এইদিন ওয়েবডেস্ক,ভাতার(পূর্ব বর্ধমান),২৮ এপ্রিল : মাস খানেক ধরে বৃষ্টির দেখা নেই । গোটা রাজ্যে তীব্র দাবদহ চলছে । অধিকাংশ পুকুর,নালার জল শুকিয়ে গেছে । কোথাও কোথাও পানীয় জলের হাহাকারের কথা শুনতে পাওয়া যাচ্ছে । এই পরিস্থিতিতে পানীয় জলের জন্য চরম সমস্যার মুখে পড়তে হচ্ছে পশুপাখিদের ৷ আর ওই সমস্ত অবলা জীবজন্তুদের স্বার্থে মানবিক উদ্যোগ নিতে দেখা গেল পূর্ব বর্ধমান জেলার ভাতারের মুরাতিপুরের বাসিন্দা শেখ আমির নামে এক পশুপাখি প্রেমি যুবককে । আজ রবিবার সকাল থেকেই নিজের বাইকে চড়ে এলাকায় ঘুরে ঘুরে স্থানীয় বাসিন্দাদের বাড়ির ছাদ অথবা উঠানে, পাশাপাশি এলাকার বাজারের ব্যবসায়ীদের দোকানের সামনে ছোট ছোট পাত্রে জল মজুত রাখার জন্য আবেদন জানান তিনি । ওই যুবকের এই প্রকার মানবিক উদ্যোগ সাড়া ফেলে দিয়েছে এলাকায় । এলাকাবাসী যুবকের প্রশংসাও করেছেন ।
আলিপুর আবহাওয়া দফতর সূত্রে জানা গেছে,আজ রবিবার কলকাতার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৪১.১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা স্বাভাবিকের থেকে পাঁচ ডিগ্রি বেশি। পূর্ব বর্ধমান জেলায় অনেক আগেই ৪০-এর গন্ডি অতিক্রম করেছে । পশ্চিম মেদিনীপুরের কলাইকুন্ডায় আজকের দিনের তাপমাত্রা ৪৫.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস ।স্বাভাবিকের থেকে ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি । সর্বোচ্চ তাপমাত্রার নিরিখে রাজ্যের প্রথম স্থানে রয়েছে কলাইকুন্ডা । দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে আসানসোল । আসানসোলের তাপমাত্রা ছিল ৪৪.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
আলিপুর আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, দক্ষিণবঙ্গের তাপমাত্রা আগামী কয়েক দিনে আরও এক-দু’ডিগ্রি বাড়তে পারে। দুই মেদিনীপুর, দুই বর্ধমান, বাঁকুড়া, বীরভূম এবং ঝাড়গ্রামে তীব্র তাপপ্রবাহের সম্ভাবনা রয়েছে রয়েছে এবং এই জেলাগুলিতে লাল সতর্কতা জারি করা হয়েছে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস । দক্ষিণের বাকি জেলায় আগামী বৃহস্পতিবার পর্যন্ত জারি করা হয়েছে কমলা সতর্কতা। দক্ষিণবঙ্গে আগামী পাঁচ দিন বৃষ্টির কোনও সম্ভাবনা নেই বলেও জানানো হয়েছে । এই তীব্র দাবদহের মধ্যে জলকষ্ট সবচেয়ে বড় শঙ্কট হয়ে দাঁড়িয়েছে ।
শেখ আমির বলেন,’এই প্রকার দুর্বিষহ আবহাওয়ার কারনে পানীয় জলের জন্য চরম সমস্যার মুখে পড়তে হচ্ছে পশুপাখিদের । অধিকাংশ নালা,খাল,বিলের জল শুকিয়ে গেছে । কয়েকদিন ধরে লক্ষ্য করছি যে এলাকার পথকুকুরগুলো নিকাশি নালার নোংরা জল পান করতে বাধ্য হচ্ছে । যেকারণে রোগগ্রস্ত হয়ে পড়ছে তারা । এলাকার বাসিন্দারা যদি উদ্যোগী হয় তাহলে পশুপাখিদের এই সমস্যা নিরসন হত । সেই কারনে বিষয়টি এলাকাবাসীর নজরে আনতে আজ ঘুরে ঘুরে মাইকিং করে এলাম ।’
জানা গেছে,এদিন নিজের বাইকে বেশ কিছু প্লাস্টিকের পাত্র নিয়ে বেড়িয়ে পড়েন শেখ আমির । ভাতারের কয়েকটি বাজার ঘোরার পর তিনি পার্শ্ববর্তী মঙ্গলকোটে চলে যান । বাড়ির ছাদ ও উঠানে এবং দোকানের সামনে ছোট ছোট পাত্রে সর্বদা জল ভর্তি করে রাখার অনুরোধ করেন । পাশাপাশি তিনি দোকানগুলির সামনে নিজ খরচে কেনা প্লাস্টিকের একটি করে ছোট পাত্রে জল ভরেও দিয়ে আসেন । পাশাপাশি তিনি দোনদারদের অনুরোধ করেন যাতে পাত্র খালি হয়ে গেলে ফের যাতে জল ভর্তি করে দেওয়া হয় । আমির জানিয়েছেন, বৃষ্টি না হওয়া পর্যন্ত তার এই প্রচার অভিযান চলবে ।।