গনধর্ষণের ফলে জন্ম নেওয়া সন্তানের পরামর্শে ২৮ বছর পর অভিযোগ দায়ের করলেন নির্যাতিতা, ধর্ষক নকী হাসান ও তার ভাই গুড্ডু পলাতক

এইদিন ওয়েবডেস্ক,শাহজাহানপুর(উত্তরপ্রদেশ),০৭ এপ্রিল : দুই ভাই মিলে প্রতিবেশী ১২ বছরের কিশোরীকে লাগাতার ধর্ষণ করেছিল । ফলে গর্ভবতী হয়ে পড়ে মেয়েটি । পরে সে একটি পুত্রসন্তানের জন্ম দেয় । তারপর সময় বিষয়টি ধামাচাপা পড়ে যায় । কিন্তু ২৮ বছর আগে ঘটে যাওয়া মায়ের উপর পাশবিক অত্যাচারের কথা সম্প্রতি জেনে যায় ছেলে । এরপর ছেলের পরামর্শে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন বছর চল্লিশের ওই মহিলা । ঘটনাটি ঘটেছে উত্তরপ্রদেশের শাহজাহানপুর জেলার সদর বাজার থানা এলাকায় । অভিযোগ পেতেই নড়েচড়ে বসে পুলিশ । পুলিশ ডিএনএ পরীক্ষা করে মহিলার সন্তানের বাবাকে প্রথমে চিহ্নিত করে । এদিকে থানায় অভিযোগ দায়েরের কথা কানে যেতেই অভিযুক্ত নকী হাসান ওরফে ব্লেডি ড্রাইভার এবং তার ভাই গুড্ডু চম্পট দিয়েছে । অভিযুক্তদের মধ্যে নকী হাসানের সঙ্গে মহিলার ছেলের ডিএনএ মিলেছে বলে জানা গেছে । অভিযুক্তদের পাকড়াও করতে একটি দল গঠন করেছে পুলিশ ।
পুলিশ সুত্রে খবর,ঘটনাটি ঘটে ১৯৯৪ সালে । সদর বাজার থানা এলাকায় দিদি ও জামাইবাবুর সঙ্গে থাকতেন নির্যাতিতা মহিলা । জামাইবাবু সরকারি চাকরি করেন । দিদি বেসরকারি স্কুলে শিক্ষকতা করতেন । সাধারনত বাড়িতে একাই থাকতেন ওই মহিলা । আর সেই সুযোগে প্রতিবেশী নকী হাসান ওরফে ব্লেডি ড্রাইভার বাড়িতে ঢুকে তাকে ধর্ষণ করে । পরদিন তার আরেক ভাই গুড্ডু তাকে ধর্ষণ করে । পরেও একাধিকবার তাঁকে ধর্ষণ ওই দুই ভাই । তখন মহিলার ১২ বছরের কিশোরী । এভাবে লাগাতার ধর্ষণের কারনে তিনি গর্ভবতী হয়ে পড়েন এবং পরে তিনিএকটি পুত্রসন্তানের জন্ম দেন । কিন্তু চক্ষুলজ্জায় তাঁরা পুলিশের দ্বারস্থ হননি ।
জানা গেছে,নির্যাতিতা কিশোরীর সন্তানকে হারদোই থেকে এক দম্পতির হাতে তুলে দেওয়া হয় । পরে গাজীপুরের এক ব্যক্তির সঙ্গে নির্যাতিতার বিয়ে দেওয়া হয় । কিন্তু মহিলার অতীতের কথা শুনে তাঁকে ডিভোর্স দিয়ে দেন ওই ব্যক্তি । আর তারপর থেকে নির্যাতিতা মহিলা কঠিন সংগ্রাম করে নিজের অস্তিত্ব টিকিয়ে রেখেছে । এদিকে মহিলার ছেলে এখন বছর সাতাশের যুবক । সম্প্রতি তিনি তাঁর পালক পিতামাতার কাছ থেকে আসল মায়ের নাম ঠিকানা জানতে পারেন । বাবার পরিচয় জানতে মায়ের কাছে ছুটে আসেন ওই যুবক । চেপে ধরতেই কিশোরী বয়সে দুই ভাইয়ের পাশবিক অত্যাচারের কথা ছেলের কাছে খুলে বলেন ওই মহিলা । আর এরপরেই মায়ের ধর্ষকদের শাস্তির জন্য আইনের দ্বারস্থ হওয়ায় সিদ্ধান্ত নেই মহিলার ছেলে ।
জানা গেছে,ছেলের পরামর্শে ২০২১ সালের ৪ মার্চ আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন নির্যাতিতা মহিলা । শেষে আদালতের নির্দেশে তিনি সদর বাজার থানায় মামলা করেন । পুলিশ সুপার (শহর) সঞ্জয় কুমার বলেন,’অভিযোগকারিনীর তখন বয়স ছিল ১২ বছর । অভিযুক্ত হাসান ও তার ছোট ভাই গুড্ডু মিলে তাঁকে বেশ কয়েকবার ধর্ষণ করেছে । দুই অভিযুক্তের বিরুদ্ধে গণধর্ষণের মামলা রজু করা হয়েছে ।’ পাশাপাশি তিনি জানিয়েছেন,অভিযুক্তরা পলাতক । তাদের ধরতে একটি বিশেষ দল গঠন করা হয়েছে ।।