এইদিন ওয়েবডেস্ক,০৬ সেপ্টেম্বর : গত বছরের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের ‘আয়রন ডোম’-এর নজর এড়িয়ে দক্ষিণ ইসরায়েলে আচমকা হামলা চালিয়েছিল ফিলিস্তিনি সন্ত্রাসী সংগঠন হামাস ৷ নৃসংশতা ও বর্বরতার সমস্ত সীমা অতিক্রম করে ব্যাপক নাশককতা চালায় ওই সন্ত্রাসবাদী সংগঠনটি । ধর্ষণ, গনধর্ষণ, অগ্নিসংযোগ, অপহরণ কিছুই বাদ রাখেনি তারা । এমনকি ইহুদি মায়ের গর্ভস্থ ভ্রুণ পর্যন্ত ওই বর্বর সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর হাত থেকে রেহাই পায়নি । এক গর্ভবতী ইহুদি তরুনীর পেট চিরে তার গর্ভস্থ সন্তানকে পর্যন্ত জবাই করা হয়েছিল । হামাসের এই নাশকতার পর বিশ্বের ইসলামি রাষ্ট্রগুলির পাশাপাশি অমুসলিম রাষ্ট্রগুলির মুসলিম জনগন পাশবিক উল্লাসে মেতে উঠেছিল । গাজায় মিষ্টি বিতরণ পর্যন্ত করা হয় । কিন্তু তখন গাজার বাসিন্দারা বুঝতে পারেনি যে কি ভবিষ্যৎ অপেক্ষা করছে তাদের জন্য । ইসরায়েলের রোষানলে তাদের কি ভয়ঙ্কর পরিনতি হতে চলেছে তা তারা কল্পনাও করেনি ।
হামাসের নাশকতার দিনেই ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর (Benjamin Netanyahu) হামাসকে চিরতরে নির্মুল করার শপথ নিয়ে ‘অপারেশন আয়রন ডোম’ ঘোষণা করেন । একদিকে ইরানের অস্ত্র ও অর্থের জোগান, অন্যদিকে হিজবুল্লাহ ও হুথির মত কুখ্যাত সন্ত্রাসবাদী সংগঠনগুলিকে পাশে পেয়ে ফিলিস্তিনি সন্ত্রাসী গোষ্ঠী হামাসের মনে হয়েছিল যে তারাই যুদ্ধে বিজয়ী হবে । গাজার বিস্তীর্ণ সুড়ঙ্গ জালের মধ্যে লুকিয়ে আচমকা ইসরায়েলি সেনার উপর হামলা চালাতে শুরু করে তারা । কিন্তু আজ কার্যত গোটা গাজাকেই ধ্বংসস্তুপে পরিনত করে দিয়েছে ইসরায়েল । ইসরায়েলের এই রুদ্ররূপ দেখে
দীর্ঘ প্রায় ১১ মাস যুদ্ধ চলার পরে এবারে প্রমাদ গনছে ফিলিস্তিনি সন্ত্রাসী গোষ্ঠী হামাস । বেশ কিছুদিন ধরেই তারা যুদ্ধবিরতির পথে হাঁটতে চাইছে । পনবন্দিদের মুক্তির বিনিময়ে তারা রীতিমতো দরকষাকষিও করেছে । কিন্তু কিছুতেই টলানো যায়নি ইসরায়েলকে ।যেকজন হামাস সন্ত্রাসী এখনো জীবিত আছে,তাদের প্রাণ বাঁচাতে এখন তাদের ভরসা ইরান নয়…বরঞ্চ আমেরিকা । আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের কাছে হামাস কাতর আর্তি জানিয়েছে,এবারে ইসরায়েলকে থামান, বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর উপর চাপ বাড়ান ।
গাজায় সংঘাত থামাতে মধ্যস্থতা করছে সৌদি আরব, মিশর, কাতারের মতো দেশ । যদিও একমাত্র সৌদি ছাড়া বাকি দুই ইসলামি রাষ্ট্র হামাসের অন্যতম মদতদাতা । এফিকে আমেরিকা প্রত্যক্ষভাবে ইসরায়েলকে সমর্থন করলেও একটা মিমাংসা সূত্র বের করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে । একাধিকবার কাতারের দোহায় অনুষ্ঠিত শান্তি বৈঠকে যোগ দিয়েছে হামাস ও ইজরায়েলের প্রতিনিধিরা। কিন্তু কোনওবারই যুদ্ধবিরতির চুক্তিতে সম্মত হতে পারেনি দু’পক্ষ। কারণ পণবন্দিদের মুক্তি নিয়ে একাধিক শর্ত চাপিয়েছে সন্ত্রাসী গোষ্ঠী হামাস। ইসরায়েলের কারাগারে বন্দি কুখ্যাত সন্ত্রাসবাদীদের মুক্তির দাবি করেছিল তারা, তাও অসম চুক্তিতে । যা মেনে নেওয়া সম্ভব হয়নি ইসরায়েলের পক্ষে । তাই যুদ্ধ বিরতিকে শিকেয় তুলে এখন হামাস খতম অভিযানে মন দিয়েছে ইসরায়েল । এমতবস্থায় আমেরিকা কি আদপেই ইসরায়েলের উপর চাপ সৃষ্টি করবে ? বা আমেরিলা চাপ দিলেও হামাস সন্ত্রাসীদের চিরতরে নির্মুল না করা পর্যন্ত কি ইসরায়েল থাকবে ? এসব প্রশ্নের উত্তর অজানা । তবে অতীত অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে হামাসকে পুরোপুরি নিকেশ না করা পর্যন্ত ইহুদি রাষ্ট্র ইসরায়েল থামবে বলে মনে হয় না । কারন বর্তমানে মধ্যপ্রাচ্যের যুদ্ধ এখন সম্পূর্ণ ইসরায়েলের নিয়ন্ত্রণে । এখানে নাক গলাতে হামাসের প্রধান মদতদাতা ইরান পর্যন্ত ভয় খাচ্ছে ।।