প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়,বর্ধমান,০৭ আগষ্ট : কয়েকদিনের নাগাড়ে বৃষ্টিপাত ও তার সাথে
ডিভিসির জলাধার থেকে ছাড়া জলে ফুলেফেঁপে উঠেছে ভাগিরথী নদি।আর তাতেই ঘটেছে বিপত্তি ।ভাগীরথীর জল ছুঁইছুঁই ১১ হাজার ভোল্টেজের বিদ্যুৎ লাইনের তার।সেই কারণে সাত দিন ধরে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে রয়েছে পূর্ব বর্ধমানের পূর্বস্থলী ২ ব্লকের ঝাউডাঙা পঞ্চায়েতের ঝাউডাঙ্গা এবং হালতাচড়া গ্রাম। বিদ্যুৎ না থাকায় চরম ভোগান্তির মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন এই দুই গ্রামের দেড়শোটি পরিবার । দুর্ভোগ থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য বিদ্যুৎ দপ্তরে দরবার করেও সুরাহা মেলায় ক্ষোভে ফুঁষছেন গ্রামবাসীরা ।
ভাগীরথীর একপাড়ে পূর্বস্থলীর ঝাউডাঙা ও হালতাচড় গ্রাম।এই গ্রামে বিদ্যুৎ এসেছে ভাগীরথীর অপর পাড়ের নদিয়ার বেথুয়াডহরি থেকে। এলাকার বাসিন্দা প্রহ্লাদ ঘোষ শনিবার জানান, ভাগীরথীর দুই পাড়ের পোলে ১১ হাজার ভোল্টেজের বিদ্যুৎ লাইনের তার টানা হয়েছে । ভাগীরথী এখন জলে টইটুম্বুর । বিদ্যুতের তার ভাগীরথীর জলে ঠেকতে আর হাত কয়েক বাকী । সেই কারণেই গ্রামের লাইনে সাত দিন ধরে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দিয়ে রেখেছে বিদ্যুৎ দফতর । এর ফলে ঝাউডাঙা ও হালতাচড় গ্রামের দেড়শটি পরিবার সাত দিন ধরে বিদ্যুৎ পরিষেবা থেকে বঞ্চিত হয়ে রয়েছে ।
অপর বাসিন্দা দুর্গা মণ্ডল বলেন, ‘১১ হাজার ভোল্টেজের বিদ্যুৎতের তার যখন টানা হয় তখনই ছিল গাফিলতি । তার উঁচু করে টানা হয়নি ।সেই জন্য ঝাউডাঙা ও হালতাচড় গ্রামে বিদ্যুৎ আসার পর থেকে প্রতি বছর বর্ষায় গ্রাম বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন থাকে । ১১হাজার ভোল্টেজের বিদ্যুৎ লাইনের তার অ্যাঙ্গেলের সাহায্যে উঁচু করার জন্য বহুবার দুই গ্রামের মানুষ বিদ্যুৎ দপ্তরে দরবার করেছিল । কিন্তু কোন ফল হয়নি ।শুক্রবারও নদিয়ার বেথুয়াডহরিতে বিদ্যুৎ দপ্তরের গিয়ে বিক্ষোভ দেখায় হালতাচড়া এবং ঝাউডাঙ্গা গ্রামের বাসিন্দারা। বিদ্যুৎ দপ্তরের কর্মীদের শনিবার গ্রামে লাইন ঠিক করতে আসার কথা ছিল । কিন্তু কেউ আসেনি । এইভাবেই প্রতি বছর বর্ষায় ভোগান্তি চলছেই । তার বিরাম ঘটছে না । সন্ধ্যা নামলেই অন্ধকারে ঢাকা পড়ছে ঝাউডাঙা ও হালতাচড় গ্রাম। দুর্ভোগের অবসান কবে ঘটবে তা জানা নেই পূর্বস্থলীর এই দুই গ্রামের বাসিন্দাদের ।’
জানা গেছে,দুই গ্রামে অনেকেই টোটো চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করেন । এদিকে টোটোয় চার্জ না থাকায় সেই টোটোগুলিও বন্ধ হয়ে পড়ে রয়েছে। পাশাপাশি তীব্র গরমে গ্রামের কয়েকশো মানুষ ব্যাপক অসুবিধার মধ্যে রয়েছেন। গ্রামের ছাত্র আশিষ ঘোষ জানায় ,এখন তাঁদের অনলানে পড়াশুনো চলছে । কারেন্ট না থাকায় মোবাইল ফোনে চার্য দিতে না পারায় ফোন বন্ধ হয়ে রয়েছে ।তাই লাটে উঠেছে অনলাইনে পড়াশুনা । সন্ধ্যা নামলে লম্ফ অথবা হ্যারিকেনের আলোয় কোন রকমে রাত কাটাতে হচ্ছে । বিদ্যুৎ দফতর দ্রুত ১১ হাজার ভোল্টেজের বিদ্যুতের তার টেনে উুঁচু করায় ব্যবস্থা করে দুর্ভোগ থেকে মুক্তির ব্যবস্থা করুক, এমনটাই দাবি জানিয়েছে দুই গ্রামের পড়ুয়ারা ।
এই বিষয়ে পূর্বস্থলী উত্তরের বিধায়ক তপন চট্টোপাধ্যায় বলেন ,’ভাগীরথী নদি জলে টইটুম্বুর । বিদ্যুৎতের তার নদির জল ছুঁইছুই হয়ে রয়েছে । এই অবস্থায় ওই তারে বিদ্যুৎ প্রবাহিত থাকলে ভয়ানক বিপদ ঘটে যাবে বলে লাইনে বিদ্যুুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন রাখা হয়েছে । নদির জল না কমা পর্যন্ত কিছু করার নেই । ওই লাইনে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন রাখতেই হবে ।’।