এইদিন ওয়েবডেস্ক,প্রয়াগরাজ,১৬ এপ্রিল : উমেশ পাল হত্যা মামলায় পুলিশ হেফাজতে থাকা মাফিয়া ডন আতিক আহমেদ ও তার ভাই আশরাফকে শনিবার রাতে প্রয়াগরাজের ক্যালভিন হাসপাতালের কাছে গুলি করে হত্যা করা হয় । তিন হামলাকারী যুবকই পরে পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করে । দৈনিক জাগরণ জানিয়েছে, হামলাকারী লাভলেশ তিওয়ারি বান্দার বাসিন্দা, সানির বাড়ি ওল্ড হামিরপুর এবং অরুণ মৌর্য কাসগঞ্জের বাসিন্দা । প্রয়াগরাজ পুলিশ কমিশনার রমিত শর্মার মতে, তিনজন হামলাকারী মিডিয়া কর্মী পরিচয় দিয়ে এসেছিল এবং হাসপাতালের গেটে দাঁড়িয়ে থাকা অন্যান্য সাংবাদিকদের সাথে আতিকের আসার জন্য অপেক্ষা করছিলেন ।
মিডিয়া সূত্রে জানা গেছে, হামলাকারীরা বলেছে যে আতিক আহমেদ ও তার ভাই আশরাফ দু’জনেই পাকিস্তানের সাথে সম্পর্ক রেখে চলত এবং তারা নিরপরাধদের হত্যা করত, সাধারণ মানুষের জমি দখল করত, যারা তাদের বিরুদ্ধে কথা বলত তাদেরও কাউকেই রেহাই দিত না তারা, তাই আমরা তাদের দুজনকেই হত্যা করেছি। আতিক ও আশরাফের হত্যাকারীরা আগেও কোনো না কোনো মামলায় জেলে গেছে বলে জানতে পেরেছে পুলিশ । পুলিশ তার রেকর্ড খতিয়ে দেখছে। কখন ও কোন মামলায় তারা কারাগারে গিয়েছিলেন তা জানার চেষ্টা করছে পুলিশ। এছাড়াও তিন হামলাকারী কখন প্রয়াগরাজে এসেছিলেন এবং প্রয়াগরাজে তাদের স্থানীয় কেউ সাহায্য করেছিল পুলিশ তাও খতিয়ে দেখছে । পুলিশ জানায়, ঘটনাস্থলে তিনটি পিস্তল, একটি মোটরসাইকেল, একটি ভিডিও ক্যামেরা ও একটি নিউজ চ্যানেলের লোগো পড়ে থাকতে দেখা যায় । প্রয়াগের পুলিশ কমিশনার জানিয়েছেন, ঘটনার সময় দৌড়ে পালাতে গিয়ে এএনআই-এর এক সাংবাদিক আহত হয়েছেন । এছাড়া মান সিং নামে এক কনস্টেবলের হাতে গুলি লেগেছে ।
এদিকে আতিক ও তার ভাইকে হত্যার পর প্রয়াগরাজে উত্তেজনা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে । যার পরিপ্রেক্ষিতে র্যাপিক অ্যাকশন ফোর্স(র্যাফ) মোতায়েন করা হয়েছে । ঘটনার পর জেলার সীমান্ত সিল করে দেওয়া হয়েছে । ঘটনাস্থলে আরএএফকেও ডাকা হয় । উন্নাওতেও হাই অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে । শাহগঞ্জের নাখাস কোহনা থানার কাছে ক্যালভিন হাসপাতালের দিকে যাওয়ার রাস্তায় পুলিশ ব্যারিকেড দিয়েছে এবং কাউকে হাসপাতালের দিকে যেতে দেওয়া হচ্ছে না। মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ ও মিশ্র জনগোষ্ঠী এলাকায় পুলিশ টহলদারি শুরু করেছে । জেলা পুলিশ পায়ে হেঁটে রাস্তায় টহল দিচ্ছে । ঘটনার পর রাতেই পুলিশবাহিনী তিরুভাতে থাথিয়া স্কোয়ার থেকে গান্ধী স্কোয়ার পর্যন্ত একটি পতাকা মিছিল করে । এই ঘটনায় এখনো পর্যন্ত ১০ জন পুলিশকর্মীকে বরখাস্ত করা হয়েছে বলে জানা গেছে ।
২০০৬ সালে উমেশ পাল অপহরণ মামলায় অভিযুক্ত আতিক এবং আশরাফকে গুজরাটের আহমেদাবাদের সবরমতি কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে গত ২৬ মার্চ প্রয়াগরাজে নিয়ে আসে উত্তরপ্রদেশ পুলিশের একটি দল । গত ২৮ মার্চ অপহরণ মামলায় আহমেদসহ দুজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয় আদালত । আতিক আহমেদের বিরুদ্ধে উমেশ পাল হত্যা মামলাসহ শতাধিক ফৌজদারি মামলা রয়েছে। এছাড়া ২০০৫ সালে বিএসপি বিধায়ক রাজু পালকে হত্যায় অভিযুক্ত আতিক আহমেদ ।।