এইদিন ওয়েবডেস্ক,কলকাতা,১০ জুলাই : তফসিলি জাতি ও উপজাতিদের কোটা কেটে মুসলিম সম্প্রদায়কে সংরক্ষণ পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগে অভিযুক্ত তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা ব্যানার্জি । খোদ সর্বোচ্চ আদালত স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে যে “ধর্মের ভিত্তিতে সংরক্ষণ হতে পারে না” । সর্বোচ্চ আদালত ৭৫টি মুসলিম সম্প্রদায়কে সংরক্ষণের আওতা থেকে বাদ দেওয়ার নির্দেশ দেয় । এবারে জেনারেল ক্যাটাগরির অর্থনৈতিকভাবে দুর্বল অংশ (EWS)-এর কোটা থেকে ওই মুসলিম সম্প্রদায়কে ইডবলুএসে নিবন্ধনের ছাড়পত্র দেওয়ার অভিযোগ উঠল । অভিযোগটি তুললেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী ৷ আজ বৃহস্পতিবার রাজ্যপালকে চিঠি লিখে ‘গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের’ আবেদন জানিয়েছেন তিনি ।
রাজ্যপালকে লেখা চিঠিটি এক্স-এ শেয়ার করে শুভেন্দু অধিকারী লিখেছেন,’২০২৪ সালে মহামান্য কলকাতা উচ্চ আদালত রাজ্যের ওবিসি তালিকা থেকে ৭৫টি মুসলিম সম্প্রদায়কে বাদ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন। কারণ হিসেবে মহামান্য কলকাতা উচ্চ আদালত বলেছিলেন যে শুধুমাত্র ধর্মের ভিত্তিতে এই সম্প্রদায়গুলিকে ওবিসি তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল। রাজ্য সরকার এখন এক নতুন অভিসন্ধি বের করেছে। মহামান্য উচ্চ আদালতের নির্দেশে বাদ পড়া সেই সম্প্রদায় গুলিকে অর্থনৈতিক ভাবে দুর্বল শ্রেনীভুক্তের (EWS) আওতায় নিবন্ধনের জন্য আবেদন করার ছাড়পত্র দেওয়া হচ্ছে, যাতে তারা অর্থনৈতিক ভাবে দুর্বল শ্রেণীর সুযোগ সুবিধা পেতে পারেন। এর ফলে প্রকৃত অর্থে জেনারেল ক্যাটাগরি-র অর্থনৈতিক ভাবে দুর্বল যারা এই পরিকাঠামোর সুবিধাভোগী, তাদের কোটায় ভাগ বসবে। মমতা সরকারের এই পদক্ষেপ সম্পূর্ণভাবে সংবিধানের পরিপন্থী।’
তিনি আরও লিখেছেন,’মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের অর্থনৈতিকভাবে দুর্বল শ্রেণীর (EWS) জন্যে নির্দিষ্ট পরিকাঠামোর এই অনৈতিক অপব্যবহারে আমি উদ্বিগ্ন, যে কারণে মহামান্য রাজ্যপাল মহোদয়ের কাছে আমি লিখিতভাবে আবেদন জানিয়েছি, যাতে তিনি অবিলম্বে এই বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করেন।’
প্রসঙ্গত,ওবিসির মধ্যে ৭৭ টি জনজাতিকে অন্তর্ভুক্ত করেছিল মমতা ব্যানার্জির নেতৃত্বাধীন তৃণমূল কংগ্রেস সরকার রাজ্য। তার বেশিরভাগই ছিল মুসলমান সম্প্রদায়ের । মামলাটি সর্বোচ্চ আদালতে গড়ায় । কলকাতা হাইকোর্ট মুসলমানদের ওবিসি সংরক্ষণ দেওয়ার বিষয়টি খারিজ করে দিয়েছিল৷ হাইকোর্টের ২০২৪ সালের ২২ মে-র রায়কে চ্যালেঞ্জ করে রাজ্য সরকার সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়৷ গত বছরের ডিসেম্বর মাসে এই মামলার শুনানিতে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি বিআর গভাই এবং বিচারপতি কেভি বিশ্বনাথনের ডিভিশন বেঞ্চ স্পষ্ট ভাষায় বলেছিল, ধর্মের ভিত্তিতে সংরক্ষণ দেওয়া সম্ভব নয়।
তার আগে হাইকোর্ট বলেছিল,”এই সম্প্রদায়গুলিকে ওবিসি হিসেবে ঘোষণা করার জন্য ধর্মই একমাত্র মাপকাঠি বলে মনে হচ্ছে।” হাইকোর্ট আরও বলেছে, “৭৭টি শ্রেণীর মুসলিমদেরকে পিছিয়ে পড়া হিসেবে নির্বাচন করা সমগ্র মুসলিম সম্প্রদায়ের জন্য অপমানজনক”। সরকারি চাকরি এবং রাষ্ট্র পরিচালিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে তাদের জন্য সংরক্ষণকে অবৈধ বলে ঘোষণা করেছিল হাইকোর্ট ।।

