এইদিন ওয়েবডেস্ক,কলকাতা,১৯ আগস্ট : শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় চরম বিপাকে পড়ে গেল মমতা ব্যানার্জির নেতৃত্বাধীন পশ্চিমবঙ্গের তৃণমূল কংগ্রেস সরকার । ২০১৬ সালের এসএসসি নিয়োগের প্যানেল বাতিলের নির্দেশ পুনর্বিবেচনার আর্জি জানিয়েছিল রাজ্য সরকার । কিন্তু আজ মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্ট রিভিউ পিটিশন খারিজ করে দিয়েছে । ফলে প্রায় কুড়ি হাজার শিক্ষক-শিক্ষাকর্মীর ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে । সর্বোচ্চ আদালতের এই রায়ের পর বিজেপির সর্বভারতীয় আইটি ইনচার্জ অমিত মালব্য ‘যোগ্য শিক্ষকদের সাথে মমতা ব্যানার্জির বিশ্বাসঘাতকতা’ বলে মন্তব্য করেছেন ।
প্রসঙ্গত,সুপ্রিম কোর্ট গত ৩ এপ্রিল রায় ঘোষণা করে ২০১৬ সালের এসএসসি নিয়োগের পুরো প্যানেল বাতিল করে দিয়েছিল । প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্না ও সঞ্জয় কুমারের ডিভিশন বেঞ্চের রায়ে একসঙ্গে চাকরি খোয়ান ২৫,৭৩৫ জন শিক্ষক-শিক্ষাকর্মী। শীর্ষ আদালত জানিয়েছিল, সঠিক তথ্য না থাকায় যোগ্য এবং অযোগ্যদের আলাদা করা সম্ভব হয়নি। তাই পুরো প্যানেল বাতিল করা হয়েছে। নতুন করে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করতে হবে এসএসসিকে। দাগি বা চিহ্নিত অযোগ্যদের বেতন ফেরত দিতে হবে।এরপরই ৭ এপ্রিল কলকাতার নেতাজী ইনডোর স্টেডিয়ামে চাকরিহারাদের নিয়ে সভা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি যোগ্য ও অযোগ্য উভয়ের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছিলেন । সেদিন মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছিলেন যে সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পুনর্বিবেচনার আর্জি জানাবে রাজ্য সরকার। তিনি সকলকে রিভিউ পিটিশনের উপর ভরসা রাখতেও বলেন। এছাড়াও তিনি আশ্বাস দিয়েছিলেন যে ‘তিনি বেঁচে থাকতে কোনও যোগ্য প্রার্থীর চাকরি যাবে না।’ কিন্তু আজকের সুপ্রিম কোর্টের এই রায়ের পর যোগ্য চাকরিপ্রার্থীদের ভবিষ্যৎ কার্যত অন্ধকারের মুখে পড়ে গেল ।
অমিত মালব্য টুইট করেছেন,সুপ্রিম কোর্ট পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষক নিয়োগ কেলেঙ্কারির পুনর্বিবেচনার আবেদন খারিজ করে দিয়েছে – যা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তার সরকারের বিরুদ্ধে একটি গুরুতর অভিযোগ, যা লক্ষ লক্ষ তরুণ-তরুণীর স্বপ্নকে ধ্বংস করে দিয়েছে। রায়ের মূল বিষয়গুলি: স্কুল সার্ভিস কমিশন মূল ওএমআর শিট (অথবা এমনকি মিরর কপি) সংরক্ষণ করতে ব্যর্থ হয়েছে, যার ফলে প্রকৃত যাচাই অসম্ভব হয়ে পড়েছে। কর্তৃপক্ষের ত্রুটি এবং অবৈধতার আড়াল সমগ্র নির্বাচন প্রক্রিয়াকে ঝুঁকির মুখে ফেলেছে।’
তিনি আরও লিখেছেন,’কর্তৃপক্ষের ত্রুটি ও অবৈধতার আড়াল সমগ্র নির্বাচন প্রক্রিয়াকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। আদালত বলেছে যে প্রক্রিয়াটি গভীরভাবে কলঙ্কিত এবং নিয়োগের পবিত্রতা রক্ষা করার জন্য এটি বাতিল করতে হয়েছে। যদিও কলঙ্কিত প্রার্থীদের স্বার্থ রক্ষার জন্য প্রচেষ্টা করা হয়েছিল, আদালত স্পষ্ট করে দিয়েছে যে প্রক্রিয়াটির বিশুদ্ধতা সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ। কমিশন এবং কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে কঠোর মন্তব্য “সম্পূর্ণরূপে যুক্তিসঙ্গত এবং ন্যায্য” ছিল যে হাজার হাজার তরুণের ক্যারিয়ার নষ্ট করেছে। এই রায়টি প্রকাশ করে যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দুর্নীতিগ্রস্ত ব্যবস্থা কীভাবে বাংলার উচ্চাকাঙ্ক্ষী শিক্ষকদের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে এবং তাদের ভবিষ্যৎকে পদদলিত করেছে।’।

