দিব্যেন্দু রায়,ভাতার(পূর্ব বর্ধমান),১৭ সেপ্টেম্বর : দিনে নির্মান শ্রমিকের কাজ সেরে রাতে বাড়িতে দর্জির কাজ করতেন বছর ৪৬-এর এক ব্যক্তি । তাতেই স্ত্রী ও ছেলেকে নিয়ে তিনজনের সংসারের কোনো রকমে অন্ন সংস্থান হত । প্রতি বছর বিশ্বকর্মা পূজোর সময় উপার্জনের অন্যতম উৎস ওই সেলাই মেশিনটিকে ভক্তি ভরে পূজো করতেন তিনি । এবারেও তার ব্যাতিক্রম হয়নি । পূজোর জন্য শনিবার সকালেই ছুটেছিলেন গ্রামের একটি পুকুর থেকে পদ্মফুল তুলতে । কিন্তু এবারে আর পূজো করা হল না তাঁর । পদ্মফুল গাছের লতা পায়ে জড়িয়ে জলে ঢুবে মৃত্যু হল তাঁর । ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ব বর্ধমান জেলার ভাতার থানার সেরুয়া গ্রামে। মৃতের নাম জগাই বাগ । পূজোর দিনে মর্মান্তিক এই ঘটনায় শোকস্তব্ধ পরিবার পরিজন ।
জানা গেছে,পাঁচ ভাইয়ের মধ্যে সর্ব কনিষ্ঠ ছিলেন জগাই বাগ । প্রত্যেকেই বিবাহিত । সকলে পৃথক সংসারে থাকেন । জগাইবাবুর বাড়িতে রয়েছেন স্ত্রী কবিতাদেবী এবং একমাত্র ছেলে জ্যোতিন্দ্র । এক মেয়ের বিয়ে হয়ে গেছে । জ্যোতিন্দ্র স্থানীয় একটি স্কুলের সপ্তম শ্রেণীর ছাত্র । নির্মান শ্রমিকের কাজের পাশাপাশি অবসরে টুকটাক সেলাইয়ের কাজ করে সেই উপার্জনে ছেলের পড়াশোনা ও সংসারের খরচ জোটাতেন ।
পরিবার সুত্রে জানা গেছে,এদিন বিশ্বকর্মা পুজোর জন্য কাজে যাননি জগাইবাবু । একমাত্র সেলাই মেশিনটির পূজোর জন্য সকাল থেকেই প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন । তারই মাঝে এক সময়ে সাইকেল নিয়ে তিনি বাড়ি থেকে বেড়িয়ে যান । কিন্তু দীর্ঘক্ষণ ধরে তিনি বাড়ি না ফেরায় খোঁজ শুরু হয় । পরে সেরুয়া ও বামুনাড়া গ্রামের মাঝামাঝি এলাকায় মালদিঘি পুকুর পাড়ে তাঁর সাইকেল ও পড়নের লুঙ্গিটি পড়ে থাকতে দেখা যায় । তারপর স্থানীয় লোকজন জল নেমে পদ্ম গাছের লতানে কান্ডতে জড়ানো অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করে । খবর পেয়ে ভাতার থানার পুলিশ মৃতদেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠায় । এদিকে পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম সদস্যের আকস্মিক মৃত্যুতে পথে বসেছে অসহায় ওই পরিবারটি ।।