প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়,বর্ধমান,০৩ এপ্রিল : বিদেশের মাটিতে আবারও ভারতের তেরঙ্গা জয় ধ্বজা উড়ালেন বাংলার জলকন্যা সায়নী দাস । রটনেষ্ট,ক্যাটালিনা, ইংলিশ চ্যানেল ও মালোকাই চ্যানেল জয়ের ইতিহাস সৃষ্টিয় পর মঙ্গলবার সায়নী সপ্তসিন্ধুর আর এক সিন্ধু নিউজিল্যাণ্ডের কুক স্ট্রেইট চ্যানেল জয় করলেন।তারই ফলশ্রুতিতে বাংলার মেয়ে সায়নী আজ বিশ্ববন্দিতা।তাই তাঁর এই সাফল্যে খুশি গোটা বাংলা।একই ভাবে উল্লশিত সায়নীর বাবা মা এবং শুভানুধ্যায়ীরা।
এই বঙ্গের পূর্ব বর্ধমান জেলার কালনা পৌর এলাকার বারুইপাড়ায় বাড়ি সায়নী দাসে । তাঁর বাবা রাধেশ্যাম দাস অবসরপ্রাপ্ত স্কুল শিক্ষক। মারুপালীদেবী সাধারণ গৃহবধূ। বাবা রাধেশ্যাম দাসের হাত ধরে সায়নীর সাঁতারে হাতেখড়ি হয় । তার পর থেকে কঠিন অনুশীলনের মধ্যদিয়ে সায়নী নিজেকে কার্যত জলকন্যা বানিয়ে ফেলেন । তার পর থেকে তিনি হাওয়ার গতীবেগ ,জলের স্রোত এবং দীর্ঘ সময় সাঁতার কেটে এগিয়ে চলার যোগ্য হিসাবে নিজেকে তৈরি করেন । সেই যোগ্যতাকে কাজে লাগিয়ে বঙ্গতনয়া সায়নী রটনেষ্ট ও ক্যাটলিনা চ্যানেল জয়ের পর ২০১৭ ইংলিশ চ্যানেল জয়ের করেন।এরপর ২০২২ সালে তিনি মার্কিন মুলুকের মালোকাই চ্যানেল জয় করে ইতিহাস সৃষ্টি করেন।শুধু ভারত নয়,এশিয়া মহাদেশের মহিলা সাঁতারু হিসাবেও সায়নী প্রথম মালোকাই চ্যানেল জয়ের নজির সৃষ্টি করেন।আর মঙ্গলবার তিনি সপ্তসিন্ধুর আর এক সিন্ধু নিউজিল্যাণ্ডের কুক স্ট্রেইট চ্যানেল জয় করলেন। বাকি আর রয়েছে নর্থ চ্যানেল,সুগারু ও জিব্রাল্টার প্রণালী জয়। সেই জয় পেলেই তাঁর মাথায় উঠবে ওশেন সেভেন চ্যালেঞ্জের মুকুট।
রাধেশ্যাম দাস জানিয়েছেন,এদিন নিউজিল্যাণ্ডের সময় অনুযায়ী সকাল ৮ টা ২২ মিনিটে আকাশ ভেঙে বৃষ্টি পড়ছিল । তারই মধ্যে কুক স্ট্রেইটের ১৩ ডিগ্রী তাপমাত্রার ঠান্ডা কনকনে জলে নামে সায়নী।কুকপ্রণালীর ওয়েলিংটন থেকে শুরু হয় সায়নীর সাঁতার কাটা ।প্রবল ঢেউ এবং তার সাথে ঝোড়ো হাওয়া থাকায় সায়নী সোজাপথে এগিয়ে যেতে পারেন না। তাই অনেকটা পথ বেশী সাঁতরে অতিক্রম করে তবেই তিনি আরাপাওয়া পর্যন্ত পৌছানোর সাফল্যলাভ করেন।
এই জয়ের পথে সায়নীকে জেলিফিসের মত সামুদ্রিক প্রাণীর সাথেও লড়াই চালাতে হয়। রাধেশ্যামবাবু বলেন, জেলিফিস আমার মেয়েকে দমিয়ে রাখতে পারেনি। সব প্রতিকূলতাকে কাটিয়ে ১১ ঘন্টা ৫১ মিনিটে ২৯,৫ কিলোমিটার দুর্গম জলপথ অতিক্রম করে সায়নী কুক প্রণালী জয় করেছে।জয়ের পর সেখানেই ভারতের তেরঙ্গা জাতীয় পতাকা উড়িয়ে জয় সেলিব্রেট করে সায়নী। ১০ এপ্রিল রাতে কলকাতা বিমানবন্দরে নামবে সায়নী । সেখান থেকে সায়নী বাড়ি ফিরলে তাকে নিয়ে জয় সেলিব্রেট করার প্রতুতি এদিন থেকে শুরু করে দিয়েছেন কালনার ক্রীড়া প্রেমীরা । তাঁদের কথাতেই জানাগেল, পশ্চিমবঙ্গ সরকার আগেই ’খেলশ্রী’ সন্মানে ভূষিত করেছে সায়নীকে। এছাড়াও “মাদার টেরিজা ইন্টারন্যাশনাল অ্যাওয়ার্ড“ সায়নী পেয়ে গিয়েছেন ।।