েছেন ।
শুভেন্দু অধিকারী বলেন, ‘আজ কলকাতা হাইকোর্টে একটি ঐতিহাসিক রায় হয়েছে । যাদের চাকরি চলে গেছে তাদের নিয়ে আমার কোন মন্তব্য নেই । কিন্তু যারা দোকান খুলে চাকরি বিক্রি করেছিলেন, ৩০ লক্ষ লোকের সর্বনাশ করেছিলেন, সেই মমতা ব্যানার্জি আর পার্থ চ্যাটার্জির সর্বনাশ হয়েছে আজকে আদালতে । আমি এই রায়কে স্বাগত জানিয়ে বলবো আর কি কোন প্রমাণের অপেক্ষায় আছে ? তৃণমূল মানে চোর ।’ এরপর তিনি ‘চোর ধরো জেল ভরো’ স্লোগান তোলেন ।
শুভেন্দু বলেন,’এতদিন আমি,সুকান্ত মজুমদার আর দিলীপ ঘোষরা বলতাম । আজকে কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ পর্যন্ত বলল তোমরা ২৬ হাজার চাকরি চুরি করেছো । ৩০ লক্ষ মেধাযুক্ত কর্মপ্রার্থীদের পিঠের ছুরি মেরেছ ।’ এরপর তিনি মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জিকে নিশানা করে বলেন, ‘এখান থেকে ১০০ কিলোমিটার দূরে চাকুলিয়াতে উন্মাদের মত চিৎকার করছে, চোরেদের রানী মমতা ব্যানার্জি । চিৎকার করে বলছে যে আমি এই রায় মানি না । আপনাকে মানতে হবে না । আপনাকে আমি নন্দীগ্রামে হারিয়েছি, ১৯৫৬ ভোটে । আমি আর সুকান্ত মজুমদার দুই ভাই মিলে আপনাকে প্রাক্তন করে ছাড়বো। আপনি শুধু দেখতে থাকুন ।’
শুভেন্দু অধিকারী কথায়,’এর (মমতা ব্যানার্জি) অবস্থাটা কি হয়েছে জানেন? গাড়ির পিছনে দেখবেন লেখা থাকে, “দেখবি আর জ্বলবি লুচির মত ফুলবি” । এর অবস্থা তাই হয়েছে । আর সামলাতে পারছে না ।’
তিনি বলেন,’আজকে কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ সব থেকে একটা ভালো রায় দিয়েছে । বাড়তি পোস্ট সৃষ্টি করেছে যারা তাদের সিবিআইয়ের হেফাজতে দিতে বলেছে । চোরেদেরকে রেগুলাইজ করার জন্য বাড়তি পোস্ট কে সৃষ্টি করেছে? মমতা ব্যানার্জি করেছে । কখন করেছে? ৫ ই মে ২০২২-এ কাবিনেট মিটিংয়ে করেছে । ওইদিন ক্যাবিনেটে যারা উপস্থিত ছিল তাদের সকলকে সিবিআই হেফাজতে নেওয়ার দাবি জানাচ্ছি ।’
তিনি বলেন,’প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি উত্তরবঙ্গ সফরে এসে বলে গেছেন, তৃণমূলের সবাই চোর । অর্ধেককে জেলে ঢুকিয়েছি বাকি তৃতীয় দফায় আসার পর ঢোকাবো । মাফলার তো গেছে এবার পালা হাওয়াই চটির ।’
শুভেন্দু অধিকারী আরো বলেন, ‘এরা চেয়েছিল যাতে আমরা ভাগাভাগি হয় । আমরা কোথাও জাতের নামে ধর্মের নামে ভোট চাই না । আমরা উন্নয়নের নামে ভোট চাই। এরা কিছুদিন আগে বললো কাস্ট সেন্সাস করব । মানে আমাদের ভাগাভাগি করবে । আর সংখ্যালঘুদের ভয় দেখাবে যে তোমাদেরকে ডিটেনশন ক্যাম্পে পাঠাবে । বিজেপি শাসিত ১৮ টি রাজ্যের কোথাও মুসলিমদের ধর্মপরিচয় দেখে বিজেপি তাড়িয়েছে? না । ৬ ই মার্চ সিএএ কার্যকর হয়েছে । একজন নাগরিকত্ব গেছে? না ।’
এদিন দলের রাজ্য সভাপতি প্রশংসা করেন শুভেন্দু অধিকারী । তিনি রাজ্য সভাপতিকে ‘অত্যন্ত জনপ্রিয় সভাপতি’ এবং ‘সংসদের একজন সাংসদ রত্ন’ বলে অবিহিত করেন । সুকান্ত মজুমদার সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘বয়সে তরুণ এক শিক্ষাবিদ গোটা দেশের মধ্যে লোকসভায় সবথেকে বেশি প্রশ্ন করেছেন । তিনি আমাদের প্রার্থী ডক্টর সুকান্ত মজুমদার । আপনাদের তো ট্রেনে দিল্লী পর্যন্ত পৌঁছে দিয়েছেন উনি । কেউ ভাবতে পেরেছিল ?’ আজকের বালুরঘাট লোকসভার অন্তর্গত ইটাহারে বিজেপির ‘বিজয় সংকল্প সভায়’ প্রধান বক্তা ছিলেন শুভেন্দু অধিকারী । সুকান্ত মজুমদার তাঁকে উত্তরীয় পরিয়ে ও ফুলের তোড়া দিয়ে স্বাগত জানান ।।