প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়,বর্ধমান,২৮ জুলাই : আইন হাতে তুলে না নেওয়ার কথা বারে বারে বলে চলেছেন তৃণমূল সুপ্রিমো। তবুও যেন বেপরোয়া শাসক দলের কিছু নেতা।তারা মহিলাদেরকে প্রহারেও রেয়াত করছে না।উত্তর দিনাজপুর ও আড়িয়াদহর পর এবার মহিলাকে পেটানোর ঘটনায় যুক্ত হল পূর্ব বর্ধমানের কালনা শহরের তৃণমূল নেতা গোপাল তেওয়ারির নাম। আক্রান্ত মহিলার অভিযোগের ভিত্তিতে কালনা থানার পুলিশ কালন শহর তৃণমূল কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক গোপাল তেওয়ারিকে শনিবার রাতে গ্রেপ্তার করে ঠিকই। তবে জামিন যোগ্য ধারায় মামলা রুজু করে পুলিশ রবিবার গোপাল তেওয়ারিকে কালনা মহকুমা আদালতে পেশের সাথে সাথেই তিনি জামিন পেয়ে যান।আর তা নিয়েই এখন তোলপাড় চলছে কালনার রাজনৈতিক মহলে।
কোন রাজনৈতিক অশান্তি হাঙ্গামা চলাকালীন গোপাল তেওয়ারি বিরোধী দলের কোন মহিলাকে মারধোর করেছেন,ঘটনাটি এমন নয়। সামান্য পাঁচিল দেওয়াকে কেন্দ্র করে শনিবার অশান্তির ঘটনা ঘটে কালনা শহরের শাসপুর দেবনাথ পাড়ায় । আক্রান্ত দেবনাথ পাড়ার গৃহবধূ সুজাতা পালের অভিযোগ, তাঁদের বাড়ির পাশে একটি জমি রয়েছে। সেই জমি ঘিরে নেওয়াকে কেন্দ্র করে শুক্রবার ঝামেলা অশান্তি হয়।তারপর শনিবার সকালে গোপাল তেওয়ারি দলবল নিয়ে তাঁদের বাড়িতে চড়াও হয় ।বাড়ি ভিতরে ঢুকে তারা তাঁকে এবং তাঁদের পরিবারের আরো বেশ কয়েকজনকে ব্যাপক মারধর করে।সুজাতা পাল জানান ,তাঁর বৃদ্ধা শাশুড়ি থেকে শুরু করে পরিবারের কেউ গোপাল তেওয়ারি ও তার দহবলের মারধোরের হাত থেকে রেহাই পায় না। আক্রান্ত পরিবারের তিন জনের কালনা হাসপালে চিকিৎসা চলছে বলে
সুজাতাদেবী দাবি করেন। পাশাপাশি তিনি এও বলেনি আমাদের বাড়িতে ঢুকে তৃণমূল নেতা গোপাল তেওয়ারি ও তার দলবল যে ভাবে মারধোর করেছে তার সবিস্তার উল্লেখ করে তিনি কালনা থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন।
এদিকে এই মারধোরের ঘটনার ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হতেই কালনায় শোরগোল পড়েযায়।বিষয়টি নিয়ে তৃণমূল নেতা গোপাল তেওয়ারি সাফাই দেন,’আমি আমার কেনা জায়গায় পাঁচিল দিয়েছিলাম । সেই পাঁচিলটিকে ওরা ভেঙে দিয়েছে। এমনকি এ নিয়ে সকালে বলতে যাওয়ার কারণে উল্টে ওরাই আমাকে মারধর করেছে।’
এই প্রসঙ্গে জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র তথা কালনার বিধায়ক দেবপ্রসাদ বাগ বলেন,’আইন হাতে তুলে নেওয়া করোরই উচিত নয়। পুলিশ তদন্ত করে দেখুক কি ঘটনা ঘটেছে। গোপাল তেওয়ারির বিরুদ্ধে যে অভিযোগ উঠেছে তা যদি সত্য হয় ,দল তার পাশে দাঁড়াবে না।’
আর জেলা বিজেপির সহ-সভাপতি মৃত্যুঞ্জয় চন্দ্র বলেন,’বাংলায় এখন শাসকের শাসন চলছে। তাই শাসক দলের লোকজন যতবড় অপরাধ করুক না কেন,তারা জামিন পেয়ে গিয়ে বুক ফুলিয়েই এলাকায় ঘুরে বেড়াবে। কালনার ঘটনা তারই বাস্তব প্রমান ।’।