এইদিন ওয়েবডেস্ক,বর্ধমান,০৯ আগস্ট : স্কুল থেকে বাড়ি ফেরার পথে বিড়াল ছানার মত একটা প্রাণীকে রাস্তার পাশে নিকাশি নালায় পড়ে থাকতে দেখেন স্কুল শিক্ষিকা । শাবকটিকে সযত্নে কুড়িয়ে এনে লালন পালন করতে শুরু করেন তিনি । আদর করে নাম রাখেন ‘ফুফা’ । কিন্তু সময়ের সাথে শাবকটির আকৃতি বিড়ালকে ছাড়িয়ে যেতে শুরু করে । স্বভাবের মধ্যেও দেখা যায় হিংস্রতা । সন্দেহ হওয়ায় তিনি বনদপ্তরে খবর দেন । কিন্তু বনদপ্তরও ওই প্রাণীটিকে উদ্ধার করতে সক্ষম হয়নি । শেষে আজ বুধবার বর্ধমান সোসাইটি ফর অ্যানিম্যাল ওয়েলফেয়ারের সদস্যরা প্রাণীটিকে উদ্ধার করে নিয়ে যায় । তাদের কাছে প্রাণীটির পরিচয় শুনে শিউরে উঠছেন বর্ধমান শহরের নতুনপল্লী এলাকা বাসিন্দা বিপাশা বিশ্বাস নামে ওই শিক্ষিকা । তবে এদিন আদরের ‘ফুফা’ চলে যাওয়ায় চোখের জল সামলাতে পারেননি তিনি ।
বিপাশা বলেন,’বছর দেড়েক আগে স্কুল থেকে বাড়ি ফেরার পথে রাস্তার পাশে হাইড্রেনে ‘ফুফা’কে পড়ে থাকতে দেখি । বিড়াল মনে করে বাড়ি নিয়ে আসি তাকে । কিন্তু সময়ের সাথে ‘ফুফা’র চেহারা বিড়ালের থেকে অনেক বড় হতে থাকে । বিষয়টি বিশেষ আমল দিইনি । কিন্তু ইদানিং অল্পতেই ‘ফুফা’ রেগে গিয়ে ফোঁস ফোঁস করছিল । তখন আমার সন্দেহ হয় । যে কারনে আমি বনদপ্তরে খবর দিই । কিন্তু বনদপ্তরের লোকেরাও ফুফার আচরণে ভয় পেয়ে যায় । যেকারণে ওরা প্রাণীটা উদ্ধার না করেই ফিরে যায় । শেষে এদিন বর্ধমান সোসাইটি ফর অ্যানিম্যাল ওয়েলফেয়ারের সদস্যরা এসে প্রাণীটি উদ্ধার করে নিয়ে গেল ।’
সোসাইটির পক্ষে অর্ণব দাস বলেন,’বনদপ্তরের কর্মীরা ভেবেছিলেন প্রাণীটি ফিশিং ক্যাট বা বাঘরোল । কিন্তু আমরা এসে দেখে বুঝতে পারি যে ওটা বাঘরোল নয়,বনবিড়াল বা ফেলিস চাউস । এই বন্যপ্রাণীটি জঙ্গল, জলাভূমি এলাকায় থাকে । এরা নিশাচর । রাতের অন্ধকারে এরা পাখি বা পাখির ডিম,ঘাসফড়িং জাতীয় বড় পোকা এবং ইঁদুর শিকার করে । অত্যন্ত বিরল প্রজাতির প্রাণী ।’ তিনি জানিয়েছেন, উদ্ধার করা প্রাণীটির বয়স আনুমানিক দেড় বছর । প্রাণীটি বর্ধমানের রমনাবাগান কর্তৃপক্ষের হাতে তুলে দেওয়া হবে ।
এদিকে আদরের ‘ফুফা’কে নিয়ে যাওয়ার সময় কেঁদে ফেলেন বিপাশাদেবী । তিনি কাঁদতে কাঁদতে বলেন,’কি করব, ওকে তো আমায় ছেড়ে দিতেই হবে । কারন ‘ফুফা’ তো গৃহপালিত প্রাণী নয়,বন্যপ্রাণী ।’।