এইদিন ওয়েবডেস্ক,কাবুল,১১ এপ্রিল : ফের তালিবানি নিষেধাজ্ঞার কবলে পড়ল আফগান মহিলারা । এবার হেরাতের তালিবান-চালিত তথ্য ও সংস্কৃতি বিভাগের কর্মকর্তারা জানিয়ে দিয়েছে যে ঐতিহাসিক স্থানগুলিতে মহিলারা আর প্রবেশ করতে পারবে না । সাম্প্রতিক মাসগুলিতে হেরাত প্রদেশে ঐতিহাসিক স্থানগুলিতে দর্শনার্থীর সংখ্যা বেড়েছে । কিন্তু তালিবানের এই নিষেধাজ্ঞার পর বিভিন্ন বয়সের আফগান মহিলারা ঐতিহাসিক স্থান দর্শন থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন । এদিকে মহিলাদের প্রবেশাধিকার না থাকায় পর্যটকদের সংখ্যাও উল্লেখযোগ্যভাবে কমে গেছে ।
পরিসংখ্যান অনুযায়ী,২০২২ সালের মার্চ থেকে ২০২৩ সালের মার্চ পর্যন্ত অন্তত ১৮,৫০০ পর্যটক হেরাতের ঐতিহাসিক স্থানগুলি পরিদর্শন করেছিলেন যার মধ্যে ২৬০ জন বিদেশী নাগরিক ছিল । কিন্তু মহিলাদের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি হওয়ায় দর্শনার্থীর সংখ্যা কমে গেছে বলে জানিয়েছেন হেরাতের তথ্য ও সংস্কৃতি বিভাগের প্রধান জালমায়ে সাফা । তবে তিনি জানান, নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি নিয়ে নতুন করে চিন্তাভাবনা শুরু হয়েছে । এই বিষয়ে সোমবার তিনি বলেন, ‘ইসলামী আমিরাত (তালেবান) কর্মকর্তারা যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তার ভিত্তিতে সংস্কারের জন্য প্রচেষ্টা চলছে এবং আমরা আশা করি পরিবারের সমস্ত সদস্যদের ঐতিহাসিক স্থানগুলো দেখার অনুমতি দেওয়া হবে ।’
এদিকে হেরাতের বাসিন্দারা বলেছেন যে নিষেধাজ্ঞার আগে মহিলাদের এই ধরনের ঐতিহাসিক স্থানগুলি দেখার অনুমতি দেওয়া হয়েছিল এবং দর্শনার্থীদের সংখ্যাও বেশি ছিল । তালিবানের কাছে এই নিষেধাজ্ঞা তোলার দাবি জানিয়ে হেরাতের বাসিন্দা মুর্তাজা মোহাম্মদী বলেন, ‘প্রত্নসম্পদ এবং ঐতিহাসিক স্থানগুলি আমাদের সংস্কৃতিকে প্রতিফলন করে । একদিকে যেমন সেগুলিকে রক্ষা করা দরকার,অন্য দিকে তেমনি সকল মহিলাদের সেগুলি দেখার অনুমতি দেওয়া উচিত ৷’ তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন,’নারীদের এই ধরনের সাইট দেখার অনুমতি না দেওয়ায় আমি সত্যিই বিরক্ত হয়েছি । আগে আমরা সপরিবারে ঐতিহাসিক স্থানগুলি পরিদর্শন করতাম কিন্তু আমরা আজ (সোমবার) এখানে পরিবার নিয়ে কিছু সময় কাটাতে এসেছিলাম কিন্তু আমাদের বলা হয়েছিল যে তালেবান পাপ-পুণ্য কর্তৃপক্ষ নারীদের এই সাইটগুলি দেখার অনুমতি না দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে ।’
প্রসঙ্গত,হেরাত আফগানিস্তানের বৃহত্তম শহরগুলির মধ্যে একটি। এখানে আট শতাধিক ঐতিহাসিক স্থান রয়েছে । প্রতিবছর ঐতিহাসিক স্থান দর্শনের বহু পর্যটকের আগমন হয় এখানে । ফলে পর্যটন থেকে মোটা অঙ্কের রাজস্ব আয় হত । কিন্তু তালিবানের নিষেধাজ্ঞার জেরে তা কার্যত বন্ধ হয়ে গেছে । এনিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন হেরাতের বাসিন্দা ফতিমা মোহাম্মদি নামে একজন মহিলা ।।