দিব্যেন্দু রায়,কাটোয়া(পূর্ব বর্ধমান),২৩ এপ্রিল : শনিবার থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত সাড়ে তিন বছরের কন্যাসন্তানকে রক্ত দিতে পূর্ব বর্ধমান জেলার কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালের এসেছিলেন পরিবারের লোকজন । কিন্তু তাঁরা দেখেন হাসপাতালের হেমরাজ ব্লাডসেন্টার রক্তশূণ্য । ফলে চরম বিপাকে পড়ে যায় শিশুর পরিবার । রক্তদানের জন্য হাসপাতালে আগত মানুষজনের কার্যত হাতেপায়ে ধরাধরি শুরু করেন শিশুর মা । কিন্তু জোটেনি রক্তদাতা । এই পরিস্থিতিতে শিশুটিকে রক্ত দিতে এগিয়ে আসেন খোদ হাসপাতাল সুপার ডাঃ সৌভিক আলম । তিনি বলেন,’ কয়েকদিন ধরেই ব্লাডসেন্টারে রক্তসংকট চলছে । ওই বাচ্চা মেয়েটির রক্তের খুব প্রয়োজন ছিল । বাচ্ছার ও আমার রক্তের গ্রুপ এক হওয়ায় আমিই রক্ত দিলাম ।’ পাশাপাশি তিনি ব্লাডসেন্টারে রক্তসংকট পরিস্থিতিতে এলাকাবাসীকে রক্তদানের আহ্বান জানান ।
জানা গেছে, পূর্বস্থলী থানার পাটুলির বাসিন্দা গণপতি পণ্ডিত ও টুম্পা পণ্ডিতের দুই মেয়ের মধ্যে ছোট বর্ষা । গণপতিবাবু রাজমিস্ত্রির কাজ করেন । জন্মের পর থেকেই থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত বর্ষা । টুম্পাদেবী বলেন,’গত ৯ মার্চ মেয়েকে কাটোয়া হাসপাতালে নিয়ে এসে রক্ত দিতে হয়েছিল । ফের রক্তের প্রয়োজন পড়লে এদিন মেয়েকে নিয়ে হাসপাতালে এসেছিলাম । কিন্তু ব্লাডসেন্টারে এসে দেখি এক বোতলও রক্ত নেই । খুব অসহায় হয়ে পড়েছিলাম । হাসপাতালে মেয়েকে নিয়ে ঘুরছিলাম আর যাকে সামনে পেয়েছি তাকেই রক্ত দেওয়ার জন্য অনুরোধ করেছি । শেষে হাসপাতালের সুপার সাহেব রক্ত দিতে এগিয়ে আসেন ।’
জানা গেছে,টুম্পাদেবীর অসহায়ভাবে হাসপাতাল চত্বরে ঘুরে বেড়ানোর কথা কাটোয়া হাসপাতালের সুপার ডাঃ সৌভিক আলমের কানে যায় । তিনি খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন শিশুর ও তাঁর রক্ত এক । এরপর তিনি ব্লাডসেন্টারে এসে রক্তদান করেন । সেই রক্তই দেওয়া হয় ছোট্ট বর্ষাকে । হাসপাতাল সুপারের এই মানবাধিকায় আপ্লুত শিশুর পরিবার ।।