এইদিন ওয়েবডেস্ক,নদীয়া,৩১ আগস্ট : বিতর্ক আর কৃষ্ণনগরের তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মিত্র কার্যত সমার্থক হয়ে গেছে । নিজের এলাকায় প্রচারে গিয়ে বৈষ্ণব সম্প্রদায় সম্পর্কে বিতর্কিত মন্তব্য করেছেন তিনি । বিজেপিকে ভোট দেওয়ার জন্য নমঃশূদ্র, মতুয়া বুথের বাসিন্দাদের উদ্দেশ্যে মহুয়া বলেছেন, “কাঠের মালা পড়ে সব তো চলে আসেন ভাতা নিতে । আর ১০০ টা ভোটের মধ্যে ৮৫ টা বিজেপি এবং ১৫ টা অন্যান্যরা পায় । বাপরে বাপরে বাপ ।’ তৃণমূল সাংসদের ওই বক্তব্যের ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করেছেন বিজেপি নেত্রী লকেট চ্যাটার্জি ৷ তিনি মহুয়া মৈত্রের এই মন্তব্যকে “আপত্তিকর ও লজ্জাজনক” বলে আখ্যা দিয়েছেন ।
ওই ভিডিওতে কৃষ্ণনগরের তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্রকে বলতে শোনা গেছে,’সারা বছর তৃণমূলের আর ভোটের সময় সনাতনী ! এটা কি অংক ভাই ? লক্ষীর ভান্ডারে আমরা হাজার টাকা করে পেলে এক একটা এসসি বুথে বারোশো টাকা করে পায় । প্রত্যেকটা নমঃশূদ্র, মতুয়া বুথে ১০০ টা ভোটের মধ্যে ৮৫ টা বিজেপি এবং ১৫ টা অন্যান্যরা পায় । বাপরে বাপরে বাপ ।’ তিনি বলেন,’কাজের সময় মমতা, রাস্তার সময় মমতা, কাঠের মালা পড়ে সব তো চলে আসেন ভাতা নিতে । তখন কি হয় ? বাস্তব কথা বলছি আমি, শুনতে খারাপ লাগে । আমি যখন কথা বলে তখন সেগুলো খুব পিড়ি বিড়ি হয়,আমার কিছু যায় আসে না । সত্যি কথা বলছি কি না ? তাহলে ?
স্বাস্থ্য সাথীর সময় মমতা । প্রত্যেকটা পাড়ায় স্বাস্থ্য সাথী কার্ড আছে। প্রতিটা বাড়িতে লক্ষীর ভান্ডার তিনটে করে ঢুকছে । আর ভোটের সময়?’
তারাই মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে লকেট চ্যাটার্জি লিখেছেন, ২৮শে আগস্ট করিমপুর ব্লক–২-এ তৃণমূল কংগ্রেসের কর্মী সভায় দলের সাংসদ মহুয়া মৈত্র সনাতনী হিন্দু সমাজ, বিশেষত নমশূদ্র সম্প্রদায়কে উদ্দেশ্য করে একাধিক আপত্তিকর ও লজ্জাজনক মন্তব্য করেন। তিনি কটাক্ষ করে বলেন — “সারা বছর তৃণমূলী, আর ভোটের সময় সনাতনী?” অর্থাৎ, তাঁর বক্তব্য অনুযায়ী হিন্দু পরিচয় ও তৃণমূল সমর্থন একসাথে চলতে পারে না।
মহুয়া মৈত্র শুধু এসসি, নমশূদ্র ও মতুয়া সমাজকে অপমানই করেননি, বরং এমন ভঙ্গিতে কথা বলেছেন যেন সরকারি অর্থ তৃণমূল কংগ্রেসের ব্যক্তিগত সম্পত্তি। বিজেপিকে বিপুল ভোট দেওয়ার জন্য তিনি এই সমাজগুলিকে প্রকাশ্যে উপহাস করেছেন। তিনি আরও এগিয়ে বৈষ্ণব সম্প্রদায়ের আধ্যাত্মিক প্রতীক ও ভক্তির চিহ্ন কান্থি মালা নিয়েও তীব্র বিদ্রূপ করে বলেন — “কাঠের মালা গলায় দিয়ে এসে তোমরা অনুদান নাও!”
লকেট চ্যাটার্জি আরও লিখেছেন,’এ ধরনের বক্তব্য স্পষ্টতই হিন্দু-বিরোধী ও জাতিবিদ্বেষী ঘৃণাত্মক প্রচার। এটি শুধু সনাতনী সমাজের বিশ্বাসকেই আঘাত করেনি, বরং এসসি, নমশূদ্র ও মতুয়া সম্প্রদায়ের সম্মানকেও অপমানিত করেছে।বিজেপি সবসময়ই নমশূদ্র, এসসি ও মতুয়া সমাজের পাশে থেকেছে। তাই এখন সময় এসেছে এই সমাজগুলির ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিবাদে নামার, মহুয়া মৈত্রর অবিলম্বে পদত্যাগ দাবি করার এবং বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তোলার। এসসি-এসটি ও হিন্দু সমাজকে অপমান করার জন্য তাঁকে আইনের কাঠগড়ায় দাঁড়াতেই হবে।’ যদিও ভিডিওর সত্যতা এইদিন যাচাই করেনি ।।