এইদিন ওয়েবডেস্ক,তিরুপতি,২৪ সেপ্টেম্বর : অন্ধ্রপ্রদেশের তিরুপতি বালাজি মন্দিরের প্রসাদি লাড্ডু গরু-শুয়রের চর্বি ও মাছের তেল দিয়ে তৈরি করা হত বলে অভিযোগ উঠেছে । এই ইস্যুতে উত্তপ্ত অন্ধ্রপ্রদেশের রাজনীতি । ক্ষমতাসীন দল ও বিরোধী দল একে অপরকে দোষারোপ করছে। বিষয়টির গুরুত্ব বিবেচনা করে তদন্তের জন্য সিট ( SIT) গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রবাবু নাইডু । এরই মধ্যে তিরুপতি বালাজি মন্দিরে দেশি ঘি সরবরাহকারী সংস্থাটি ‘পাকিস্তান’ বলে দাবি করা হচ্ছে । ‘এআর ফুড প্রাইভেট লিমিটেড’ নামের একটি কোম্পানি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আলোচনা চলছে। দাবি করা হচ্ছে যে ওই কোম্পানি পাকিস্তানের । শৌর্য মিশ্র নামে এক ব্যবহারকারী সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্স-এ কোম্পানির পরিচালকদের নাম উল্লেখ করে লিখেছেন,’তিরুপতি বালাজিতে দেশি ঘি সরবরাহকারী সংস্থার পরিচালকদের নাম নিচে দেওয়া হল৷ নাম থেকেই তাদের অপকর্ম অনুমান করা যায়।’ তার উল্লিখিত নামগুলি হল : এস এম নাসীম (এ আর ফুডস-এর চিফ এক্সিকিউটিভ), মহম্মদ নাসীম(চিফ এক্সিকিউটিভ), মহম্মদ নওমান,রাহিল রেহমান,লিওনিদাস শেখ ।
এদিকে অন্ধ্রপ্রদেশের উপ মুখ্যমন্ত্রী পবন কল্যাণের বড় বক্তব্য সামনে এসেছে । তিনি রাজ্যের হিন্দুদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন, চুপ করে বসে থাকবেন না, ঘর থেকে বের হয়ে প্রতিবাদ করুন! সনাতন ধর্মের অনুসারীদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে প্রতিবাদ করতে হবে । মসজিদ নিয়ে যদি এমন হতো তাহলে এতক্ষণে দেশে দাঙ্গা ছড়িয়ে পড়ত। জাতীয় স্তরে সনাতন ধর্ম রক্ষা বোর্ড গঠন করার সময় এসেছে । এখন গোটা হিন্দু সমাজের উচিত ঐক্যবদ্ধ হয়ে তিরুপতি মন্দিরের লাড্ডু বিতর্কের বিরোধিতা করা।’
যদিও গত ২২ সেপ্টেম্বর ‘ ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস ‘ ওয়েবসাইটে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে তিরুপতি বালাজি মন্দিরে ঘি সরবরাহকারী সংস্থার নাম ‘এআর ডেয়েরি ফুডস’ । প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তিরুমালা তিরুপতি দেবস্থানম (টিটিডি) মন্দিরের লাড্ডুর জন্য ভেজাল ঘি সরবরাহ করা হয়েছে বলে প্রকাশ্যে আসার পরে কোম্পানির বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিতে চলেছে। প্রতিবেদনে প্রতিষ্ঠানটির মান নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা কাননের বক্তব্যও প্রকাশ করা হয়েছে। তিনি এসব অভিযোগকে ভিত্তিহীন বলেছেন।
তবে প্রফেসর সুধাংশুর একটা পোস্টে লিখেছেন, ‘তিরুপতি বালাজিকে দেশি ঘি সরবরাহকারী তামিলনাড়ু কোম্পানির শীর্ষ ব্যবস্থাপনায় নিম্নলিখিত নামগুলি থাকতে পারে: ১) এ.রফিক (সিইও), ২)মোহাম্মদ সেলিম (ব্যবস্থাপনা পরিচালক),৩)আব্দুল রেহমান (চীফ অপারেশন অফিসার),৪) ফয়সাল আহমেদ (সাপ্লাই চেইন প্রধান) । এ থেকে অনুমান করা যায় কিভাবে হিন্দু ধর্মীয় উপাসনালয় দিয়েও এই লোকেরা তাদের ব্যবসার শিকড় মজবুত করছে।’
ইতিমধ্যে বিতর্কে থাকা ‘এআর ডেয়েরি ফুডস’ কী ধরনের উপাদান ব্যবহার করে জানতে নমুনা সংগ্রহ করেছে ফুড সেফটি অ্যান্ড স্ট্যান্ডার্ডস অথরিটি অফ ইন্ডিয়া (এফএসএসএআই) । ফুড সেফটি অ্যান্ড স্ট্যান্ডার্ডস অথরিটি অফ ইন্ডিয়া-র একজন আধিকারিক এআর ডেয়ারিতে গিয়ে ২ ঘন্টারও বেশি সময় ধরে পরিদর্শন করেন। এরপর পরীক্ষার জন্য দুধ, ঘি, পনির, মাখন, দই, বাটার মিল্ক এবং মিষ্টির নমুনা সংগ্রহ করেছেন ৷
অন্যদিকে, তামিলনাড়ু বিজেপির সম্পাদক বিনোজ পি সেলভাম এক্স হ্যান্ডেলে পোস্ট করেন,’এআর ডেয়ারি কোম্পানি পালানি মুরুগান মন্দিরেও ঘি সরবরাহ করছে ৷ সেই কোম্পানির প্রধান রাজাশেখরণ পালানি মন্দিরের ব্যবস্থাপনা কমিটির চেয়ারম্যান হিসেবেও কাজ করছেন ! তামিলনাড়ু সরকারের উচিত তাঁকে অপসারণ করে পদক্ষেপ নেওয়া।’ যদিও মিথ্যা তথ্য ছড়ানোর জন্য পালানি মন্দির প্রশাসনের তরফে পালানি আদিভারম থানায় বিনোজ পি সেলভাম এবং সেলভাকুমার নামে আরেকজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।।