প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়,বর্ধমান,১৮ আগষ্ট : স্কুল-কলেজ না খোলা নিয়ে রাজ্য সরকারের সমালোচনা করলেন কেন্দ্রের শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সুভাষ সরকার । বুধবার বর্ধমানে শহীদ সম্মান যাত্রা’ কর্মসূচীতে যোগ দিতে এসে সুভাষ সরকার বলেন ,“প্রতিদিন দেখা যাচ্ছে সংক্রমণ কমছে । তাই এই রাজ্যে পার্ক খুলে দেওয়া হলেও স্কুল খোলার ব্যাপারে কোন চিন্তা ভাবনা নেই রাজ্য সরকারের। অথচ স্কুল ও কলেজের বিষয়টি কেন্দ্র রাজ্যের যৌথ ব্যাপার । ২০২০ সালের ১৭মে ১৩ টি অ্যাডভাইসারি(advisory)পাঠানো হয়েছে।এর একটাও স্কুলে পাঠায়নি রাজ্য । তারা শুধু রাজনীতি করতেই ব্যস্ত আছে’, বলে কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী সুভাষ সরকার মন্তব্য করেন ।
‘শহীদ সম্মান যাত্রা’ প্রসঙ্গে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুভাষ সরকার বলেন, ‘ভোট পরবর্তী হিংসায় এখনও পর্যন্ত এই রাজ্যে ৪০ জনের বেশী বিজেপি কর্মী মারা গিয়েছে । অত্যাচার এখনও চলছে। সেইসব শহীদ পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে ও শহীদদের সম্মান জানাতেই এই ‘শহীদ সম্মান যাত্রা’ কর্মসূচীর আয়োজন করা হয়েছে ।’ ত্রিপুরার গনতন্ত্র নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের করা মন্তব্যের পাল্টা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুভাষ সরকার বলেন,“পশ্চিমবঙ্গে হিটলারতন্ত্র চলছে। তাই ওনার মুখে এসব মানায় না। ত্রিপুরায় ব্রাত্য বসুকে ’বুলেটপ্রুফ গাড়ি’ এমনকি পাইলটকার পর্যন্ত দেওয়া হয়েছিল ।’
এদিন বর্ধমানে দলীয় কর্মসূচী সেরে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুভাষ সরকার বর্ধমানের ১০৮ শিব মন্দিরে পুজো দেন। এরপর তিনি পূর্ব বর্ধমানের খণ্ডঘোষ বিধানসভার ’চান্না গ্রামে‘ সাধক কমলাকান্ত ও বিপ্লবী যতীন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়ের আশ্রম পরিদর্শনের উদ্দেশ্যে রওনা হন । আশ্রম পরিদর্শন শেষে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুভাষ সরকার সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বলেন , ‘স্বাধীনতা সংগ্রামী যতীন্দ্রমোহন বন্দ্যোপাধ্যায় এবং সাধক কমলাকান্তের স্মৃতিবিজড়িত ’চান্না গ্রামের’ আশ্রমের সংস্কার ও উন্নতিকল্পে স্থানীয় মানুষদের অনুপ্রাণিত করতেই তিনি চান্না গ্রামে এসেছেন ।’ চান্না গ্রাম থেকে বীরভূমের পথে রওনা দেন মন্ত্রী সুভাষ সরকার । পথে বর্ধমানের হলদি মোড়ের কাছে সুভাষ সরকারকে কালো পতাকা দেখায় তৃণমূলের কিষাণ ক্ষেতমজুর সংগঠনের সদস্যরা । যদিও কালো পতাকা দেখানোর বিষয়টিকে মন্ত্রী সুভাষ সরকার বিশেষ গুরুত্ব দিতে চান নি ।
এদিকে চান্না গ্রামের মাটিতে দাঁড়িয়ে কেন্দ্রের শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সুভাষ সরকার বিপ্লবী যতীন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম যতীন্দ্রমোহন বলায় শুরু হয়ে সমালোচনা । খণ্ডঘোষের তৃণমূল বিধায়ক নবীনচন্দ্র বাগ এই প্রসঙ্গ নিয়ে কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রীকে কটাক্ষ করতে ছাড়েন নি । তিনি বলেন,“বিজেপি দলের কেউই বাংলা ও বাংলার মনীষীদের সন্মান করতে জানে না । মনীষীদের সম্পর্কেও তারা জানে না । তাই ’শহীদ সন্মান দিবস পালন’ করতে চান্না গ্রামে আসা কেন্দ্রের শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সুভাষ সরকার দেশবরেণ্য স্বাধীনতা সংগ্রামী যতীন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম যতীন্দ্রমোহন বলে চলে গেলেন । এর থেকে বড় লজ্জার আর কিছু হতে পারেনা বলে নবীনচন্দ্র বাগ মন্তব্য করেন ।।