এইদিন ওয়েবডেস্ক,কলকাতা,১৩ অক্টোবর : রাজ্যের চিটফান্ড কেলেঙ্কারি, শিক্ষক নিয়োগ ও রেশন দুর্নীতি মামলা মামলা হোক বা আরজি করের অভয়ার ধর্ষণ বা গনধর্ষণ খুন মামলা, দুই কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ইডি ও সিবিআইয়ের তদন্ত প্রক্রিয়ায় ক্ষুব্ধ সাধারণ মানুষ । এবারে সারদা চিটফান্ড কান্ডে রাজ্য পুলিশের ডিজি রাজীব কুমারের বিষয়েও সিবিআইয়ের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিল খোদ সুপ্রিম কোর্ট । এই মামলায় রাজীব কুমারকে ২০১৯ সালে আগাম জামিন দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্ট। সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে সিবিআই সুপ্রিম কোর্টে আবেদন জানায় । আজ সোমবার সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি বি আর গাভাই ও বিচারপতি কে বিনোদ চন্দ্রনের বেঞ্চে সেই মামলার শুনানি ছিল । কিন্তু দীর্ঘ ৬ বছর পর কেন এই মামলা উঠল? এই প্রশ্ন তোলে বিচারপতি দ্বয়ের বেঞ্চ । যদিও সিবিআইয়ের পক্ষে সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা দাবি করেন যে তদন্তে বাধা দেওয়া হয়েছে।
প্রসঙ্গত,সারদা চিটফান্ড কান্ডে কলকাতা পুলিশ কমিশনার ছিলেন রাজীব কুমার । ২০১৪ সালে সুপ্রিম কোর্ট এই মামলার তদন্তভার পুলিশের কাছ থেকে নিয়ে সিবিআইকে দেয়। তার বিরুদ্ধে তথ্যপ্রমাণ লোপাট ও বিকৃত করার অভিযোগ তুলেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা । যদিও অভিযোগ অস্বীকার করেন রাজীব। শিলংয়ে পাঁচদিন ধরে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে । পরে কলকাতাতেও সিবিআইয়ের দপ্তরে হাজিরা দিয়েছিলেন তিনি । রাজীব কুমার তদন্তে সহযোগিতা করছেন না বলে অভিযোগ তুলে সিবিআই তাকে হেপাজতে চেয়ে আবেদন করে । কিন্তু ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে সুপ্রিম কোর্ট রাজীবকে অন্তর্বর্তী রক্ষাকবচ দেয়। পরে ওই বছর মে মাসে সেই রক্ষাকবচ প্রত্যাহার করে আদালত । তারপর এই মামলায় আর কোনও হেলদোল ছিল না সিবিআইয়ের । ৬ বছরে সারদা চিটফান্ড কেলেঙ্কারি মামলার মাত্র দু’বার শুনানি হয়েছে।
এদিন শুনানির শুরুতেই প্রধান বিচারপতি প্রশ্ন তোলেন, ‘ছ’বছর পরে কেন এলেন?’ তুষার মেহতা বলেন, ‘তদন্তে বাধা দেওয়া হয়েছে। আমরা ছয় বছর পর আগাম জামিন নিয়ে কিছু বলছি না, কিন্তু সিবিআই অফিসারদের কাজ বাধাপ্রাপ্ত হয়েছে। এর সঙ্গে আদালত অবমাননার বিষয়ও শুনানি হোক।’ প্রধান বিচারপতি পালটা প্রশ্ন, ‘আমরা তো নোটিশ ইস্যু করেছিলাম। ছ’বছর ধরে কী করেছেন?’ রাজীব কুমারের আইনজীবী জানান, ‘গত ছ’বছরে একবারও তলব করা হয়নি। তদন্তে সবরকম সহযোগিতা করা হয়েছে। শুধুমাত্র হয়রানি করতেই এই মামলা তোলা হয়েছে।’ প্রধান বিচারপতি সিবিআইকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘গত ছ’বছর ধরে আপনারা কী করেছেন? এতদিন মামলা ঝুলিয়ে রাখার প্রয়োজন কী? মঙ্গলবার অবমাননা সংক্রান্ত শুনানি হোক, না হলে আমরা মামলা খারিজ করে দেব।’ তুষার মেহতা তখন বলেন, ‘পুরো বিষয়টি শুনলে আপনারা অবাক হবেন। কেন ছ’বছর ধরে মামলা ঝুলে আছে, তার কারণ গুরুতর।’ তুষার মেহতা বলেন, ‘আমাকে বিশ্বাস করুন, এই মামলায় গুরুতর বিষয় আছে।’ এই মামলার পরবর্তী শুনানির দিন আগামী শুক্রবার ধার্য করা হয়েছে । এদিকে বিধানসভার ভোটের ঠিক মুখেই যদি সর্বোচ্চ আদালত আবেদন মেনে রাজীব কুমারের সিবিআইয়ের হেফাজত মঞ্জুর করে তাহলে রাজ্য সরকার চাপে পড়ে যাবে বলে মনে করা হচ্ছে ।।

