এইদিন ওয়েবডেস্ক,নয়াদিল্লি,১৭ সেপ্টেম্বর : ১৯৫০ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর গুজরাটের ভাদনগরে জন্মগ্রহণ করেন দেশের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী । আজ রবিবার তিনি ৭৩ বছরে পদার্পণ করলেন । দেশ জুড়ে পালিত হচ্ছে তার শুভ জন্মদিন । বিজেপির তরফে নেওয়া হয়েছে বিশেষ উদ্যোগ । দলীয়ভাবে ‘নমো অ্যাপ’-এর মাধ্যমে বিজেপি ‘আপনার সেবা ভাব প্রকাশ করুন’ কর্মসূচির প্রচার করতে চলেছে । তবে ২০১৪ সালে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর নরেন্দ্র মোদী বেশ কিছু ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত নিয়েছেন,যা ইতিহাসের পাতায় স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে । আর ওই সমস্ত সিদ্ধান্তগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল নোটবন্দীকরণ, তিন তালাক, করোনা মহামারীতে লকডাউনের সিদ্ধান্ত এবং জম্মু- কাশ্মীর থেকে ৩৭০ ধারা বিলোপ । আসুন প্রধানমন্ত্রীর এমনই ৫টি সিদ্ধান্তের বিষয়ে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক
কালো টাকা নিষিদ্ধ করার প্রধানমন্ত্রী মোদির সিদ্ধান্তকে দেশের জন্য সবচেয়ে বড় এবং কঠিন সিদ্ধান্ত বলে মনে করা হচ্ছে । ২০১৮ সালের ৮ নভেম্বর রাত ৮ টায় জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেওয়ার সময় প্রধানমন্ত্রী ৫০০ এবং ১,০০০ টাকার নোট বাতিলের ঘোষণা করেছিলেন । এই দিনটি ইতিহাসে লিপিবদ্ধ আছে। তিনি নোটবন্দির পিছনে তিনটি প্রধান কারণ দিয়েছেন । এই তিনটি কারনের একটি ছিল কালো টাকা আক্রমণ করা, দ্বিতীয়টি ছিল দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই করা এবং তৃতীয়টি ছিল সন্ত্রাসবাদী অর্থায়ন বন্ধ করা ।
তিন তালাকের উপর কঠোর আইন কার্যকর করাকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির দ্বিতীয় বৃহত্তম এবং কঠিন সিদ্ধান্ত বলে মনে করা হয়। প্রধানমন্ত্রী মোদী তার দ্বিতীয় মেয়াদে তিন তালাক আইন প্রণয়ন করে মুসলিম মহিলাদের একটি বড় স্বস্তি দিয়েছেন। ২০১৯ সালের পয়লা অগাস্ট সংসদে তিন তালাক বিল পাস হয়।
জম্মু ও কাশ্মীর থেকে ৩৭০ ধারা বাতিল
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের নেওয়া সবচেয়ে বড় সিদ্ধান্তের মধ্যে অন্যতম । অনুচ্ছেদ ৩৭০ বাতিল করে, জম্মু ও কাশ্মীর ও লাদাখকে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে বিভক্ত করা নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বাধীন সরকারের একটা ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত । যে সিদ্ধান্তের কারনে আজ জম্মু-কাশ্মীরের মুসলিম যুবকদের মধ্যে পাকিস্তানি সন্ত্রাসবাদী সংগঠনে যোগ দেওয়ার প্রবণতা ও ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনীকে লক্ষ্য করে পাথর ছোড়ার ঘটনা চিরতরে বন্ধ করা সম্ভব হয়েছে ।
জিএসটি আইন আনা মোদী সরকারের অন্যতম সিদ্ধান্ত । প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ২০১৭ সালের পয়লা জুলাই সারা দেশে পণ্য ও পরিষেবা কর কার্যকর করেছিলেন। এর লক্ষ্য ছিল সারা দেশে একক কর ব্যবস্থা চালু করা। মোদি সরকারের এই সিদ্ধান্ত নিয়ে ব্যাপক তোলপাড় করেছিল বিজেপি বিরোধী দলগুলি । বিরোধীরা মোদী সরকারের এই সিদ্ধান্তকে ভুল বলেছিলেন । কিন্তু পরে বিরোধী দলগুলিই ভূল প্রমানিত হয় ।
সংসদে সিএএ আইন পাশ করা প্রধানমন্ত্রী মোদীর অন্যতম ঐতিহাসিক সিদ্ধান্তগুলির মধ্যে অন্যতম । মোদি সরকার ২০১৯ সালে সংসদে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন পাশ করে । এর লক্ষ্য পাকিস্তান, বাংলাদেশ, আফগানিস্তান থেকে আসা সংখ্যালঘুদের (হিন্দু, শিখ, খ্রিস্টান, পার্সি, জৈন এবং বৌদ্ধ) ভারতীয় নাগরিকত্ব প্রদান করা। রাষ্ট্রপতির অনুমোদন পাওয়ার পর, এটি আইনে পরিণত হয় এবং ২০২০ সালের ১০ জানুয়ারী থেকে সারা দেশে কার্যকর হয়। যদিও তৃণমূল কংগ্রেসের মত কিছু রাজনৈতিক দল এই আইনের বিরোধিতা করছে এবং রাজ্যে সিএএ প্রয়োগ করতে দেওয়া হবে না বলে শাসাচ্ছে ।
এদিকে ১৮ সেপ্টেম্বর থেকে সংসদের বিশেষ অধিবেশন ডেকেছেন প্রধানমন্ত্রী । আশা করা হচ্ছে যে ওই বিশেষ অধিবেশনে ‘এক দেশ এক আইন’ প্রয়োগ, ‘প্লেস অফ ওয়ারশিপ অ্যাক্ট ১৯৯১’ বিলোপ এর মত আরও কিছু ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত নিতে পারেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী । উল্লেখ্য,প্লেস অফ ওয়ারশিপ অ্যাক্ট এমন এক সময়ে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী পিভি নরসিমা রাও-এর কংগ্রেস সরকার নিয়ে এসেছিল যখন রাম মন্দির আন্দোলন তুঙ্গে ছিল । এই আইনের কারনেই মথুরার কৃষ্ণজন্মভূমি সহ মুঘল শাসকের দ্বারা দখল করে নেওয়া মন্দির পুনরদ্ধারে আইনত বাধার সম্মুখীন হচ্ছে হিন্দু সংগঠনগুলি ।।