এইদিন ওয়েবডেস্ক,পূর্ব মেদিনীপুর,২৭ আগস্ট : নিজের নির্বাচনী এলাকা পূর্ব মেদিনীপুরের নন্দীগ্রামে মহিলাদের পরিচালিত পুজোয় অংশগ্রহণ করে এলাকাবাসীদের সতর্ক করে বিরোধী দলনেতার শুভেন্দু অধিকারী বলেছেন,’হিন্দুদের ভাষা এবং জাত পাতের ভিত্তিতে ভাগ করার চেষ্টা চলছে ।’ প্রসঙ্গত, রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস এবং তার পেটোয়া কিছু গোষ্ঠী বাঙালি অস্মিতা রক্ষার নামে কথিত আন্দোলন শুরু করেছে । তৃণমূল পন্থী একটি গোষ্ঠী হিন্দি ভাষীদের প্রতিনিয়ত নিশানা করে যাচ্ছে । তবে শুভেন্দু অধিকারী কোন রাজনৈতিক দল বা গোষ্ঠীর নাম করেননি আজ ।
নন্দীগ্রামের মহিলা কমিটি পরিচালিত গণপতি সংঘের গণেশ চতুর্থ এবারের তৃতীয়বর্ষে পদার্পণ করল ৷ আজ বিকালে পুজো মন্ডপে গিয়ে ভগবান শ্রী গনেশ এবং দেবী সরস্বতীর পাদদেশ ফুল অর্পণ করেন শুভেন্দু অধিকারী । পরে মন্ডপের সামনে বাঁধা মঞ্চে সংক্ষিপ্ত ভাষণে তিনি বলেন, ‘কেউ বা কারা হিন্দুদের ভাগ করতে চায়৷ জাতের নামে, ভাষার নামে । কেউ হিন্দি বলেন, কেউ গুজরাঠি বলেন, কেউ উড়িয়া, তামিল,তেলেগু প্রভৃতি অনেক ভাষায় কথা বলেন । আমরা বাংলায় কথা বলি, মিষ্টি ভাষা৷ সবচেয়ে দ্বিতীয় বেশি কথা বলা ভাষা বাংলা । কিন্তু আমরা যেন নিজেকে হিন্দুস্তানি, সনাতনী,ভারত মাতার সন্তান এটা বলতে পারি । সাথে সাথে আমাদের মধ্যে ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রিয়, বৈশ্য, শূদ্র আছে । নিশ্চয়ই আমরা আমাদের জাতকে তুলে দিতে বলবো না । কিন্তু আমরা সবাই ওম, স্বস্তিক লেখা ও বজরংবলীর গেরুয়া ধ্বজের নিচে এক । মহাদেবের শঙ্খ ত্রিশুলের নিচে আমরা নিজেদের সনাতনি বলি।’
তিনি বলেন, ‘সনাতন ধর্ম আজকের নয়, সবচেয়ে প্রাচীন । কত হাজার বছরের ঐতিহ্য এটা কেউ বলতে পারবে না৷ আমরা বেদ, উপনিষদ, শ্রীমদ্ভাগবত গীতা পড়ার মধ্যে দিয়ে জেনেছি এবং পালন করার চেষ্টা করি। সকলকেই একটা কথা বলবো মান-অভিমান থাকবে, পাওয়া না পাওয়ার যন্ত্রনা থাকবে , কিন্তু দিনের শেষে আমরা সকলে হিন্দুস্থানী । শ্রীমৎ ভগবত গীতায় একটা বানী আছে : “ধর্মরক্ষতি রক্ষিত” । ধর্ম রক্ষা করার কাজটা যেন আমরা সবাই করি । আমরা যেন নিজের ধর্মের জন্য কারো সাথে সমঝোতা না করি । এবং নিজের ধর্মের সঙ্গে কখনো যেন বিশ্বাসঘাতকতা না করি । এটাই আমাদের গণপতি দেবের কাছে সবচেয়ে বড় প্রার্থনা থাকবে।’
তিনি এলাকার হিন্দুদের কাছে আবেদন জানিয়ে বলেছেন, ‘আমাদের প্রত্যেকটি বাড়িতে তুলসী মাতার মঞ্চ থাকা উচিত । পূর্ণিমা, অমাবস্যা, একাদশী, দামোদর মাস পালন করা উচিত৷ শ্রাবণ মাসে মহাদেবের মাথায় জল ঢালা উচিত । অষ্টমীর দিন দুর্গা দেবীর কাছে আমাদের পুষ্পাঞ্জলি দেওয়া উচিত। শরীর পারমিট করলে কালীপুজোর দিন রাত্রি জেগে অঞ্জলি দেওয়া উচিত । বিদ্যার দেবী সরস্বতী পূজায় যত বেশি আমরা করব ততো আমাদের জ্ঞান বাড়বে ।’ সবশেষে তিনি, ‘না জাগিলে ললনা এ বিশ্ব জাগে না’ বলে আসুরিক শক্তি ধ্বংসের ক্ষমতা দেওয়ার জন্য ভগবান শ্রী গনেশের কাছে প্রার্থনা করেন ।
উল্লেখ্য, তিন বছর আগে নন্দীগ্রামে ‘গণপতি সংঘ মহিলা কমিটি’ গঠন করে গণেশ চতুর্থী উদযাপন শুরু হয়৷ প্রথম দিকে স্বল্প পরিসরে পুজো করা হয়েছিল । ক্রমশ সেই পুজোর পরিধি আরো বেড়েছে ৷ মহিলাদের সংগঠন হলেও ধীরে ধীরে প্রাক্তন সেনা কর্মী থেকে শুরু করে হিন্দুত্ববাদী মানসিকতার ব্যক্তিরা যোগ দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন শুভেন্দু অধিকারী ।।

