এইদিন ওয়েবডেস্ক,পূর্ব মেদিনীপুর,০৯ অক্টোবর : আরজি করের তরুণী চিকিৎসকের ধর্ষণ-খুন এবং জয়নগরে দশ বছরের শিশু কন্যাকে অপহরণ করে ধর্ষণ-খুনের ঘটনার পর বাইরের রাজ্যে গিয়ে নিজেকে পশ্চিমবঙ্গের বাসিন্দা বলতে লজ্জা লাগে বলে মন্তব্য করেছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী । আজ মহাষষ্ঠীর দিন পূর্ব মেদিনীপুর জেলার খেজুরী’র কুঞ্জপুর বাস স্টপ দুর্গোৎসব কমিটি আয়োজিত শ্রীশ্রী দুর্গাপুজোর শুভ সূচনায় এই মন্তব্য করেন বিরোধী দলনেতা । তিনি আরজি কর এবং জয়নগরের ঘটনার উল্লেখ করে বলেন, ‘আমরা বাঙালি হিসেবে আজ লজ্জিত ৷ আমরা আগে বাইরে গেলে বলতাম পশ্চিমবঙ্গের কলকাতা থেকে এসেছি… সিটি অফ জয় । কাউকে বলতাম নেতাজি এবং স্বামী বিবেকানন্দর দেশ থেকে এসেছি । কিন্তু আজকে আরজি করের ঘটনার পরে নিজেকে পশ্চিমবঙ্গবাসী বলে বলতে পরিচয় দিতে লজ্জা লাগে । এই সামাজিক ব্যাধি থেকে আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে। এর জন্য মায়ের কাছে আমরা প্রার্থনা করব… একমাত্র মা আমাদের শক্তি…মা যেন সমস্ত আসুরিক শক্তিকে ধ্বংস করেন । আমি মায়ের কাছে প্রার্থনা করব যে মা যেন আমাদের এই শক্তিটা দেন যাতে আমরা এই দূষিত এবং কলুষিত সমাজ থেকে আমরা মুক্তি পাই ।’
তিনি উপস্থিত শ্রদ্ধাল মানুষের উদ্দেশ্যে বলেন,’বাঙালি হিন্দু ধর্মের সব থেকে বড় উৎসব হল দুর্গা পুজো । কিন্তু এবারে আমরা পূজো উদযাপন করলেও মন থেকে মেনে নিতে পারছি না৷ তার কারণ আরজি করের ডাক্তার বোনটি এবং জয়নগরের ছোট্ট উমা, এদের জন্য আজ আমাদের কারোর মন ভালো নেই । তাই আমি এবারে কোথাও প্রথা মেনে পুজোর উদ্বোধন করিনি । আমি সকলের মঙ্গল প্রার্থনা করব এবং মায়ের কাছে প্রার্থনা করব তিনি কেন অভয়া শক্তি দিয়ে আর জি কর এবং উমার অসুরদের ধ্বংস করেন।’
শুভেন্দু অধিকারী ধর্মীয় বিধি মেনে দুর্গাপুজো পালনের পরামর্শ দিয়ে বলেন ‘সবাই পুজো কাটাবেন ৷ পুজো শুধু আনন্দ করার জন্য নয় । দুর্গাপুজো হলো সনাতন ধর্মের একটা বড় শাস্ত্রমতের একটা অনুষ্ঠান ।’ তিনি সনাতন ধর্মের ব্যাখ্যা দিয়ে বলেন,’সনাতন মানে যার আদি অন্ত নেই । পৃথিবীর সবচেয়ে প্রাচীন ধর্ম হল সনাতন । পাঁচ হাজার বছরের বেশি পুরনো এই ধর্ম । এই ধর্মের অনেক মানবিক দিক আছে । অপর ধর্মকে শ্রদ্ধা করা সনাতন ধর্মই শিখিয়েছে,সংযমব্রত পালনের রীতি আছে,শান্তি ভালোবাসার ছড়িয়ে দেওয়ার রীতি আছে। শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু ‘হরেকৃষ্ণ মন্ত্রকে’ ছড়িয়ে দিয়ে গোটা বিশ্বে প্রেম-প্রীতি-ভালোবাসার বন্ধনে আবদ্ধ করে গেছেন । এই ধর্মকে রক্ষা করার জন্য স্বামী বিবেকানন্দ শিকাগোতে প্রচার করে এসেছেন । এই ধর্মকে রক্ষা করার জন্য ভারত সেবাশ্রম সংঘের প্রতিষ্ঠা করেছিলেন স্বামী প্রণবানন্দ মহারাজ । তাই আমাদের কাজ হলো এই ধর্মকে রক্ষা করার জন্য দুর্গাপুজোর দিনগুলিতে যথাযথ বৈদিক রীতি মেনে আচার অনুষ্ঠান পালন করা । সবটা যেন আমরা শাস্ত্র পঞ্জিকা রীতি মেনে আচারণ অনুষ্ঠান পালন করি ।’
শুভেন্দু অধিকারী বলেন,’আমাদের দলীয় বিধায়ক ১২,০০০ই শ্রীমদভাগবতগীতা বিতরণ করেছেন । এই গীতাতে একটা লাইন আছে… ‘ধর্মরক্ষতি রক্ষিত’ । অনেক কিছু পাবেন অনেক কিছু হারাবেন কিন্তু নিজের ধর্মের সঙ্গে কখনো আপোষ করবেন না । এটা আপনাদের কাছে আমার বিনীত প্রার্থনা ।’।