এইদিন ওয়েবডেস্ক,কাবুল,২১ জুন : সন্ত্রাসবাদী সংগঠন তালিবানদের আর্থিক অবস্থা এতটাই বেহাল হয়ে পড়েছে যে ২০০১ সালে নিজেদের ভাঙা দুটি বিশাল বুদ্ধ মূর্তির অবশিষ্টাংশ থেকে তারা এখন উপার্জনের আশা দেখছে । বুদ্ধ মূর্তির অবশিষ্টাংশ দেখার জন্য টিকিট বিক্রি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তালিবানরা । আফগানিস্তানের হাজারাজাত অঞ্চলে স্থানটি দেখার জন্য আফগানদের ৫৮ সেন্ট এবং বিদেশীদের ৩.৪৫ ডলার করে টিকিটের মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ।
ষষ্ঠ শতাব্দীতে তৈরি বামিয়ান বুদ্ধ নামে পরিচিত মূর্তিগুলি বেলেপাথরের পাহাড়ে খোদাই করা হয়েছিল । যার মধ্যে সবচেয়ে লম্বা বুদ্ধ মূর্তিটি ছিল ১৮০ ফুট । তালিবানের প্রতিষ্ঠাতা সন্ত্রাসী মোহাম্মদ ওমর ২০০১ সালে মূর্তিগুলিকে ‘ভুয়া দেবতা’ আখ্যা দিয়ে ধ্বংস করার নির্দেশ দেয় । বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ওই প্রাচীন মূর্তি দুটি ধ্বংস না করার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে । কিন্তু সেই কথায় কান দেয়নি সন্ত্রাসবাদী মোহাম্মদ ওমর । ওই বছর মার্চ মাসে তালিবানের জঙ্গিরা বিস্ফোরক ও বিমান বিধ্বংসী বন্দুক ব্যবহার করে বুদ্ধ মূর্তিগুলিকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করে ।
পরে ২০২১ সালের আগস্টে দরিদ্র দেশটির নিয়ন্ত্রণ পুনরুদ্ধার করার পর বুদ্ধ মূর্তিগুলির অবশিষ্টাংশ গুলি থেকে রাজস্ব সংগ্রহ করা এবং নিজেদের সন্ত্রাসবাদী তকমা তুলে ফেলতে পর্যটকদের দেখার জন্য খুলে দেয় তালিবান । তালিবানের উপ-সংস্কৃতি মন্ত্রী আতিকুল্লাহ আজিজি ওয়াশিংটন পোস্টকে বলেছেন,’বামিয়ান এবং বিশেষ করে বুদ্ধরা আমাদের সরকারের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, ঠিক যেমন তারা বিশ্বের কাছে।’ তিনি বলেন,’দেশের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যবাহী স্থানগুলো রক্ষার জন্য এক হাজারেরও বেশি প্রহরী নিয়োগ করা হয়েছে ।’
এখন তালিবানের এই সিদ্ধান্ত বামিয়ানের বাসিন্দাদের কাছে চেঞ্জার হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে । গত বছর তালিবানের আঞ্চলিক সরকারের তথ্য ও সংস্কৃতি পরিচালক সাইফুররহমান মোহাম্মদী বলেন, ২,০০,০০০ নিবন্ধিত পর্যটক আফগানিস্তানের ওই প্রদেশটি পরিদর্শন করেছেন । তিনি বলেন, ‘পর্যটকরা গড়ে প্রায় ৫৭ ডলার করে খরচ করেছে । ওই স্থানটি আয়ের উল্লেখযোগ্য উৎস হতে পারে ।’ কিন্তু অতীতের অভিজ্ঞতা থেকে তালিবানদের এখন কেউ বিশ্বাস করতে চাইছে না । পাশাপাশি বুদ্ধ মূর্তি দুটি ধ্বংসের জন্য স্থানীয় আফগানিরাও তালিবানের উপর চরম ক্ষুব্ধ ।।