“লাভ জিহাদ” থেকে হিন্দু মেয়েদের উদ্ধার থেকে শুরু করে দরিদ্র অসহায় হিন্দুদের পাশে নিঃস্বার্থ ভাবে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেওয়ার বিষয়ে যে বিজেপি নেতা সর্বাগ্রে এগিয়ে আসেন, তিনি হলেন কলকাতার বিজেপি নেতা দেবদত্ত মাঝি (Devdutta Majhi) । বিগত বিধানসভা নির্বাচনে তিনি বিজেপির টিকিটে কলকাতা চৌরঙ্গী বিধানসভা কেন্দ্র থেকে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করেছিলেন । কিন্তু তিনি পরাজিত হন । তবে হিন্দুদের দিকে সাহায্যের হাত বাড়াতে তিনি তাঁর পার্টির উপর নির্ভর করেন না । “সিংহবাহিনী” নামে তাঁর একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন আছে,সেই সংগঠনের স্বেচ্ছাসেবকদের নিয়ে তিনি এই কর্মকাণ্ড চালান । এযাবৎ তিনি বহু হিন্দু মেয়েকে লাভ জিহাদিদের কবল থেকে তিনি উদ্ধার করে মূলস্রোতে ফিরিয়ে এনেছেন । মধ্যবয়সী এই অকুতোভয় বিজেপির দোর্দণ্ড প্রতাপে রাজ্যও পুলিশ সর্বদা তটস্থ থাকে । দেবদত্ত মাঝির কোনো কোনো গুনমুগ্ধ তাঁকে “বেঙ্গল টাইগার” উপাধিতে ভূষিত করেছেন।
এই বিজেপি নেতা দেবদত্ত মাঝির একটা ভিডিও ভাইরাল হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায় । এক পুলিশ আধিকারিকের সঙ্গে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়ের সময় দেবদত্ত মাঝি তাকে বলেন,”এই চটিচাটা পুলিশ, চুপ” । এরপর ওই পুলিশকর্মী তাঁকে “এখানে অন্ধকার, লাইটে আসুন” বলে চলে যান । ভিডিওটি সুধানিধি বন্দ্যোপাধ্যায় এক্স-এ শেয়ার করেছেন। তিনি লিখেছেন,’এই হলো বেঙ্গল টাইগার দেবদত্ত মাঝি (Devdutta Majhi)। বিজেপিতে তার মতো আরও উগ্র হিন্দুত্ববাদী নেতার প্রয়োজন যারা কোনও কিছুর ভয়ে পিছপা হন না। তার সাকরাইল রাম নবমীর সমাবেশগুলি অত্যন্ত বিখ্যাত। পছন্দ করুন বা না করুন, কেবল তার মতো লোকেরাই মৌলবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করতে পারে।’
কিন্তু কেন এত উত্তেজিত হয়ে পড়লেন দেবদত্ত মাঝি? এর কারন তিনি নিজেই এক্স-এ ব্যাখ্যা করেছেন । গত ৭ ডিসেম্বর এক্স-এ পুলিশের সঙ্গে বাকবিতন্ডার ভিডিওটি শেয়ার করে তিনি লিখেছেন, ‘আজ আমি উদয়নারায়ণপুরে গিয়েছিলাম দরিদ্র তফসিলি জাতি হিন্দুদের (জিহাদি ও তৃণমূল কংগ্রেসের গুন্ডাদের দ্বারা নির্যাতিত) সাথে দেখা করতে। ৫/১২/২৫ তারিখে, বিজেপির একটি রাস্তার কোণার সভার অজুহাতে, উদয়নারায়ণপুরের তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়ক সমীর পাঁজা এবং তার জিহাদিরা পেনরো থানার কানপুর অঞ্চলের মানিকুড়া গ্রামে একটি হিন্দু মন্দির এবং ক্লাব ভাঙচুর ও লুটপাট করে। তারা স্থানীয় হিন্দু মহিলাদের (যাদের বেশিরভাগই তফসিলি জাতির) শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করে এবং তাদের ব্লাউজ ছিঁড়ে ফেলে।’
তিনি লিখেছেন,৫/১২/২৫ তারিখে মানিকুড়া গ্রামে সংঘটিত এই রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের ফলে, ৫ নম্বর মণ্ডলের বিজেপি সভাপতি অভিজিৎ চক্রবর্তী সহ ২৩ জনকে জামিন অযোগ্য ধারায় মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয়েছে। তাছাড়া, ৫ নম্বর মণ্ডলের সাধারণ সম্পাদক বিপ্লব হাজরা, বিজেপি কর্মী অজয় দলুই এবং ষষ্ঠী হাম্বিরকে বেআইনিভাবে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পেনরো থানার ওসি সপ্তর্ষি রফি বিধায়ক সমীর পাঁজার নির্দেশে এই অবৈধ কাজগুলি করেছেন। আজ, যখন আমি নির্যাতিত হিন্দুদের সাথে দেখা করতে সেখানে গিয়েছিলাম, তখন মমতার পুলিশের এই চোরচোষারা আমাকে বাধা দেয়। আমি ভুক্তভোগীদের সম্ভাব্য সকল সহায়তার আশ্বাস দিয়েছি এবং তাদের কিছু আর্থিক সহায়তা প্রদান করেছি।’
উল্লেখ্য,রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের (আরএসএস) মুখপত্র অর্গানাইজ উইকলির অনলাইন এডিশনে দেবদত্ত মাঝি ও তার স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন “সিংহবাহিনী” র ভুয়সী প্রশংসা করে একটি প্রতিবেদন ছাপা হয়েছে গত ৪ ডিসেম্বর । যেখানে লাভ জিহাদে ফেঁসে যাওয়া বেশ কিছু হিন্দু মেয়েকে উদ্ধারের বিবরণ দেওয়া হয়েছে । এছাড়া কোনো কারনে ধর্মান্তরিত হওয়াদের ফের মূল ধর্মে ফিরিয়ে নিয়ে আসা এবং দরিদ্র নিপীড়িত হিন্দুদের পাশে দাঁড়ানোর বেশ কিছু ঘটনার কথা উল্লেখ করা হয়েছে । সংবাদমাধ্যমটি দেবদত্ত মাঝির প্রশংসা করে লিখেছে,তিনি অনায়াসে পশ্চিমবঙ্গের সবচেয়ে দরিদ্র হিন্দুদের সাথে যোগাযোগ স্থাপন করেন, তাঁর কাজকর্ম তাঁর কথার চেয়েও বেশি জোরে কথা বলে। তাঁর টুইটার কার্যকলাপ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং রাজ্যের অন্যান্য বিশিষ্ট রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদের প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে। রাজনৈতিক প্রচেষ্টার বাইরেও, দেবদত্ত মাজি সামাজিক উন্নয়নমূলক প্রকল্পগুলিতে সক্রিয়ভাবে জড়িত। ন্যায়বিচারের প্রতি তাঁর নিরলস সাধনা এবং হিন্দুদের প্রতি অটল নিষ্ঠা তাঁকে ‘বাহুবলী’ উপাধিতে ভূষিত করেছে, যা ধর্ম ও সনাতন নীতি রক্ষায় তাঁর সাহস এবং অবিচলতার প্রতি সম্মান প্রদর্শন ।।
