প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়,বর্ধমান,০১ মার্চ : বিশ্ব জুড়ে সমাদর পেয়েছে বাংলায় হওয়া থিম ভাবনায় দেবী দুর্গার পুজো আরাধনা । থিমের পুজো আয়োজনে জায়গা করে নেওয়া থেকে পিছিয়ে থাকননি দেবী কালী মাতাও । তিনিও অনেকদিন আগেই বাঙালির থিম ভাবনার পুজো আরাধনায় জায়গা করেননি । কিন্তু দেবাদিদেব হয়েও বাবা মহাদেব অর্থাৎ শিব এই ক্ষেত্রে যেন ব্রাত্যই রয়ে গিয়েছিলেন । তাই মঙ্গলবার শিবরাত্রির দিনে হিন্দু ধর্মের সর্বোচ্চ আরাধ্য দেবাদিদেবকে থিম ভাবনার পুজোয় স্থান করে দিলেন পূর্ব বর্ধমানের জামালপুরের একদল শিব ভক্ত । তাঁরাই এক তরুণ মৃৎশিল্পীর থিম ভাবনা অনুযায়ী তৈরি করিয়েছেন বিশালাকার ও সুন্দর একটি শিব মূর্তি । সেই মূর্তির সঙ্গে মানানসই করেই তৈরি হয়েছে মণ্ডপ ও আলোকসজ্জা । থিম ভাবনায় দেবাদিবের পুজো আরাধনা সন্ধ্যায় চাক্ষুষ করে দর্শনার্থীরাও অভিভূত হন ।
জামালপুর থানার সন্নিকটে রাধাবল্লববাটি এলাকার রয়েছে গোলাবাড়ি নামে পরিচিত একটি পাড়া ।সেখানকার একদল যুবক প্রতিবছর কার্তিক মাসে কালী পুজোর আয়োজন করে থাকে । তাঁরাই এইবছর শিবরাত্রির দিন থিম ভাবনায় প্রতিমা ও মণ্ডপ তৈরি করে দেবাদিদেবের পুজো আয়োজনের ব্যাপারে মনস্থির করেন । সেই ভাবনা অনুযায়ী মাস দুই আগে থেকে দেবাদিদেব মহাদেবের
থিমের মূর্তি তৈরির কাজ শুরু করে দেন এলাকার তরুণ মৃৎশিল্পী প্রসেনজিৎ দাস ওরফে অভি । সোমবার তিনি প্রতিমার তৈরির কাজ শেষ করেন ।তারই মধ্যে ডেকরেটার শিল্পীরা প্রতিমার সঙ্গে মানানসই করে মণ্ডপ ও আলোকসজ্জার কাজও শেষ করে ফেলেন ।
এদিন মহা ধূমধাম করে হয় সেই দেবাদিদেবের মূর্তিরই পুজার্চনা ।
প্রতিমা শিল্পী প্রসেনজিৎ দাস জানান ,তিনি তাঁর দুই গুর পিরু দে ও আশিস পালের কাছে প্রতিমা তৈরির কাজ শেখেন।তার পর গুরুদের হাত ধরেই থিমের আদলে দুর্গা ,কালী ,সরস্বতী ও লক্ষ্মী মাতার প্রতিমা তৈরির কাজ করেছেন ।কিন্তু থিম ভাবনার অঙ্গিকে দেবাদিদেব মহাদেবের প্রতিমা তৈরির কাজ করেন নি । তা নিয়ে একটা আক্ষেপ রয়েই গিয়েছিল।তাই গোলাবাড়ি এলাকার শিব ভক্ত যুবকরা এবছর তাঁকে থিম ভাবনার আঙ্গিকে শিবের প্রতিমা তৈরি করে দেবার প্রস্তাব দিতেই তিনি তা লুফে নেন । প্রসেনজিৎ বলেন ,তিনি নিজের হাতে থিম ভাবনার আদলে যে শিব প্রতিমা তৈরি করেছেন তা দেখতে এদিন বহু দর্শনাথী মণ্ডপে ভিড় করেন । দেবাদিদেবকেও থিমের পুজোর স্থান করে দিতে পেরে গর্বিত বোধ করছেন বলে প্রসেনজিৎ দাস এদিন মন্তব্য করেন ।
পুজো আয়োজকদের পক্ষে পিন্টু রাউত ও
দেবাশিষ ভট্টাচর্য্য বলেন,’থিম ভাবনায় হওয়া বাংলায় দুর্গা পুজো বিশ্বজোড়া স্বীকৃতি পেয়েছে ।দেবী কালী মাতার পুজোতেও বহু দিন আগে থিমের ছোঁয়া লেগে গিয়েছে । কিন্তু দেবাদিদেব মহাদেবের পুজো থিম ভাবনায় সাজিয়ে করার ব্যাপারে কেউ আগ্রহ দেখাচ্ছিলেন না । তাই থিম ভাবনার পুজো আয়োজনে দেবাদিদেবকে স্থান করে দিতে পেরে তাঁরা সবাই গর্বিত বোধ করছেন ।’
দর্শনার্থী রাখি হাজরা বলেন ,’থিমের পুজো আয়োজনে এবার দেবাদিদেব মহাদেবও জায়গা করে নিলেন । তাই গোলাবাড়ি পাড়ার শিব পুজো সবার নজর কেড়েছে ।’।