এইদিন ওয়েবডেস্ক,কলকাতা,২০ আগস্ট : কলকাতার আরজি কর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তরুনী চিকিৎসককে গনধর্ষণ-খুনের ঘটনায় চরম বিপাকে পড়ে গেছে শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস । হত্যাকাণ্ডের তথ্য গোপন করার অভিযোগ তো উঠছিলই, তার মাঝে হাসপাতালের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষের আমলে মাদক র্যাকেট,সেক্স র্যাকেট চালানো ও আর্থিক অনিয়মের বিস্তর অভিযোগ তোলা হচ্ছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে । এবারে সন্দীপ ঘোষের আমলে আর্থিক অনিয়মের অভিযোগে স্পেশাল ইনভেস্টিগেশন টিম(SIT) গঠন করল মমতা ব্যানার্জির নেতৃত্বাধীন তৃণমূল কংগ্রেস সরকারের প্রশাসন । আইজি প্রণব কুমারের নেতৃত্বে চার সদস্যের তদন্ত কমিটিতে রয়েছেন ডিআইজি মুর্শিদাবাদ ওয়াকার রেজা, সিআইডি সোমা দাস মিত্র এবং ডিসি সেন্ট্রাল ইন্দিরা মুখোপাধ্যায় ।
এদিকে এই সিট গঠনকে প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষকে বাঁচাতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির পরিকল্পনা হিসাবেই দেখছে বিজেপি । বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বিজেপি নেতা অমিত মালব্য টুইট করেছেন, ‘এখন, পশ্চিমবঙ্গ সরকার আরজি কর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের অসম্মানিত অধ্যক্ষ ডঃ সন্দীপ ঘোষের আর্থিক অনিয়মের অভিযোগের তদন্তের জন্য একটি সিট গঠন করেছে। ৪ জন আইপিএস অফিসার এসআইটির অংশ। আর্থিক অপরাধের তদন্তে কিভাবে পুলিশ কর্মকর্তাদের দ্বারা করা সম্ভব ? এটা ঘোষকে বাঁচাতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পদক্ষেপ ছাড়া আর কিছুই নয়। পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ ঠিক সময়েই সন্দীপ ঘোষকে গ্রেপ্তার করবে, যাতে সিবিআই তাকে হেফাজতে নিতে না পারে।’ তিনি আরও লিখেছেন, ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পদত্যাগ না করলে মহিলা ডাক্তারের ধর্ষণ ও হত্যার অবাধ ও সুষ্ঠু তদন্ত সম্ভব নয়। তাকে এখনই পদত্যাগ করতে হবে।’
সিপিএম নেতা তথা কলকাতা হাইকোর্টের আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্যও রাজ্য প্রশাসনের এই উদ্যোগকে সন্দেহের নজরে দেখছেন । তিনি সংবাদ মাধ্যমকে বলেছেন,এটা রাজ্য সরকারের আরও একটা বদ বুদ্ধির প্রকাশ। এখন যেহেতু সিবিআই এই নিয়ে তদন্ত করছে, অনেক প্রশ্ন উঠছে। সেটাকে ধামাচাপা দিতেই রাজ্যের এটা পরিকল্পনা।’
প্রসঙ্গত,আরজি করের তরুনী চিকিৎসককে গনধর্ষণ ও নৃশংস বর্বরোচিত হত্যাকাণ্ডের ঘটনার তোলপাড়ের মাঝে সন্দীপ ঘোষের বিরুদ্ধে আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ উঠছে । অবশ্য সন্দীপের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ এই প্রথম নয় । জানা গেছে,এর আগে গত একবছর ধরে আরজি করে অধ্যক্ষ থাকাকালীন আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছিল সন্দীপ ঘোষের বিরুদ্ধে । সেই সময় ডেপুটি সুপার নন মেডিক্যাল আখতার আলি ভিজিল্যান্সে চিঠি করেন। স্বাস্থ দফতরের ভিজিল্যান্স বিভাগে তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ রয়েছে । স্বাস্থ্য ভবনের শীর্ষ কর্তার দফতরের তরফে সেই ফাইল প্রশাসনের শীর্ষ স্তরে পাঠানোও হয় । এরপর স্বাস্থ্য দপ্তর থেকে ১৬ আগস্ট জারি করা সিট গঠনের বিজ্ঞপ্তি ১৯ তারিখ অর্থাৎ সোমবার তা প্রকাশ্যে আনা হয়েছে । যা নিয়ে রাজ্য সরকারের সদিচ্ছা নিয়ে বিস্তর প্রশ্ন উঠছে । প্রশ্ন উঠছে যে সিবিআই সন্দীপ ঘোষকে জেরা করার মাঝেই কেন সিট গঠন করা হল? তাহলে কি সন্দীপকে সিবিআইয়ের খপ্পর থেকে বাঁচাতে চাইছেন মমতা ব্যানার্জি ?