এইদিন ওয়েবডেস্ক,নয়াদিল্লি,৩০ আগস্ট : দিল্লির মজনু কা টিলায় বসবাসকারী পাকিস্তান থেকে আগত প্রায় ৮০০ হিন্দু শরণার্থীকে সরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল দিল্লি হাইকোর্ট । কিন্তু আজ শুক্রবার (২৯ আগস্ট ২০২৫) সুপ্রিম কোর্ট হিন্দু শরণার্থীদের সরিয়ে নেওয়ার হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত করেছে । বিচারপতি এমএম সুন্দরেশ এবং বিচারপতি এন কোটিশ্বর সিং-এর একটি বেঞ্চ এই বিষয়ে কেন্দ্রীয় সরকার এবং দিল্লি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (ডিডিএ) কে নোটিশ জারি করেছে এবং ২০২৫ সালের মে মাসে দিল্লি হাইকোর্টের দেওয়া আদেশ আপাতত স্থগিত করেছে। এদিকে সুপ্রিম কোর্টের এই রায়ের পর মজনু কা টিলায় বসবাসকারী হিন্দু শরণার্থীরা উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে ।
ডিডিএ ২০২৪ সালের মার্চ এবং জুলাই মাসে শরণার্থী শিবির খালি করার জন্য নোটিশ জারি করেছিল, কিন্তু সেই সময়ে কোনও পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। ২০২৫ সালের জুলাই মাসে আবার নোটিশ সাঁটানো হয়েছিল, যার ফলে আশঙ্কা তৈরি হয়েছিল যে তাদের যে কোনও সময় এখান থেকে উচ্ছেদ করা হতে পারে। ধর্মবীর বাগদি এবং অন্যান্যরা অ্যাডভোকেট বিষ্ণু শঙ্কর জৈনের মাধ্যমে সুপ্রিম কোর্টে এই আবেদনটি দায়ের করেছিলেন। আবেদনকারীরা বলেছেন যে হাইকোর্টের আদেশ সংবিধানের ২১ অনুচ্ছেদ লঙ্ঘন করে। এই অনুচ্ছেদ অনুযায়ী মর্যাদার সাথে বেঁচে থাকার এবং জীবনযাপনের অধিকারকে অনুমোদন করে। তারা বলেন, ছাদ ছাড়া একজন ব্যক্তি মর্যাদার সাথে বাঁচতে পারে না এবং এটি তাদের কর্মসংস্থানের অধিকারকেও প্রভাবিত করে।
উল্লেখ্য, এই শরণার্থীরা পাকিস্তানের ইসলামিক মৌলবাদীদের নির্যাতন থেকে বাঁচতে ভারতে এসেছেন। প্রায় ২৫০-২৬০টি পরিবার ক্যাম্পে বসবাস করছে, যাদের মধ্যে কিছু ভারতীয় নাগরিকত্ব পেয়েছে, বাকিদের আবেদন প্রক্রিয়াধীন। এই মানুষদের বেশিরভাগই অত্যন্ত দরিদ্র এবং দিনমজুরি, পরিচারিকার কাজ ইত্যাদি করে জীবিকা নির্বাহ করে। বেশিরভাগ মানুষ তফসিলি জাতি থেকে এসেছেন।
আবেদনে বলা হয়েছে যে, হাইকোর্ট ১২ ডিসেম্বর ২০১৯ তারিখে কার্যকর হওয়া নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন (CAA) উপেক্ষা করেছে, যা ৩১ ডিসেম্বর ২০১৪ পর্যন্ত পাকিস্তান, আফগানিস্তান এবং বাংলাদেশ থেকে ভারতে আসা হিন্দু, শিখ, বৌদ্ধ, জৈন, পার্সি এবং খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের লোকদের নাগরিকত্ব প্রদান করে। আইনজীবীরা বলেন, ডিডিএ-এর উচিত এই শরণার্থীদের জন্য বিকল্প আবাসন বা পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা, কারণ তাদের জোরপূর্বক অপসারণ মানবাধিকারের লঙ্ঘন।।

