এইদিন ওয়েবডেস্ক,কলকাতা,১১ ডিসেম্বর : গীতাপাঠের অনুষ্ঠানে নিরামিষ বলে মুরগির প্যাটিস বিক্রি করা হকারকে মারধর ও তার ঠেলা উলটে দেওয়ার ঘটনায় একটি এফআইআর দায়ের করেছিলেন সিপিএমের আইনজীবী সায়ন ব্যানার্জী । মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি আজ কৃষ্ণনগরের সভায় বলেন যে অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করিয়ে দিয়েছি । মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশের পর বৃহস্পতিবার ভোর রাতে কার্যত টেনেহিঁচড়ে বাড়ি থেকে বের করে সৌমিক গোলদার, তরুণ ভট্টাচার্য ও স্বর্ণেন্দু চক্রবর্তীকে গ্রেপ্তার করেছিল পুলিশ । তাদের মধ্যে সৌমিক গোলদার শারিরীকভাবে প্রতিবন্ধী৷
আজ বৃহস্পতিবার তাদের আদালতে তুলে পুলিশ নিজেদের হেফাজতে চেয়ে আবেদন জানায় । কিন্তু ওই তিন যুবকের পাশে দাঁড়ান হিন্দুত্ববাদী বিশাল আইনজীবীদের দল । অবশেষে পুলিশের আবেদন নাকচ করে দিয়ে তিন যুবকের জামিন মঞ্জুর করেন বিচারপতি । পরে তিন যুবককে গেরুয়া উত্তরীয় ও ফুলমালা পরিয়ে তাদের স্বাগত জানান বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী । বিজেপি নেতা ও সিংহবাহিনী স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কর্ণধার দেবব্রত মাঝি ও বেশ কিছু সন্ন্যাসীদের উপস্থিতিতে তিন যুবকের নিরাপত্তার দায়িত্ব নেন বিরোধী দলনেতা । তিনি বলেন,”স্বর্মের রক্ষা করতে গিয়ে ওই তিন হিন্দু যুবক মমতা ব্যানার্জির পুলিশের রোষানলে পড়েছেন। তাই তাদের নিরাপত্তা নিয়ে আমি উদ্বিগ্ন ।’ তিনি তাদের বাড়িতে সিসিটিভি লাগানো ও বেসরকারি নিরাপত্তারক্ষী দেওয়ার প্রস্তাব দেন । পাশাপাশি দলীয় কর্মীদের তিনি ওই তিন যুবকের উপর নজর রাখার আবেদন জানান । শুভেন্দু অধিকারী বলেছেন,পুলিশ যদি কোনো ভাবে ওদের হয়রানি করে তাহলে দলীয়ভাবে আমরা ওদের পাশে থাকবো ।
প্রসঙ্গত,গত ৭ তারিখ কলকাতার ব্রিগেড ময়দানে ঐতিহাসিক ৫ লক্ষ কন্ঠে গীতাপাঠের অনুষ্ঠানে নিজের পরিচয় গোপন করে নিরামিষ প্যাটিসের নাম করে মুরগির মাংসের প্যাটিস বিক্রির অভিযোগ ওঠে শেখ রেয়াজুল নামে এক হকারের বিরুদ্ধে । সেই প্যাটিস খাওয়ার সময় সৌমিক গোলদার, তরুণ ভট্টাচার্য ও স্বর্ণেন্দু চক্রবর্তী বুঝতে পেরে ওই হকারের ঠেলা উলটে দেয় এবং তাকে মারধর করে । তাদের অভিযোগ যে ওই হকার ইচ্ছা করে নিরামিষাশী বৈষ্ণবদের সমাবেশে মুরগীর মাংসের প্যাটিস বিক্রি করছিল । সেই মুহুর্তের ভিডিওটি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হলে বিজেপি ও আরএসএস-কে নিশানা করতে আসরে নেমে পড়ে তৃণমূল কংগ্রেস,সিপিএম, কংগ্রেস ও তৃণমূলপন্থী সংবাদমাধ্যমগুলি । বিশেষ করে সিপিএমকে এই বিষয়ে বেশি প্রতিবাদী দেখা যায় । অবশেষে সিপিএমের আইনজীবী সায়ন ব্যানার্জীর অভিযোগের ভিত্তিতে কলকাতা পুলিশ অতি সক্রিয়তা দেখিয়ে ওই তিন যুবককে গ্রেপ্তার করে বলে অভিযোগ ।
এদিকে গত বুধবার অভিযুক্ত হকার শেখ রেয়াজুলের বিরুদ্ধে একাধিক ধারায় লালবাজারে একটি এফআইআর দায়ের করেন আইনজীবী বিরাজ বিশ্বাস৷ যদিও এখনো পর্যন্ত তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে কিনা তা জানা যায়নি । এদিকে সিপিএমের আইনজীবী সায়ন ব্যানার্জী জানিয়েছেন যে তিনি শেখ রেয়াজুলের পাশে দাঁড়াবেন ।।
