এইদিন ওয়েবডেস্ক,ঠাকুরনগর(উত্তর ২৪ পরগনা),২৬ নভেম্বর : মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎকারের পর চেনা ছন্দে ফিরলেন বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী । শনিবার বিকেলে উত্তর চব্বিশ পরগনা জেলার ঠাকুরনগরে ভিড়ে ঠাসা এক জনসভায় তিনি ঘোষণা করলেন,’এই মুখ্যমন্ত্রীকে প্রাক্তন করার কাজ শুভেন্দু করে দেখাবেই ।’ মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতের বিষয়ে তিনি দলীয় কর্মীদের আশ্বস্ত করে বলেন,’নিশ্চিন্ত থাকুন, সংসদীয় রাজনীতির সৌজন্য আমি দেখিয়েছি । গতকাল আমার অফিসে মুখ্যমন্ত্রীর কর্মচারী এসেছিলেন । বললেন আপনাকে মুখ্যমন্ত্রী ডাকছেন । আমি বললাম আমার শর্ত আছে । আমি একা যাবো না । আমার সঙ্গে আরও বিধায়করা যাবেন । আমি তিন বিধায়ক সহ ৪ জন গেছি । নমস্কার প্রতিনমস্কার করেছি ।’ এরপর তিনি তিনি ঘোষণা করেন,’এই মুখ্যমন্ত্রীকে প্রাক্তন করার কাজ শুভেন্দু করে দেখাবেই দেখাবেই দেখাবে ।’
এদিন ঠাকুরনগরে সিএএ ও এনআরসির সমর্থনে একটি জনসভার আয়োজন করেছিল বিজেপি । সভায় উপস্থিত ছিলেন বিজেপি সাংসদ শান্তনু ঠাকুর,মতুয়া নেতা সুব্রত ঠাকুর প্রমুখ । সভায় প্রধান বক্তা ছিলেন শুভেন্দু অধিকারী । সভায় তিনি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিশানা করে বলেন,’মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই প্রথম শ্যামবাজার থেকে সিঁথির মোড় পর্যন্ত পদয়াত্রা করে সংখ্যালঘু ভাই বোনেদের উসকে দিলেন । তারপরে দেখলেন এই বাংলা জুড়ে কি হল । দেখলেন বেলডাঙ্গা রেলস্টেশন অগ্নিদগ্ধ,রেজিনগর রেলস্টেশন অগ্নিদগ্ধ,মালদায় রেললাইন পর্যন্ত তুলে ফেললো । করমন্ডল এক্সপ্রেসে পাথর মেরে রোগীদের পর্যন্ত আহত করল । পশ্চিমবঙ্গে এই ঘটনার জন্য দায়ি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । আর আগুনটা লাগিয়েছিল সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী ৷’ শুভেন্দুর বলেন,’আইন পাশ হয়েছে লোকসভা রাজ্যসভায় । কোথাও কোনো অশান্তি ছিল না,সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে ভোট ব্যাঙ্কে পরিনত করার জন্য ১৮ টা লোকসভা সিটে হেরে যাওয়া মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দেখলেন উসকাতে হবে । আগুন লাগাতে হবে । তাহলে তো আমার ১৯ শতাংশ ভোট ব্যঙ্ক তৈরি হবে ।’
তিনি বলেন,’অমিত শাহজি ২০২০ সালে এরাজ্যে এসে জানিয়েছিলেন লকডাউন কেটে গেলেই এই কাজে হাত লাগাবেন । আমরা পিছিয়ে আসিনি ।
২০২২ সালের ৫ মে শিলিগুড়িতে এসেছিলেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহ৷ তিনি বলেছিলেন,কোভিড এখন নিয়ন্ত্রণে, আর কিছুদিন পরেই সিএএ আইন কার্যকরের ব্যবস্থা হবে । আমরা গর্বিত গুজরাটের একাধিক জেলাতে সিএএ কার্যকরের ব্যবস্থা হয়েছে । তিন দিন আগে একটি সর্বভারতীয় টিভি চ্যানেলে অমিত শাহ বলেছেন,আইনটা করেছি কি শুধুমাত্র আইন হিসাবে থাকার জন্য? সিএএ কার্যকর হবেই । মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কান খুলে ভালো করে শুনুন সিএএ কার্যকর হবেই ।’
শুভেন্দু অধিকারী বলেন,’বিষধর গোখরো সাপের সঙ্গে আমরা শুয়ে আছি । তাই আপনারা সতর্ক হন । জামাত,রাজাকাররা চায় এখানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় থাকুক । কেন ? খালেদা জিয়ার শ্লোগান ‘জয় বাংলা’ । সেটাই বলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । জয় বাংলা ভারতের শ্লোগান নয় । নারায়ন গঞ্জের আওয়ামি লিগের নেত্রী বলেন খেলা হবে । আর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের লোকরা বলে এবারেও পঞ্চায়েতে নাকি খেলা হবে । মানুষ মারার খেলা হবে । লুট করার খেলা হবে । হিন্দু নিধনের খেলা হবে । ওদের এম এল এ খোকন দাস বর্ধমানে কয়েকদিন আগে বলেছিল ভোটার তালিকায় নাম উঠছে,বাংলাদেশ থেকে যারা পালিয়ে আসছে তাদের নামটা ভাই একটু দেখেশুনে তুলো । ওরা বেশি হিন্দু হিন্দু করে । আজ টিএমসিরা প্রকাশ্যে এই কথা বলে । এর পরেও আপনারা জেগে ঘুমাবেন ?’
এরপর তিনি বলেন,’আপনারা ভরসা রাখুন শান্তনু ঠাকুর,শুভেন্দু অধিকারীর উপরে । সিএএ কার্যকর হওয়া শুধু সময়ের অপেক্ষা । অভিন্ন দেওয়ানি বিধি আসবেই । এটা পার্টির মত নয়,ব্যক্তি শুভেন্দুর মত,এনআরসি চাই । জন্ম নিয়ন্ত্রণ চাই । এই দেশকে বাঁচাতে হবে । একমাত্র হিন্দুদের হোমল্যান্ড ভারত মাতাকে বাঁচাতে হবে । আমাদের জায়গা নেই যাওয়ার । ইসলামিক দেশ ৫০ এর বেশি । ইহুদি,খীষ্টান, বৌদ্ধদের অনেক দেশ আছে । কিন্তু আমাদের একমাত্র ভূমি ভারত মাতা । একে আমরা অন্য কারোর হাতে ছেড়ে দিতে পারিনা ।’।