এইদিন ওয়েবডেস্ক,কলকাতা,২৫ এপ্রিল : পহেলগাঁওয়ে হিন্দু নরসংহারের প্রতিবাদে ফেসবুকে ভিডিও পোস্ট করার অপরাধে এক হিন্দু তরুনীকে তুলে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণের হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠল তৃণমূল ছাত্র পরিষদের এক মুসলিম নেতার বিরুদ্ধে ৷ তরুনীর কাঁদতে কাঁদতে ঘটনার বর্ণনা দেওয়া ভিডিও ভাইরাল হয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।
জানা গেছে, ওই তরুনীর নাম প্রিয়াঙ্কা দত্ত । তিনি অভিযোগ করেছেন, গত মঙ্গলবার পহেলগাঁওয়ে সন্ত্রাসী হামলার প্রতিবাদে ফেসবুকে একটা ভিডিও পোস্ট করেছিলেন । অনেকে তাকে সমর্থন করলেও এমকে মারুফ ও ‘মিষ্টি মায়ের দুষ্টু’ ছেলে নামে দুই ব্যবহারকারী তাকে অশ্রাব্য ভাষায় গালাগালি করছে । তারা সন্ত্রাসী হামলা নিয়ে সুনির্দিষ্ট যুক্তি দিতে না পেরে মেসেঞ্জারে এসে নোংরা ভাষায় মন্তব্য করছে । ধর্ষণের হুমকি দিচ্ছে৷ বলছে, ‘বাড়ি থেকে তোকে তুলে নিয়ে যাবো । তোকে এই করে দেবো সেই করে দেবো’ । এমনকি মেসেঞ্জারে কল করে ধর্ষণের হুমকি পর্যন্ত দিয়েছে৷ তাদের মধ্যে একজন বলছে সে নাকি বি এস এফ- চাকরি করে । আর অন্যজন তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সঙ্গে জড়িত৷
তরুণী বলেন, তৃণমূল ছাত্র পরিষদ কি এটাই শেখায় যে একজন মেয়েকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণের হুমকি দেবে ? আমিও তো টিএমসিপি সঙ্গে যুক্ত । মেয়েটি আরো বলেন,’পহেলগাঁওয়ে যা হচ্ছে হচ্ছে, আমি নিজের বাড়িতেই সুরক্ষিত নই ।’
এছাড়া স্থানীয় থানার পুলিশের বিরুদ্ধেও চাঞ্চল্যকর অভিযোগ করেছেন প্রিয়াঙ্কা দত্ত নামে ওই তরুনী । তিনি ফেসবুকে লিখেছেন,’কালকে রাত ১২.৩০ এ থানা থেকে দুইবার থানার ওসি সমেত আরো ৭-৮ জন অফিসার এসেছিলেন আমার বাড়িতে, তারা আমায় বাধ্য করে আমার ইচ্ছের বিরুদ্ধে ভিডিওটা ডিলিট করতে, না হলে আমার বাবা মার কোন ক্ষতি হয়ে যেতে পারে। বা মিথ্যে অভিযোেগ হয়তো ফাঁসিয়ে দেওয়া হবে । আমার বাড়ির লোকও আমার পাশে নেই না আছে কোন পুলিশ না প্রশাসন। বুঝতেই পেরেছিলাম এরকম কিছু ঘটবে। তার জন্যই ফেসবুকে পোস্টটা করেছিলাম। পুলিশ প্রশাসনের সঙ্গে আমার মতন সাধারণ বাড়ির মেয়ে পেরে উঠতে পারবে না। কালকে রাত্রে থানার দিয়ে আমার বাড়িতে আসার পর আমি একটা written FIR জমা দি, কিন্তু এখন তো আমার প্রশাসন আর পুলিশের উপর দিয়ে ভরসায় উঠে গেছে, যারা দোষ করল তারা ঘুরে বেড়াচ্ছে, আর আমি প্রতিবাদ করেছি বলে এখন আমার উপর চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছে ভয় দেখানো হচ্ছে। হয়তো এবার থানাতেও তুলে নিয়ে যাবে।’
ভিডিওটি ফেসবুকে শেয়ার করেছেন বিজেপি বিধায়িকা অগ্নিমত্রা পাল । তিনি লিখেছেন,’মাননীয়া দেখতে পাচ্ছেন আপনার শাসনে পশ্চিমবঙ্গের সনাতনীদের অবস্থা? আজ পেহেলগাঁও এর জেহাদি মৌলবাদী সন্ত্রাসবাদীদের হাতে নিহত হিন্দুদের নিধন নিয়ে সরব। সেখানে আমাদের রাজ্যের একজন বোন এই হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদ করেছেন বলে তাকে জেহাদিরা ধর্ষণের হুমকি দিচ্ছে। মাননীয়া কোথায় আপনার প্রশাসন? মোথাবাড়ী থেকে মুর্শিদাবাদ আমরা অনেক সহ্য করেছি, আর নয়। আর একজনও হিন্দু ভাই অথবা বোনদের গায়ে যদি একটা আঁচড় লাগে আমি এবং আমার দল বিজেপি কিন্ত চুপ থাকবে না। সমগ্র পশ্চিমবঙ্গ জুড়ে কিন্ত আপনাকে তীব্র প্রতিবাদের সম্মুখীন হতে হবে।’ সোশ্যাল মিডিয়ায় ছবিসহ দাবি করা হচ্ছে একজন অভিযুক্তের নাম মারুফ হোসেন এবং সে অটো মিস্ত্রি৷ দ্বিতীয় জনকে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের নেতা সাহারুল হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে । তবে তাদের ঠিকানা দেওয়া হয়নি ।।