এইদিন ওয়েবডেস্ক,বর্ধমান,০৭ নভেম্বর : খোদ বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসায় গাফেলতির কারনে এক রোগিনীর মৃত্যুর অভিযোগ উঠল । বীরভূম জেলার বোলপুর থানার রামচন্দ্রপুর গ্রামের বাসিন্দা নমিতা বাগদী নামে বছর চুয়াল্লিশের এক মহিলাকে গত ২১শে অক্টোবর বাড়িতে বিষধর সাপে কামড়ালে বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয় । চিকিৎসার পর তিনি সুস্থ থাকলেও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন একই নামে অন্য এক রোগিনীর রক্ত তার শরীরে প্রয়োগ করা হয় বলে অভিযোগ । তারপর থেকেই নমিতা বাগদীর অবস্থার অবনতি হতে শুরু করে । অবশেষে আজ শুক্রবার ওই রোগিনীর চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় । এই ঘটনায় মৃতার ছেলে রাহুল বাগদী অভিযুক্ত চিকিৎসক ও নার্সদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির দাবি জানিয়েছে বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সুপারের কাছে ।
জানা গেছে,গত ২১শে অক্টোবর বোলপুর থানার রামচন্দ্রপুর গ্রামের বাসিন্দা বাসিন্দা নমিতা বাগদীকে বাড়িতে সাপে কামড়ায় । তাকে প্রথমে বোলপুরের সিয়ান হাসপাতালে ভর্তি করা হয় । কিন্তু অবস্থার অবনতি হলে তাকে প্রাথমিক চিকিৎসার পর বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করে দেওয়া হয় । নমিতা বাগদী যে বেডে ভর্তি ছিলেন তার পাশের বেডে চিকিৎসাধীন ছিলেন পূর্ব বর্ধমান জেলার ভাতার থানার বলগোনার বাসিন্দা নমিতা মাঝি নামে এক মহিলা । ওই মহিলা রক্তাল্পতায় ভুগছেন । নমিতা মাঝির পরিবারের লোকজনকে দুটি কাগজ দিয়ে ব্ল্যাড ব্যাঙ্ক থেকে রক্ত আনতে বলা হয় ।
জানা গেছে,নমিতা মাঝির ছেলে সঞ্জিত মাঝি রক্ত জোগাড় করে আনার আনার পর সেই রক্তের বেশকিছুটা নমিতা মাঝির বদলে পাশের বেডে ভর্তি থাকা বোলপুর থানার রামচন্দ্রপুর গ্রামের বাসিন্দা নমিতা বাগদীর শরীরে ঢুকিয়ে দেওয়া হয় । মৃতার ছেলে রাহুল বাগদী হাসপাতাল সুপারের কাছে আজ অভিযোগপত্রে জানিয়েছেন, আমার মা কিছুদিন ভর্তি থাকার পর অবস্থার উন্নতি হয় । কিন্তু কর্তব্যরত চিকিৎসক ও নার্সদের গাফেলতিতে একই নামে রোগী “নমিতা মাঝি”র রক্ত আমার মা নমিতা বাগিদীর শরীরে প্রয়োগ করা হয় । অথচ বিষয়টি আমাদের জানানোই হয়নি । যখন আমার মায়ের স্বাস্থ্যের অবনতি হতে থাকে তখন মাকে এইচসিসিএল-এ স্থানান্তরিত করে দিলে বিষয়টি আমরা জানতে পারি । কিন্তু আজ শুক্রবার ভোরে আমার মা মারা যান ।’ তিনি সুপারের কাছে দাবি জানিয়েছেন যে ভবিষ্যতে যাতে অন্য কারোর সঙ্গে একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি না ঘটে সেজন্য ওই অভিযুক্ত চিকিৎসক ও নার্সদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হোক ।
যদিও অভিযোগ প্রসঙ্গে হাসপাতাল সুপারের কোনো মতামত পাওয়া যায়নি । এদিকে এই ঘটনার পর রাজ্যের সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসা পরিষেবা নিয়ে ফের একবার প্রশ্ন তুলে দিল ।।

