এইদিন ওয়েবডেস্ক,ভাতার(পূর্ব বর্ধমান),০৮ জুলাই : গত ১৮ জুন কলকাতা হাই কোর্ট কেন্দ্রীয় সরকারকে নির্দেশ দিয়েছিল যে আগামী ১ অগস্ট থেকে পশ্চিমবঙ্গে আবার ১০০ দিনের কাজ শুরু করতে হবে । আদালত জানিয়েছে, ১০০ দিনের কাজ শুরু করার জন্য যে কোনও শর্ত আরোপ করতে পারবে কেন্দ্র। কিন্তু কাজ আটকে রাখা যাবে না। কিন্তু এখনো কাজ শুরু হয়নি । এদিকে সারা বাংলা জব কার্ডধারী মজুর সমিতির পক্ষ থেকে রাজ্যের প্রতিটি ব্লকে অবিলম্বে ১০০ দিনের কাজ শুরু করার দাবিতে বিডিও-এর কাছে ডেপুটেশন দিতে শুরু করেছে৷ আজ সোমবার ভাতার বিডিও-এর কাছে ৫ দফা দাবি সম্বলিত একটি স্মারকলিপি জমা দিল সংগঠনটি । উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের রাজ্য কমিটির সদস্য মোজাম্মেল হক, কৃষি ও কৃষক বাঁচাও কমিটির জেলা সম্পাদক অনিরুদ্ধ কুন্ডু প্রমুখ ।
স্মারকলিপিতে দাবি জানানো হয়েছে,সমস্ত জব কার্ড ধারীদের অবিলম্বে হাইকোর্টের রায় মেনে ১০০ দিনের কাজ দিতে হবে,নতুন জব কার্ড দেওয়ার কাজ শুরু করতে হবে, প্রত্যেক গরিব মানুষকে বাংলা আবাস যোজনায় ঘর দিতে হবে, সমস্ত গরিব মানুষের বাড়িতে শৌচালয় দিতে হবে এবং ২০০ দিনের কাজ ও ৬০০ টাকা মজুরি দিতে হবে । এদিনের এই কর্মসূচিতে প্রচুর সংখ্যক জবকার্ডধারী মহিলাও উপস্থিত ছিলেন । তারা বিডিও অফিসের গেটের সামনে বিক্ষোভও দেখান ।
প্রসঙ্গত,একশ দিনের কাজে ব্যাপক দুর্নীতি হয়েছে এবং রাজ্য সরকার, প্রকৃত সুবিধাভোগীদের বঞ্চিত করে ওই টাকা অন্যদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে পাঠানো হয়েছে,এযাবৎ রাজ্য সরকার তার যথাযথ হিসাব দিতে পারেনি বলে অভিযোগ কেন্দ্র সরকারের । হুগলি, পূর্ব বর্ধমান, মালদহ এবং দার্জিলিং— এই চার জেলায় ৫০ কোটির বেশি টাকার দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে । যে কারণে রাজ্যে গত তিন বছর ধরে ১০০ দিনের কাজ বন্ধ হয়ে রয়েছে । কেন্দ্রের অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল (এএসজি) অশোককুমার চক্রবর্তী কোর্টকে বলেছিলেন, ‘ওই প্রকল্পের বরাদ্দ অর্থ নিয়ে ব্যাপক কারচুপির অভিযোগ রয়েছে। কেন্দ্রীয় দল জেলায় জেলায় গিয়েও সেই তথ্য তুলে এনেছে।’
যদিও প্রধান বিচারপতির বক্তব্য ছিল, ‘এই সংক্রান্ত সমস্ত অভিযোগ ২০২২ সালের আগের। সেই সব নিয়ে আপনারা যা খুশি পদক্ষেপ করুন। কিন্তু এখন প্রকল্পের কাজ চালু করা হোক।’
১০০ দিনের কাজ নিয়ে কলকাতা হাই কোর্টে মামলা করেছিল পশ্চিমবঙ্গ খেতমজুর সমিতি। আইনজীবী বিকাশরঞ্জয় ভট্টাচার্য, শামিম আহমেদ তাদের হয়ে এই মামলা লড়ছেন । সমিতি জানায়, ২০২১ সালের ডিসেম্বর মাস থেকে পশ্চিমবঙ্গে ১০০ দিনের কাজের মজুরি দেওয়া হচ্ছে না। মামলাকারীদের দাবি যে, এখনও পর্যন্ত যা বকেয়া মজুরি, সেই টাকা অবিলম্বে মিটিয়ে দেওয়া হোক। সেই সঙ্গে এত দিন টাকা বন্ধ করে রাখার জন্য ০.০৫ শতাংশ হারে সুদ দেওয়া হোক। এ ছাড়া, একই বিষয়ে হাই কোর্টে পৃথক মামলা করেছিলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তাঁর অভিযোগ, এই কেন্দ্রীয় প্রকল্পের টাকা নয়ছয় করা হয়েছে। তাই সিবিআই তদন্তের আবেদনও জানান চান বিরোধী দলনেতা ।।

