এইদিন ওয়েবডেস্ক,পাঁশকুড়া(পূর্ব মেদিনীপুর),১৫ সেপ্টেম্বর : পূর্ব মেদিনীপুর জেলার পাঁশকুড়ার সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে ওয়ার্ড গার্ল হিসাবে কর্মরত দুই বোনকে ধর্ষণের ঘটনায় “রিলায়েবেল ফেসিলিটি সার্ভিস প্রাইভেট লিমিটেড” নামে একটি বেসরকারি সংস্থার ফেসিলিটি ম্যানেজার শেখ জাহির আব্বাস খানকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ । আজ মঙ্গলবার তাকে তমলুক জেলা আদালতে তোলে পাঁশকুড়া থানার পুলিশ । এদিকে হাসপাতালের সুপার ডঃ কৌশিক ধরের বিরুদ্ধে উঠছে মারাত্মক সব অভিযোগ । অভিযোগ যে তিনি সব জেনেশুনেও ব্যক্তিগত স্বার্থে মুখে কুলুপ এঁটেছিলেন । এমনকি জাহিরকে একটি ব্যক্তিগত ঘর দিয়ে তার অনৈতক কাজে সহযোগিতা করার অভিযোগ উঠছে সুপারের বিরুদ্ধে । জাহিরকে প্রশ্রয় দেওয়ার অভিযোগ উঠছে শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধেও । এদিকে আজ হাসপাতালের অস্থায়ী কর্মী ও নিরাপত্তা রক্ষীরা সুপারের পদত্যাগের দাবিতে তাকে ঘিরে তুমুল বিক্ষোভ দেখায় । পাশাপাশি ঘটনার তদন্তভার সিবিআইয়ের হাতে তুলে দেওয়ার দাবিতে সুপারের কাছে ডেপুটেশন দেয় বিজেপি৷ অন্যদিকে আদালতে নিয়ে যাওয়ার সময় ধৃত শেখ জাহির আব্বাস খান দাবি করেছে যে বিজেপি তাকে চক্রান্ত করে ফাঁসিয়েছে ।
এদিকে অভিযোগ উঠছে,পাঁশকুড়ার পীতপুর সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের ভেতরে শুধু ওয়ার্ড গার্ল হিসাবে কর্মরত দুই বোনকেই নয়,বরঞ্চ আরও ২ জন চুক্তিভিত্তিক মহিলা স্বাস্থ্যকর্মীও শেখ জাহির আব্বাস খানের লালসার শিকার হয়েছিল বলে অভিযোগ । তৃণমূলের ছত্রছায়ায় বেড়ে ওঠা ফেসিলিটি ম্যানেজার শেখ জাহির আব্বাস খানকে হাসপাতালের সুপার ডঃ কৌশিক ধর নিজ স্বার্থে তাকে জামাই আদর করে রেখেছিল বলে অভিযোগ তুলেছেন হাসপাতালের অস্থায়ী কর্মী ও নিরাপত্তা রক্ষীরা। আজ সুপারকে ঘিরে বিক্ষোভের সময় তাঁরা সংবাদমাধ্যমের সামনে হাটে হাঁড়ি ভেঙে দেন । বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, ‘সুপারের গাড়ির প্রতি মাসে তেল লাগে কুড়ি হাজার টাকা । ওই টাকা জাহির দিত। বিনিময়ে সুপার জাহিরকে জামাই আদরে রেখে দিয়েছিল । হাসপাতাল ফার্স্ট ফ্লোরের ১১০ নম্বর রুমে জাহিরের থাকার ব্যবস্থা করে দিয়েছিল সুপার । তাকে বিছানা, খাওয়া দাওয়া সহ যাবতীয় সুবিধা দেওয়া হত । জাহির আব্বাস ২৪ ঘন্টা হাসপাতালে থাকত ।’ এমনকি হাসপাতালের সুপার ডঃ কৌশিক ধরের অনুপস্থিতিতে তার যাবতীয় কাজ জাহির আব্বাস দেখাশোনা করত বলে অভিযোগ । শুধু তাইই নয়, সুপার হিসাবে যেইই আসুন না কেন তৃণমূলের নেতাদের মদতে জাহির তাদের পটিয়ে অনৈতিক কর্মকাণ্ড চালাত বলে অভিযোগ তাদের ৷ অস্থায়ী কর্মীরা বলেন, ‘তার এতটাই প্রভাব ছিল যে আমরা আন্দোলন করার জন্য রাস্তায় একজনকে ধরে মেরেছে এই জাহির আব্বাস খান ।’
এদিকে আজ পাঁশকুড়া সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে ধর্ষণ ঘটনায় সুপারের সঙ্গে দেখা করলেন বিজেপির জেলা সভাপতি সহ অন্যান্য নেতৃত্বরা, তাদের দাবি অভিযুক্ত সহ জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হোক । পাশাপাশি তারা সিবিআই তদন্তের দাবিও জানান । সিবিআই তদন্ত ছাড়া একই দাবি তুলেছে তৃণমূল ও সিপিএমও ।।