এইদিন ওয়েবডেস্ক,কেতুগ্রাম(পূর্ব বর্ধমান),২৯ মার্চ : ছেলের বাইকে চড়ে ডাক্তার দেখাতে যাওয়া অসুস্থ বধূকে(৩৭) ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগ উঠল এলাকারই ৩ যুবকের বিরুদ্ধে । বাধা দিলে তাকে ব্যাপক মারধর করা হয় বলে অভিযোগ । শুধু তাইই নয়,মাকে বাঁচাতে যাওয়া বধূর ছেলেকে(২৩) অন্য তিন যুবক মিলে নির্মমভাবে পেটায় । ছেলের কাছ থেকে ফোনে খবর পেয়ে বধূর আংশিক প্রতিবন্ধী স্বামী ঘটনাস্থলে ছুটে এলে তাকেও নিস্তার দেয়নি দুর্বৃত্তদের ওই দলটি । এই চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে শুক্রবার রাত আটটা নাগাদ পূর্ব বর্ধমান জেলার কেতুগ্রাম থানার চর সুজাপুর ও নদিয়ার কালীগঞ্জ বাজারের মধ্যবর্তী এলালায় ফাঁকা মাঠে । চর সুজাপুর এলাকার বাসিন্দা ওই গৃহবধূ বর্তমানে কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন । হাসপাতালের বেডে শুয়ে তিনি জানান যে তাকে ধর্ষণের চেষ্টা করা ৩ যুবক তাদের গ্রামেরই বাসিন্দা । তিনি জানান, তারা হল-মফি, মহিবুল এবং আলাই শেখ ।
এদিকে ঘটনার পর প্রথমে তিনি কালীগঞ্জ থানায় অভিযোগ দায়ের করতে যান । কিন্তু ঘটনাস্থল কালীগঞ্জ থানার অন্তর্গত নয় বলে তাদের ফিরিয়ে দেওয়া হয় বলে জানান বধূ । শেষ পর্যন্ত চরসুজাপুর পুলিশ ক্যাম্পে এসে অভিযোগ জানান । যদিও এদিন দুপুর পর্যন্ত এফআইআর দায়ের হয়নি বলে খবর । এদিকে এতবড় একটা ঘটনায় পুলিশের এই প্রকার গাছাড়া মানসিকতায় প্রশ্ন উঠছে । যদিও কাটোয়া মহকুমা পুলিশ আধিকারিক কাশীনাথ মিস্ত্রি জানান, এক মহিলা পুলিশ অফিসারকে চিকিৎসাধীন মহিলার বক্তব্য শোনার জন্য পাঠানো হয়েছে । চিকিৎসাধীন মহিলা অভিযোগ দায়ের করলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে ।
প্রসঙ্গত,ভাগীরথী নদীর অপর পাড়ে নদিয়া জেলার সীমান্ত এলাকায় চর সুজাপুরসহ তিন চারটি গ্রাম পূর্ব বর্ধমান জেলার কেতুগ্রাম থানা এলাকার মধ্যে পড়ে । চর সুজাপুরের ওই মহিলা জানিয়েছেন তিনি উচ্চ রক্তচাপ জনিত সমস্যায় ভুগছেন। শুক্রবার রাতে তার শারিরীক সমস্যা হলে ছেলের বাইকে চড়ে কালীগঞ্জ বাজারে ডাক্তার দেখাতে যাচ্ছিলেন । কিন্তু কালীগঞ্জ বাজারে কাছে ফাঁকা মাঠে আসতেই তিনটি বাইকে ছয় জন এসে তাদের পথ আটকায় । এরপর মফি, মহিবুল এবং আলাই শেখ মিলে তাকে টেনে নিয়ে গিয়ে গনধর্ষণের চেষ্টা করে তিনি প্রতিরোধ করলে তারা তাকে ব্যাপক মারধর করে । ছেলে বাঁচাতে এলে বাকি তিনজন তাকে অন্যদিকে নিয়ে গিয়ে ব্যাপক পেটায় । তারই মধ্যে তার স্বামীকে কোনো রকমে ফোন করে আসতে বলে ছেলে । খবর পেয়ে তার প্রতিবন্ধী স্বামী ছুটে এলে তাকেও মারধর করা হয় । এরপর তিনি, তার স্বামী ও ছেলে সাহায্যের জন্য সমবেতভাবে চিৎকার করলে ওই ৬ যুবক বাইকে চড়ে পালিয়ে যায় ।
জানা গেছে,একদিকে তিন যুবকের এই প্রকার পাশবিক আচরণ, পাশাপাশি অন্যদিকে অভিযোগ দায়ের করা নিয়ে দুই থানার টানাপোড়েনের ধকলের কারনে গভীর রাতের দিকে বাড়ি ফিরে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন ওই বধূ । তাকে দ্রুত কাটোয়া হাসপাতালে ভর্তি করা হয় । এখনো হাসপাতালে চিকিৎসাধীন তিনি । শুক্রবার রাতের সেই ভয়ঙ্কর ঘটনার কথা এখনো ভুলতে পারছেন না ওই বধূ ।।