প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়,বর্ধমান,১৮ আগস্ট : যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র মৃত্যু কাণ্ড নিয়ে রাজ্য জুড়ে নিন্দার ঝড় বইছে।এই আবহের মধ্যেই এবার র্যাগিং বন্ধ নিয়ে অতি সক্রিয় হচ্ছে পূর্ব বর্ধমান জেলার পুলিশ ও প্রশাসন।খুব শিঘ্রই জেলার কলেজ গুলিতে ও বিশ্ববিদ্যালয়ে শিবির করে র্যাগিং নিয়ে পড়ু্য়াদের সচেতনতার পাঠ দেওয়া শুরু করবে জেলা পুলিশ। পাশাপাশি জেলা প্রশাসনও অ্যান্টি র্যাগিং কমিটিকে নিয়ে বৈঠকে বসার সিদ্ধান্ত নিল। পুলিশ ও প্রশাসনের এই তৎপরতা সারা বছর জারি থাকলে কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় ও হোস্টেলে পড়ুয়ারা নিরাপদে থাকতে পারবে বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল ।
কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় গুলিতে র্যাগিং বন্ধ নিয়ে দেশের সর্বোচ্চ আদালত ও ইউ জি সি-স্পষ্ট নির্দেশিকা রয়েছে। তার পরেও র্যাগিং আতঙ্ক যে এখন রয়েই গিয়েছে তার জলন্ত উদাহরণ হল এই রাজ্যের যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষের ছাত্র মৃত্যুর ঘটনা। এর থেকে শিক্ষা নিয়ে বর্ধমান সহ রাজ্যের অন্যান জেলার কলেজ ও বিশ্ববিদ্যাঁলয় গুলির কর্তৃপক্ষ এবং পুলিশ ও প্রশাসন নড়ে চড়ে বসেছে। সেই মত পূর্ব বর্ধমান জেলা পুলিশ জেলার ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ, মেডিক্যাল কলেজ গুলিতে শিবির করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে । পুলিশ সুপার কামনাশিস সেন জানান, ’র্যাগিং বন্ধ করার লক্ষ্যে পড়ুয়াদেরকে সচেতন করা হবে।” সোমবার দুপুরে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ে এ নিয়ে হবে শিবির সেখানে পুলিশ সুপার নিজে উপস্থিত থাকবেন বলে জানা গিয়েছে ।
পুলিশের পাশাপাশি জেলা প্রশাসনও র্যাগিং বন্ধ
নিয়ে তৎপর হয়েছে। জেলায় ‘অ্যান্টি র্যাগিং
কমিটির মাথায় রয়েছেন জেলাশাসক। পুলিশ সুপার, তিনটি কলেজের অধ্যক্ষ, বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার-সহ আরও অনেকে ওই কমিটির সদস্য রয়েছেন। জেলাশাসক প্রিয়াঙ্কা সিংলা বলেন, “আমাদের অ্যান্টি-র্যাগিং কমিটি রয়েছে। আমরা খুব শীঘ্রই বৈঠকে বসবো।“ জেলা প্রশাসন সূুত্রে জানা গিয়েছে, ওই বৈঠকে ‘অ্যান্টি-র্যাগিং স্কোয়াড’’ তৈরির উপর জোর দেওয়ার জন্যে বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজগুলিকে বলা হবে। সদ্য ভর্তি-প্রক্রিয়া শেষ হয়েছে, নতুনরা হস্টেলের ঘরে ঢুকতে শুরু করেছে।এখন টানা কয়েক মাস ওই স্কোয়াড হস্টেলগুলিতে হানা দিলে র্যাগিং বন্ধে সদর্থক ফল মিলবে বলেই প্রশাসনের কর্তারা মনে করছেন।
পুলিশ ও প্রশাসনের পাশাপাশি বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষও অ্যান্টি র্যাগিং কমিটিগুলিকে কার্যকরী করে তোলার ব্যাপারে উদ্যোগী হয়েছে । এই ব্যাপারে সহ-উপাচার্য আশিস পাণিগ্রাহীকে বিশেষ দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।এ ছাড়াও বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের হস্টেল গুলিতে সিসিটিভি ক্যামেরা বসানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে কর্তৃপক্ষ।যাদবপুর-কান্ড থেকে শিক্ষা নিয়ে ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষ থেকে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথমবর্ষের ছাত্রছাত্রীদের জন্য সম্পূর্ণ আলাদাভাবে হস্টেল বন্টনের সিদ্ধান্তও কর্তৃপক্ষ নিয়েছে।হস্টেলে বহিরাগত প্রবেশ রুখতে প্রতিটি রুমের নাম্বারিং করার পাশাপাশি রুমগুলিতে কোন কোন ছাত্র থাকছে তার তালিকা তৈরী হবে। ওই
তালিকা নোটিশবোর্ডে যেমন লাগানো থাকবে তেমনই হস্টেলের স্টুয়ার্ড,সুপার ও নিরাপত্তারক্ষীর
কাছেও থাকবে। হস্টেলগুলিতে ঢুকছে বেড়োচ্ছে তা সময় সহ সমস্তকিছু রেজিস্টার-বুকে।নথিভুক্ত করা হবে বলে সহ-উপাচার্য আশীষ পাণিগ্রাহী জানিয়েছেন ।।