এইদিন ওয়েবডেস্ক,কলকাতা,৩১ মে : বোলপুর থানার আইসিকে মা-বউ তুলে অশ্লীল মন্তব্য ও অকথ্য ভাষায় গালাগালি করে এখন সংবাদের শিরোনামে বীরভূমের এক সময়ের দোর্দণ্ডপ্রতাপশালী তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল । একারনে তাকে আজ শনিবার বোলপুর এসডিপিও অফিসে তলব করা হয়েছিল । কিন্তু তিনি শারীরিক অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে হাজিরা দেননি । রবিবার বেলা ১১টায় ফের বোলপুর এসডিপিও অফিসে তলব করা হয়েছে তাঁকে । এদিকে পুলিশ আধিকারিকের সঙ্গে অনুব্রতের এহেন আচরণ প্রসঙ্গে রাজ্য বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার মন্তব্য করেছেন “তৃণমূলে লক্ষ লক্ষ এমন অনুব্রত রয়েছে” ।
সুকান্ত একটা ভিডিও শেয়ার করেছেন । যে ভিডিওতে একজন তৃণমূল নেতাকে প্রকাশ্যে পুলিশকে “হাতে চুড়ি পরানোর” হুমকি দিতে শোনা গেছে । তিনি লিখেছেন, ‘বীরভূমের একজন পুলিশ আধিকারিকের শ্রদ্ধেয় মাতা এবং স্ত্রীকে যিনি অকথ্য এবং অশ্রাব্য ভাষায় আক্রমণ করেন, ধর্ষণের হুমকি দেন – সেই অনুব্রত মণ্ডলের কুকীর্তি তৃণমূল কংগ্রেসের দুর্ভাগ্যক্রমে প্রকাশ্যে এসে গেছে, তাই শাসকদল সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেস-কে রাতারাতি শোকজের নাটক করতে বাধ্য হতে হয়েছে! আসলে গোটা তৃণমূলেই এমন লক্ষ লক্ষ অনুব্রত রয়েছে, যাদের প্রভাবে এভাবেই পুলিশ-প্রশাসনকে ভয়ে আতঙ্কে কাঁটা হয়ে থাকতে হয়।’
সুকান্ত মজুমদার আরও লিখেছেন,’ভিডিওটি দেখলেই বুঝতে পারবেন কিভাবে মঙ্গলকোটের তৃণমূল বিধায়ক অপূর্ব চৌধুরীর ব্যক্তিগত সেক্রেটারি এবং ক্ষীরগ্রাম অঞ্চল তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি মঙ্গলকোট থানার কৈচর পুলিশ ফাঁড়ির আই সি কে প্রকাশ্যে চমকাচ্ছে! হাতে চুড়ি পরিয়ে দেওয়ার হুমকি দিচ্ছে! আসলে এটা নতুন কিছু নয়। তৃণমূলের শাসনকালে পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ এ ধরনের চাপে অভ্যস্ত হয়ে পড়েছে। মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির এই জঙ্গলরাজে, যেখানে গণতন্ত্রের বদলে ত্রাসের শাসন চলে, সেখানে পুলিশ প্রশাসনের হয় মেরুদণ্ড বিক্রি করতে হয়, নয়তো পাড়ায় পাড়ায় ছড়িয়ে থাকা অনুব্রতদের হাতে অপদস্ত হতে হয়।’
আসলে ভিডিওটি ২০২৪ সালের ডিসেম্বর মাসের । পূর্ব বর্ধমান জেলার মঙ্গলকোট ব্লকের ক্ষীরগ্রাম অঞ্চলের তৃণমূল সভাপতি মাসদুর রহমান ওরফে মুকুল প্রকাশ্যে পুলিশকে “হাতে চুড়ি পরানোর” হুমকি দিয়েছিলেন। আসলে,তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দের কারনে ঘটনার দু’দিন আগের রাতে মঙ্গলকোটের কুড়ুম্বা গ্রামে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি দেওয়া একটি ফ্লেক্স পুড়িয়ে দেওয়া হয়। ঘটনার জেরে পরের দিন দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত দফায় দফায় উত্তেজনা ছড়ায়। দুপুরে কৈচরে বর্ধমান-কাটোয়া রাস্তা অবরোধ করা হয়। বিকেলে ঘেরাও করা হয় পুলিশ ফাঁড়ি৷ দুপুরে অবরোধ চলাকালীন মঙ্গলকোট ব্লকের ক্ষীরগ্রাম অঞ্চলের তৃণমূল সভাপতি মাসদুর রহমান ওরফে মুকুল পুলিশের উদ্দেশে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ‘দোষীদের গ্রেপ্তার করতে হবে। দুপুর ১টা পর্যন্ত সময় দেওয়া হলো। না হলে আপনাদের হাতে চুড়ি পরিয়ে দেবো।’ এমনকি স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক অপূর্ব চৌধুরী বলেন, ‘নপুংসক পুলিশ৷ এটা আমরা চাই না৷’ এর পরেই তৈরি হয় বিতর্ক। পরের দিন রাতে মাসদুর ও আরও কয়েকজনের নামে মামলা রুজু করে মঙ্গলকোট থানার পুলিশ।।

